Web bengali.cri.cn   
ঢাকায় বিমসটেক সচিবালয় : অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত
  2014-09-15 22:09:26  cri

বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল, টেকনিক্যাল এন্ড ইকনোমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেক দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশের জোট। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এ আঞ্চলিক জোটটির মূল লক্ষ্য।

বিমসটেকের সদস্য দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। এ জোটটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংককে। তখন এর সদস্য ছিল বাংলাদেশে, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড। প্রথম দিকে বিসটেক নামে পরিচিত ছিল জোটটি। পরে মিয়ানমার যোগ দিলে এর নাম হয় বিমসটেক। ২০০৩ সালে যোগ দেয় নেপাল ও ভুটান।

২০০৪ সালে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে জোটের নেতারা সহযোগিতার ১৪টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি, প্রযুক্তি, পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন, মত্স্য, কৃষি, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, আন্তরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমন ও জলবায়ু পরিবর্তন এর মধ্যে অন্যতম।

সম্ভাবনাময় আঞ্চলিক এ জোটটির স্থায়ী সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ১৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার গুলশানে বিমসটেক সচিবালয় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিমসটেকের প্রথম মহাসচিব ও শ্রীলঙ্কার কূটনীতিক সুমিত নাকানদালা এবং সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকায় বিমসটেক সচিবালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন যাত্রার সূচনা হলো। একে ঐতিহাসিক ক্ষণ অভিহিত করে তিনি জোটের কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। জোটের লক্ষ্য অর্জনে তুলে ধরেন নিজের চিন্তা ভাবনার কথা।

দারিদ্র্য বিমোচনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ছয় দফা সুপারিশ রাখেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তার অন্য সুপারিশগুলো হচ্ছে, কৃষি সহযোগিতা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবেলা।

মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাঠামো চুক্তি ও বিনিয়োগ সংরক্ষণ সংক্রান্ত চুক্তি কার্যকরসহ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর প্রতি জোর তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। সদস্য দেশগুলোর সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায়ও একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিমসটেক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এজন্য সক্ষমতা অর্জনে নিজেদের মধ্যে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বিমসটেককে লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে কাজ করার পরামর্শ দেন। বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট বাণিজ্যের ৪ শতাংশ এবং মোট সম্পদের ১৫ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করা উচিত বিমসটেকের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী মনে করেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সেতুবন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বিমসটেক। ঢাকায় বিমসটেকের সচিবালয় স্থাপনের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বঙ্গোপসাগরের সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

বিমসটেকের প্রথম মহাসচিব ও শ্রীলঙ্কার কূটনীতিক সুমিত নাকানদালা বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো সমৃদ্ধ। এ অঞ্চলের ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত ও সমৃদ্ধ করাই হবে বিমসটেকের লক্ষ্য।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040