Web bengali.cri.cn   
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প: ৫ বছরে রপ্তানি বেড়েছে ৩ গুণ
  2014-10-13 17:46:10  cri

তৈরি পোশাক শিল্পের পরেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি'র তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ -১৪ অর্থবছরে চামড়া খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে তা ১২ শতাংশ বেশি। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ খাতে আয় হয়েছিল ৫৬ কোটি ডলার। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ আয় ছিল মাত্র ২৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত ৫ বছরে চামড়া ও চামড়াজাত রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।

চামড়া বাণিজ্যে আন্তর্জাতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। এটি বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনার দিক নির্দেশ করে। চামড়ার পাশাপাশি এপেক্সের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান এখন আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা ও সুনাম কুড়াচ্ছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে চামড়া খাতে রপ্তানির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস- জুলাই ও আগস্টেই রপ্তানি আয় হয়েছে ২০ কোটি ২৩ লাখ ডলার। এ দুমাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রথম দুমাসে রপ্তানি কিছুটা কম হলেও অর্থবছরের বাদবাকি সময়ে তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে কুরবানীর পর বিপুল পরিমাণ পশুর চামড়া পাওয়া যাবে বিধায় স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে রপ্তানির পরিমাণ।

তবে, এ বছর কুরবানীর আগে সরকারের বেধে দেওয়া কম দামের কারণে চামড়া সংগ্রহ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সরকার লবনযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম বেধে দেয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। কিন্তু মৌসুমী ব্যবসায়ী ও ফড়িয়ারা নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে চামড়া কেনেন। তবে, ট্যানারি মালিকরা জানিয়ে দেন তারা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া নেবেন না। অন্যদিকে ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন ট্যানারি মালিকরা এজেন্টের মাধ্যমে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। এর ফলে কুরবানীর প্রথম কয়েক দিন রাজধানীর প্রধান কাঁচা চামড়া বাজার লালবাগের পোস্তায় চামড়ার সরবরাহ ছিল অর্ধেকেরও কম। একই অবস্থা ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়া বাজার যশোরের রাজারহাট, বরিশাল, নাটোর ও দিনাজপুরসহ দেশের অন্যান্য স্থানের চামড়া বাজারেও। দেশের বাজারে দাম কম হওয়ায় ভারতে চামড়া পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এবার চামড়ার দাম নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে তা নিয়ে বড় কোনো সঙ্কট হবে না। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীরাই চামড়ার ন্যায্য দাম পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। আর চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিজিবি'র কড়া নজরদারি রয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

চামড়ার দাম নিয়ে সৃষ্ট এ জটিলতা কেটে যাবে বলে মনে করেন, বাংলাদেশ লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী আবু তাহের। দেশের চামড়া বাজার ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। ব্যবসায়ীরা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করেই চামড়া কেনেন। তবে, এবার দেশের কোথাও কোথাও নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে অনেকে চামড়া কিনেছেন। তাই এর জন্য তাদের লোকসান গুণতে হতে পারে।

তবে, ট্যানারি মালিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা ও মূল্য বাড়লে তারা ফড়িয়া ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামেই চামড়া কিনবেন।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040