বন্ধুরা, এতোক্ষণ আমি চীন আন্তর্জাতিক বেতার ও শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরেছি। এবার আপনাদের এ ক্লাসরুমের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কথা শোনাবো।
ম্যাদাম লিউ হোং মেই হচ্ছেন ছাত্র মিঠুনের শিক্ষিকা। তিনি তাঁর ছাত্রদেরকে খুব পছন্দ করেন। তিনি বলেন, "এখানকার ছাত্রছাত্রীরা আগ্রহ নিয়ে চীনা ভাষা শিখছে। তারা খুব মেধাবী এবং শিক্ষকদের খুব সম্মান করে। প্রতিটি ক্লাসে আমি যথেষ্ট আবেগ দিয়ে তাদেরকে পড়াই। আমাদের ক্লাসের পরিবেশও খুব ভালো।"
মাদাম লিউ হোং মেই আর তাঁর ছাত্ররা
ছাত্র মিঠুন কোনো প্রশ্ন থাকলে ম্যাডাম লিউকে সরাসরি ফোন করে অথবা ছুটির দিনে অফিসে এসে ম্যাডাম লিউকে জিজ্ঞেস করে। ম্যাদাম লিউ বলেন, "শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের যে-কোনো সমস্যা সমাধানে আমরা শিক্ষকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি। তাদের শেখাতে গিয়ে আমি যথেষ্ট আনন্দ পাই। যখন আমি দেখি, শিক্ষার্থীরা একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে দিন দিন পরিপক্কতা অর্জন করছে, তখন খুব ভালো লাগে, পরম সুখের অনুভূতি হয়।"
কোংফু ক্লাস হচ্ছে এ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের বৈশিষ্ট্য। ম্যাডাম চৌ ইয়ু ওয়েন চীনের জাতীয় পর্যায়ের সামাজিক ক্রীড়া পরিচালক এবং প্রথম শ্রেণীর উসু রেফারি। বিদেশিদের উসু শেখানোর ক্ষেত্রে তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা আছে। ২০১৩ সালে তিনি ক্লাসরুমের উসু দল গঠন করেন এবং এ দল নিয়ে অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উসু পরিবেশন করে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন।
মাডাম চৌ বলেন, "আমি চীনের উসুর একজন দূত হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। কনফুসিয়াস ক্লাসরুমে আমি দেখেছি, এখানকার শিক্ষার্থীরা মন দিয়ে উসু শিখছে। তারা চীনের উসু খুব পছন্দ করে। আমি আশা করি, চীনের উসু বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমি মনে করি, উসু কেবল চীনা জনগণের নয়, এর সুফল বিশ্বের সকল জাতির জনগণের পাওয়া উচিত।"
তবে বিদেশিদের মনে চীনের উসু সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা আছে। মাদাম চৌ একটি উদাহরণ দিলেন। তিনি বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর শুরুর দিকে অনেক শিক্ষার্থী তাঁকে জিজ্ঞেস করতেন, "মাদাম, আপনি আমাকে ওড়া শেখাবেন? আমি ব্রুস লির মতো পানির ওপর দিয়ে হাঁটতে বা দেওয়ালে দৌঁড়াতে চাই।"
চীনা কোংফু মাস্টার চৌ ইয়ু ওয়েন
এ প্রসঙ্গে মাদাম চৌ বলেন, "চীনের উসু সম্পর্কে তারা ধারণা পেয়েছে মূলত চলচ্চিত্র থেকে। তারা আগে প্রায়ই আমাকে জিজ্ঞেস করতো, 'মাদাম চৌ, আপনি উড়তে পারেন?' এখন তারা উসুর সঠিক ধারণা পেয়েছে। আর তারা ওড়ার কথা ভাবে না, আমার সঙ্গে মনোযোগ ও ধৈর্য নিয়ে উসু শেখে। আমি থাইজি ছুয়ান এবং ছাং ছুয়ানসহ নানা মুষ্টিযুদ্ধ শেখানোর সময় তাদেরকে কিছু আত্মরক্ষার কৌশল শেখাই। সেটা শেখার ব্যাপারে তাদের ব্যাপক আগ্রহ।"
বন্ধুরা, মাদাম চৌর কথা শুনে আপনার মনেও কি চীনের উসু শেখার আগ্রহ জন্মেছে? তাহলে, ঢাকায় কনফুসিয়ারস ক্লাশরুমে এখনই যোগাযোগ করতে পারেন।
উসুর মতো, যে কোনো বিদেশি ভাষা শেখাও মজার। গত আগস্ট মাসে ঢাকা সফরের সময় সিআরআইয়ের প্রতিনিধিদলের প্রধান চাং ইউয়ে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের চীনা ভাষা শেখার প্রক্রিয়া দেখেছিলেন। তখন আমিও উপস্থিত ছিলাম।
ক্লাসরুমে চীনা ভাষা শিখে কী লাভ? এ প্রশ্নের উত্তর আমিও জানতে চাই। আমরা ক্লাসরুমের শিক্ষার্থীদের মুখ থেকেই না-হয় শুনি এ প্রশ্নের উত্তর।
বন্ধুরা, যদি আপনারা বাংলাদেশে চীন আন্তর্জাতিক বেতার ও শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের কনফুসিয়াস ক্লাসরুম সম্পর্কে আরো জানতে চান, তাহলে সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। ঠিকানা হচ্ছে: উত্তরা মডেল টাউন, ১১ নম্বর সেক্টর, ১৫ নম্বর রোড, ৮২ নম্বর বাসা, ঢাকা। অফিসের ফোন নম্বর হচ্ছে ০০৮৮-০২৮৯৫০৪৭১।
(ইয়ু/আলিম)
| ||||