এদিকে, অনেক চীনা ব্যবসায়ী ভারতে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। লি চিয়ান তাদেরএকজন। ২০১২ সালে তিনি নয়াদিল্লীতে 'ড্রাগন ও হাতি' নামের এক কনসাল্টেন্সি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। এ ফার্ম মূলত ভারতমুখী চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরামর্শ ও তথ্যসেবা সরবরাহ করে। লি চিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দী ভাষা ও ইংরেজি ভাষা শিখেছেন। লি চিয়ান বলেন, "এখন আমাদের কনসাল্টেন্সি ব্যবসা ভালো চলছে। আমাদের দলের সদস্যরা প্রায় সবাই ভারতের ওপর গবেষণা করেন এবং ভারতকে ভালোভাবে বুঝেন। আমরা চীনা কোম্পানিকে ভারতের বাজারে প্রবেশের গোটা প্রক্রিয়ায় সাহায্য করি এবং আমরা আমাদের সেবার পেশাগত ও গুণগত মান সম্পর্কে সচেতন। এখন আমাদের দলে দশ জন আছে। এর মধ্যে ছয় জন চীনা, চার জন ভারতীয়।"
চীনা ব্যবসায়ী লি চিয়ান ভারতে আছেন
আজকাল অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক চীনা কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগ করতে চায়। 'ড্রাগন ও হাতি' কনসাল্টেন্সি ফার্ম চীনা কোম্পানিগুলোকে শুল্ক, আইন, গণসংযোগ, ভিসা ও মানবসম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে হুয়াওয়েই, জেডটিই, সোকাংসহ প্রায় ৫০০টি চীনা কোম্পানি আছে। এসব কোম্পানি বিদ্যুত্, টেলিযোগাযোগ, ভারী যন্ত্রপাতি, চিকিত্সা সরঞ্জাম ও কাঁচামালসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসার সাথে জড়িত। বিগত দু'বছরে চীনা কোম্পানিগুলো ভারতে বিদ্যুত্চালিত গাড়িসহ বিভিন্ন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। চীন ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বর্তমানে অনেক উর্বর। লি চিয়ান জানালেন, তিনি ভবিষ্যতে চীনা কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি ভারতীয় কোম্পানিগুলোকেও তার ফার্মের ক্লায়েন্ট হিসেবে দেখতে চান। তার বিশ্বাস, ১২০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের বাজারের সুপ্ত শক্তি অসীম। এ বাজার তাঁকে বিশাল বাণিজ্যিক সুযোগ দেবে এবং তার সুন্দর ভবিষ্যত রচনায় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।
চীনে ভারতীয় ব্যবসায়ী জ্যাক এবং ভারতে চীনা ব্যবসায়ী লি চিয়ান নিজ নিজ স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের মতো অনেকেই আছেন যারা একে অন্যের দেশকে বেছে নিয়েছেন স্বপ্ন পূরণের স্থান হিসেবে। চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদানপ্রদান জোরদার হওয়ার সাথে সাথে আরো বহু চীনা ও ভারতীয় ব্যবসায়ীর এ ধরনের স্বপ্ন পূরণ হবে—এমন আশা করা যায়। (ইয়ু/আলিম)
| ||||