চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং
চীনের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাঁর প্রথম বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন রাশিয়া, তাঞ্জানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কঙ্গোয়। তাঁর এ সফর সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সফরের প্রাক্কালে চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ভারত -- ব্রিক গ্রুপের এই ৫টি দেশের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক যৌথ সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, চীন আশা করে, বিশ্বের জনগণ একসাথে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুফল ভোগ করবে, বিভিন্ন দেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি সুষম বিশ্ব প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন: "প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা, আপনাদেরকে এখানে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। তিন দিন পর আমি চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার প্রথম সফর শুরু করবো। আজ এ সাক্ষাত্কারের মাধ্যমে আপনাদেরকে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আমি আশা করি, এবার সফরের মাধ্যমে চীন ও অন্য দেশের জনগণের বন্ধুত্ব গভীর হবে, পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা জোরদার হবে এবং ব্রিক গ্রুপের সহযোগিতা ব্যবস্থা নতুন পর্যায় উন্নীত হবে।"
দেড় ঘন্টার এ সাক্ষাত্কারে ১০ জন সাংবাদিক চীনের নতুন সর্বোচ্চ নেতাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। যেমন রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক, ব্রিক গ্রুপের ডারবান বৈঠক, চীনের সংস্কার, ১৩০ কোটি লোকের দেশের নেতা হিসেবে তাঁর উপলব্ধি এবং কতক্ষণ পরিবারের সঙ্গে তাঁর কতক্ষণ সময় কাটে ইত্যাদি।
দেশগুলোর মধ্যে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রথম সফর করবেন রাশিয়া।
চীন ও রাশিয়া পরস্পরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান কৌশলগত অংশীদার। দু'দেশের সম্পর্ক নিজ দেশের কূটনৈতিক অবস্থা ও নীতিগুলোর ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। দু'দেশের উচিত কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক আস্থা বাড়ানো, বিশ্বের প্রধান প্রধান ইস্যুতে পরস্পরকে সমর্থন করা, কার্যকর সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে পারস্পরিক সমন্বয় ও সহযোগিতা করা।"
দ্রুত উন্নয়নশীল চীন-আফ্রিকা সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, "আফ্রিকার সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয় চীন। দু'পক্ষের সহযোগিতা সার্বিক। চীন আফ্রিকার সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণকর ও কার্যকর সহযোগিতা গড়ে তুলতে ইচ্ছুক, যাতে দু'পক্ষের জনগণ কল্যাণ অর্জন করতে পারে।"
ব্রিক গ্রুপের নেতাদের পঞ্চম সম্মেলন চলতি মাসের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে অনুষ্ঠিত হবে। সি চিং পিন বলেন, চীন আশা করে, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্য, সহযোগিতা ও উভয়ের জন্য কল্যাণের নীতি প্রকাশিত হবে।
বিশ্বের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে সি বলেন: "চীন অনেক বার আন্তর্জতিক সম্প্রদায়কে কঠোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, দেশটি অবিচলিতভাবে শান্তিপূর্ণ ও উন্নয়নের পথ চলবে, কোনো দিন আধিপত্যবাদ প্রয়াসী হবে না, কোনো দিন আত্মসম্প্রসারণবাদী হবে না। চীনা জনগণ আশা করে, চীন আশা করে, বিশ্বের জনগণ একসাথে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুফল ভোগ করবে, বিভিন্ন দেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হবে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি সুষম বিশ্ব প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে যাবে।"
| ||||