Web bengali.cri.cn   
তুংকুয়ানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ব্রাজিল বিশ্বকাপে প্রবেশ
  2013-12-23 19:05:03  cri

ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা ২০১৪ সালের ১৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সাথে সাথে এ প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত নানা ব্যাজ, ম্যাস্কট ও বিশ্বকাপ-সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত পণ্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চীনের কুয়াংতুং প্রদেশের তুংকুয়ানের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান – ওয়েইকুয়াং গোষ্ঠি – ফিফার ২০১৪ সালের অনুমতিপ্রাপ্ত বিশ্বকাপ পণ্যের সরবরাহকারী ও উত্পাদনকারী মনোনীত হয়েছে।

সম্প্রতি সিআরআইয়ের সংবাদদাতা তুংকুয়ানের এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যান এবং এ প্রতিষ্ঠানের 'চীনের তৈরি' থেকে 'চীনের সৃষ্টি' এবং 'ব্র্যান্ডের অনুমোদনপ্রাপ্তি' পর্যন্ত উন্নয়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন। এখন শুনুন 'তুংকুয়ানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ব্রাজিল বিশ্বকাপে প্রবেশ' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন।

ওয়েইকুয়াং কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক লি চে ইয়ুর বয়স মাত্র ৩০ বছরের মতো। নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি গর্ব বোধ করেন। তিনি বলেন, "আমাদের কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯১ সালে। আমরা অনেক অঞ্চল বিবেচনা করার পর অবশেষে তুংকুয়ানকে বাছাই করি। আমরা হার্ডওয়্যার ও উপহারসামগ্রী দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। দশ বারো বছরের উন্নয়নের পর এখন একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে আমাদের কোম্পানি।"

লি চে ইয়ু সংবাদদাতাকে বলেন, ১৯৯৪ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপের জন্য ম্যাস্কট তৈরি করেন। প্রথম দিকে তারা ছিলেন কেবল বিশ্বকাপের জন্য প্রকৃত সরঞ্জাম উত্পাদনকারী (ও.ই.এম)। এমন উত্পাদন পদ্ধতি ২০০২ সালের দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

লি চে ইয়ু বলেন, "দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপের সময় আমাদের ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়। আমরা ফিফার সঙ্গে সহযোগিতা করি। আমরা নকশা বিভাগ স্থাপন করেছি। অতীতের তুলনায় অনেক নতুন নতুন ধারণা বের হয়েছে। ২০০২ সালে আমাদের উত্পাদিত পণ্য ফুটবল অনুরাগীদের মধ্যে প্রবলভাবে সমাদৃত হয়। অর্থাত্ ২০০২ সালে আমরা প্রথম বড় পদক্ষেপে এগিয়ে যাই।"

সেকারণে বলা যায়, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপ ওয়েইকুয়াং কোম্পানিকে 'চীনের তৈরি' থেকে 'চীনের সৃষ্টি'তে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। এ কোম্পানির ব্র্যান্ডের অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে ব্রাজিল বিশ্বকাপ কোম্পানির উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়ক হবে।

লি চে ইয়ু সংবাদদাতাকে বলেন, আগের পাঁচ বার বিশ্বকাপের কাজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবার তাঁর কোম্পানি ব্রাজিল বিশ্বকাপের জন্য গোল্ডকাপ, লোগো আর ম্যাস্কট 'ফুলেকো'র নকশা ও উত্পাদন করার অনুমতি পেয়েছে।

লি চে ইয়ু বলেন, "অতীতে পাঁচ বার বিশ্বকাপের জন্য পণ্য উত্পাদনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমাদের ওয়েইকুয়াং গোষ্ঠী ফিফার একটি ভালো ধারণা অর্জন করেছে। ২০১৪ সালের জন্য ওয়েইকুয়াং গোষ্ঠীকে উত্পাদন অনুমোদনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এবারের বিশ্বকাপের জন্য আমরা হার্ডওয়্যারজাত পণ্য, প্লাস্টিকজাত পণ্য, চীনামাটিজাত পণ্য, মনিহারি পণ্য এবং কিছু থ্রি-সি পণ্য উত্পাদন করবো।"

উত্পাদন অনুমোদনের অধিকার পাওয়ার পাশাপাশি ওয়েইকুয়াং কোম্পানি জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬টি দেশে খুচরা বিক্রি খাতের অনুমোদনও পেয়েছে। এটা পাওয়া সহজ নয়।

বিশ্বকাপে অলিম্পিক গেমসের মতো অত বেশি দল নেই। বিশ্বকাপে মাত্র ৩২টি দল আছে। ভালোভাবে ব্রাজিলের বাজার সম্প্রসারণের জন্য লি চে ইয়ু বহু বার ব্রাজিলে যান। তিনি মনে করেন, ফুটবলের প্রতি ব্রাজিলের মানুষের যে বিশেষ অনুরাগ আছে, তা অতুলনীয়। তিনি বলেন, "ব্রাজিল বিশ্বকাপের দরুণ সে দেশের অনেক দিক উন্নত হচ্ছে। যেমন পরিবেশ, প্রচারের পদ্ধতি ইত্যাদি। বুঝা যায়, তারা এ প্রতিযোগিতার ওপর খুব গুরুত্ব দেয়। এশিয়ায় ২০০২ সালের দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল। এবারের ব্রাজিল বিশ্বকাপের বিশ্বব্যাপী প্রভাব অদ্বিতীয় হবে।"

অতীতে ব্রাজিল বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ফলে এ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজিত হলে নিঃসন্দেহে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। এটা 'চীনের তৈরি পণ্য' প্রদর্শনের মঞ্চ সরবরাহ হবে।

লি চে ইয়ু তাঁর নিজের স্বপ্ন কথা জানিয়েছেন। সেটি হচ্ছে সারা দুনিয়াকে জানানো যে, ফিফার পণ্য চীনে তৈরি। চীনের ব্র্যান্ডের পণ্য বিশ্বের সব কোণে পৌঁছেছে। (ইয়ু/এসআর)

মন্তব্য
লিঙ্ক