গত বছরের ২২ জুন ক্যাম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে অনুষ্ঠিত ৩৭তম বিশ্ব ঐতিহ্য সম্মেলনে চীনের সিন চিয়াং থিয়ান সান পাহাড় ও ইউয়ুন নান হানি জাতির সিড়ির ধাপের মতো থাককাটা মাঠ ইউনেস্কো বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তবে অনেকের ধারণা যে, বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হওয়ার পর এ দুটি জায়গা নতুন সমস্যার সম্মুখীন হবে। যেমন সরকার এ দুটি জায়গায় অধিক উন্নয়ন করবে বা শুধু অর্থনীতির ওপর গুরুতর দিয়ে অযৌক্তিকভাবে টিকিটের মূল্য বাড়াবে। কুই চৌ প্রদেশের থং রেন শহরে অবস্থিত ফান চিং পাহাড় এবং উ হান শহরের ইয়াংসি নদীর সেতুসহ চীনের নানা দর্শনীয় স্থান বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আবেদন করে। ইউনেস্কোর বেসরকারি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার চীনা বিভাগের প্রধান চেন পিং বলেন, বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আবেদনের জন্য চীন প্রায় ৩০ কোটি ইউয়ান ব্যয় করে। আসলে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আবেদনে ইউরোপীয় ও আমেরিকান দেশগুলোর আর আগ্রহ নেই। এমকি ২০০৮ সালে ব্রিটেন ঘোষণা করে যে, দেশটি বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতির জন্য আর আবেদন করবে না। কারণে প্রতি বছর এক্ষেত্রে টিকিটের আয়ের চেয়ে আবেদনের খরচ অনেক বেশি।
রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের প্রধান সান চি সিয়াং গত জুন মাসে 'আগামী ৬০০ বছর অমলিন থাকবে একটি মহান ও সুন্দর নিষিদ্ধ নগরী' শীর্ষক এক বক্তৃতা দেন। মিং রাজবংশের শাসনামলে নির্মিত নিষিদ্ধ নগরীর ৬০০তম জন্মদিন হবে ২০২০ সালে। সান চি সিয়াং মনে করেন এই ৬০০ বছরে তিনটি বৈশিষ্ট রয়েছে নিষিদ্ধ নগরীর। প্রথমত, নিষিদ্ধ নগরীর সব ভবন অক্ষত রয়েছে, দ্বিতীয়ত রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের ১৮ লাখেরও বেশি পুরাকীর্তি যথোপযুক্তভাবে সংরক্ষিত হয়েছে এবং শেষত নিষিদ্ধ নগরীর দর্শনার্থীর সংখ্যা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ বজায় রয়েছে। ২০১৫ সালে নিষিদ্ধ নগরীর পশ্চিম অঞ্চল প্রথম বারের মতো জনগণের জন্য উন্মুক্ত হবে। সান চি সিয়াং বলেন:
"যে অঞ্চল এখন জনগণের জন্য উন্মুক্ত, তার আয়তন সারা রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের মাত্রা ৫২ শতাংশ। জাদুঘরের প্রতিষ্ঠার ৮২ বছরে কখনও জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয়নি পশ্চিম অঞ্চল। ২০১৫ সালে রাজপ্রাসাদ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ৯০তম বার্ষিকীতে আমরা পশ্চিম অঞ্চল অর্থাত্ প্রাচীনকালে রাজমাতা ও স্ত্রীদের বাড়িঘর এবং রাজকীয় বাগান জনগণের জন্য খুলব। ওই বাড়িঘরের মেরামত কাজ এখন শেষ হয়েছে এবং আমরা প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুত করছি।"
বিদেশের পাকা জাদুঘরগুলো থেকে রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের ভিন্নতা রয়েছে। এর অবকাঠামো নির্মাণের পর্যায়ে রয়েছে। তবে আমরা যদি প্রচেষ্টা চালাই, তাহলে চীন ও নিষিদ্ধ নগরের দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
চীন থেকে হারানো ১২টি ব্রোঞ্জ রাশি-প্রতীকের মধ্যে ইঁদুর ও খরগোশ মূর্তি ইউয়ান মিং ইউয়ান উদ্যানপুরীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় ২০১২ সালে ২৬ এপ্রিলে। ফ্রান্সের Pino পরিবার পেইচিংয়ে এ তথ্য জানান। এ খবর থেকে আমরা দেখি চীনা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি Pino পরিবারের সমর্থন এবং আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়ের একটি নতুন মূল্যবোধ দেখতে পাই। অনুদানের মাধ্যমে বিদেশে চীনের পুরাকীর্তিগুলো ফিরিয়ে দেওয়া একটি প্রশংসনীয় কাজ।
মোট ১২টি মূর্তির মধ্যে এখন পর্যন্ত চীনে ফিরে এসেছে ৭টি এবং অন্য ৫টির এখনও হদিশ পাওয়া যায়নি।
২০১৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে চীনের জাতীয় পরিষদ প্রকাশিত 'চীন-শাংহাই অবাধ বাণিজ্য এলাকা পরিকল্পনা'তে বলা হয় যে, বিদেশি বণিকরা শাংহাই অবাধ বাণিজ্য এলাকায় স্বায়ত্তশাসিত পারফরমেন্স এজেন্সি ও বিনোদনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। শাংহাইয়ের অবাধ বাণিজ্য এলাকায় ধারাবাহিক মুক্তদ্বার-নীতি সাংস্কৃতিক শিল্পের উন্নয়নে অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে। সাংস্কৃতিক শিল্পের বিশ্লেষকরা মনে করেন, মুক্ত নীতিগুলো স্বল্পমেয়াদে শাংহাই ও অবাধ বাণিজ্য এলাকার সাংস্কৃতিক শিল্পের উন্নয়নে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং দীর্ঘমেয়াদে অবাধ বাণিজ্য এলাকার অভিজ্ঞতা এবং প্রভাব সারা চীনের বিনোদন শিল্পকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করবে।