Web bengali.cri.cn   
চীন ভ্রমণের ডায়েরী-১০ ডিসেম্বর ২০১২; চীন ভ্রমণের ২য় দিন বেইজিং থেকে হাইনান দ্বীপ
  2012-12-28 17:21:51  cri

হাইনান দ্বীপের ঐতিয্যবাহী পোশাক গায়ে দিদারুল ইকবাল।

বিকেল ৬:১৭ মিনিটে আমি সুইমিং পোলে সাতার কাটি এবং অনেক আনন্দ করি। সুইমিং পোলটি প্রাকৃতিক পরিবেশে অনেক বড় এলাকা জুড়ে তৈরী করা হয়েছে যা দেখতে অনেক সুন্দর।

সন্ধ্যে ৭:০০টায় আমরা হোটেলের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। চীনের রীতিনীতি অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬-৭টার মধ্যে রাতের খাবার খেতে হয়। রেস্তোরায় আমরা ১৬ ধরনের চীনা খাবার খেয়েছি। প্রতিটি খাবার অনেক সুস্বাদু।

এরপর আমরা হোটেলের পাশে রাস্তায় বিভিন্ন দোকান, সমূদ্র পাড় ঘুরে দেখি। রাতের অন্ধকারে রংধনুর মত রঙিন আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। বাংলাদেশের মত এখানে ফুটপাতে প্রচুর দোকান রয়েছে। কিন্তু এখানে অনেক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং আকর্শনীয়। রাস্তায় এবং সমূদ্রের পাড়ে আমি ছোট ছোট বিভিন্ন ফলের দোকান, জুয়েলারী দোকান, রেস্টুরেন্ট, মাছের দোকান, সবজির দোকান এবং জামা-কাপড়েরর দোকান দেখেছি।

হাইনানের একটি ঐতিয্যবাহী পোশাক হচ্ছে নারকেলের দ্বীপ আঁকা রঙীন শার্ট-পেন্ট। যেটি গায়ে পড়লে হাইনান দ্বীপের চিত্র ফুটে উঠে। এখানে আসা পর্যটকরা এটি পড়ে বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যায়। আমার বন্ধু মুক্তা আপু এই ধরনের একটি পোশাক আমাকে উপহার দিয়েছেন। এর জন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

ফলের দোকান গুলিতে প্রচুর পরিমান নারকেলের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ফল রয়েছে। কিছু কিছু ফল আমাদের দেশের সাথে মিল থাকলেও অনেক ধরনের ফল আছে যা আমাদের দেশে নেই। প্রতিটি ফল অত্যন্ত রসালো এবং সুস্বাদু। এখানে ঐতিয্যবাহী ফল নারকেল। বিভিন্ন খাবারের সাথে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে যা বলে শেষ করা যাবেনা। এখানে বেশ কয়েকটি প্রজাতির বড়, মাঝারি, ছোট আমও রয়েছে যা আমাদেরে দেশে নেই। এখানে আরেকটি আকর্শন হচ্ছে সামুদ্রিক মাছের দোকান। ছোট ছোট সারিবদ্ধ অনেক মাছের দোকান রয়েছে যেগুলিতে জ্যন্ত/তরতাজা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক রয়েছে প্রচুর। আপনি যদি কোন মাছ পছন্দ করেন এবং আপনার পছন্দ অনুযায়ী কিভাবে খেতে চান তাহলে সেটি দোকানে বসে খেতে পারবেন। এখানে মাছের দোকান এবং রেস্টুরেন্ট পাশাপাশি। আরেকটি মজার বিষয় হলো আপনি খাবার খেতে খেতে যদি গান শুনতে চান তাহলে সেটিও শুনতে পারবেন। এখানের কিছু তরুণ তরুণী রয়েছে যারা আপনাকে বিভিন্ন গান শুনিয়ে আনন্দ দিবে। তবে এর জন্য কিছু অর্থ খরচ করতে হবে।

রাতে আমরা সমূদ্রের উত্তাল ডেউ, মুক্ত বাতাস এবং নৈসর্গিক সুন্দর্য্য উপভোগ করি। এর ভালো লাগা এবং মন ছুয়ে যাওয়া অনুভূতি কোন ভাবেই লেখায় প্রকাশ করা যাবেনা। আমি প্রথমে জানতাম হাইনান চীনের একটি দ্বীপ। কিন্তু আসলে তা নয়, হাইনান প্রদেশেরও রয়েছে বেশ কয়েকটি দ্বীপ! আমরা যেখানে রয়েছি সেখান থেকে সমূদ্রের মাঝে ছোট ছোট আরো কয়েকটি দ্বীপ দেখা যায়। যেগুলি রাতে রং বেরং এর আলোয় উজ্জল হয়ে উঠে। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকরা এই মনোরম দৃশ্য মন ভরে উপভোগ করেন এবং তারা বিভিন্ন রং এর আতশবাজী ফুটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।

সবশেষ আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই) কে। কারণ সিআরআই এর আমন্ত্রণে আমি এত সুন্দর একটি স্থান পরিদর্শন করতে পেরেছি। এখানের সুন্দর স্মৃতি আমার চীরজীবন মনে থাকবে।

শ্রোতাবন্ধুরা আপনাদের বলবো, যদি আপনি কখনো চীনে ভ্রমণে আসেন তাহলে অবশ্যয় হাইনান দ্বীপ দেখতে আসবে। সত্যি আপনি আনন্দ পাবেন এবং আপনার মন ভরে যাবে।

শিয়ে শিয়ে,

দিদারুল ইকবাল

"হাইনান আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপ"

জ্ঞানযাচাই প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড পুরস্কার বিজয়ী

২০১২-১২-১০


1 2 3 4
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক