|
শিক্ষাগত যোগ্যতা : আটাইশ আগস্ট মাসে ১৯৫৯ সালে পরিক্ষা পাস করে বেইজিং বিদেশী ভাষার বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন , ওখানে এক বছর রাশিয়া ভাষা পড়েছিলেন ।তার পর পয়লা সেপ্টেম্বর মাসে ১৯৬০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়ে লেনিনগ্রাদ ( আধুনিক সাংক্ট-পিটেররবুর্গ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যবিভাগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য শিক্ষা করতে শুরু করেছিলেন , ডিসেম্বর মাসের শেষে ১৯৬৫ সালে সব পরিক্ষা ভালোভাবে পাস করে প্রাচ্যতত্ববিদ-বাংলাবিদ-নাম লাভ করে চীনদেশে ফেরে এসেছিলেন । চীনা কাম্যুনিস্ট পার্টির উচ্চতম ইস্কুলে গিয়ে সাহিত্য ও ইতিহাস বিভাগে রাশিয়া ভাষা পড়াছিলেন এবং রবীন্দ্র-গল্পগুচ্ছ ও উপন্যাস গবেষণা ও অনুবাদ করেছিলেন । ১৯৯২ সালে অধ্যাপক নিযুক্ত হয়েছেন , ১৯৯৩ সাল থেকে বিশেষ অবদানের জন্য চীনদেশের মন্ত্রীসভার বৃত্তিদান লাভ করতে শুরু করেছেন ।
একত্রিশ ডিসেম্বর মাসে ১৯৯৭ সালে পার্টির ইস্কুল থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন , তার পর রবীন্দ্র-রচনার গবেষণা ও অনুবাদের উপরে তাঁর সব প্রাণশক্তি দেওয়া শুরু করেছেন । ।অক্টোম্বর মাসে ২০০০ সাল থেকে ২০০৭ সালের শেষ পর্যন্ত শেনঝেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিমন্ত্রণে ওখানে আট বছর বিদেশী ছাত্রছাত্রীদেরকে চীনা ভাষা পড়িয়েছিলেন এবং রবীন্দ্র-রচনাবলী গবেষণা ও অনুবাদ করেছিলেন । জানুয়ারি মাসে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে শিক্ষাগত ভ্রমণ করেছিলেন, ফেব্রুয়ারি – মে মাসে ২০০৮ সালে ভারতবর্ষে শিক্ষাগত ভ্রমণ করেছিলেন । জুলাই মাস থেকে বেইজিং বিদেশী - শিক্ষা বিশ্ববিদালয়ের দক্ষিণ-আশিয়া গবেষণা কেন্দ্রে বাংলা সাহিত্য গবেষণা করছেন ।
কয়েক দশ বছরের মধ্যে সব সময় বাংলা সাহিত্য ,বিশেষভাবে রবীন্দ্রনাথ-গবেষণা ও অনুবাদ করেছেন এবং করছেন। অনুবাদ ও গবেষণার মধ্যে গুরুদেবের প্রতি তাঁর ভালবাসা আরো গভীরতর হচ্ছে। তিনি অনুভব করেছেন যে যেন পূর্বজন্মে তিনি বাঙ্গালী ছিলেন ,তাই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি তাঁর এমন গভীর ভালবাসা , বাংলাভূমির প্রতি এমন গভীর ভালবাসা।
২০০৫ সালে রবীন্দ্রনাথের সমস্ত উপন্যাস ও গল্পগুচ্চ (মোট সাট খণ্ড) প্রকাশিত হয়েছে হুয়া- ওন্বেন প্রকাশনালয় হতে ; ২০০৭ সালে বেইজিং বিদেশী ভাষা শিক্ষাদান ও গবেষণা প্রকাশনালয় রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলি (মোট ছয়টা খণ্ড) প্রকাশিত করেছে । সুবিখ্যাত পণ্ডিত অধ্যাপক জিশিয়েনলিন এই বইগুলির নাম লিখেছেন। তিনি এই দুই ধরনের রচনার অনুবাদ ও সম্পাদনার দায়ীত্বে ছিলেন । এই বছরে তাঁর লেখা রবীন্দ্র-জীবনী বহু ছবি-সহ প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া তিনি রবীন্দ্র-রচনা- সন্বন্ধে বহু প্রবন্ধ লিখেছেন এবং নানা পত্রিকায় প্রকাশিত করেছেন। বাংলা ঔপন্যাসিক তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস 'স্বর্ণলতা' চীনা ভাষায় তাঁর দ্বারা অনুবাদিত হয়েছে এবং প্রকাশিত হয়েছে শান্হাই অনুবাদ প্রকাশনালয় থেকে। "মহাভারত "-র সংক্ষিপ্ত কথা ও শ্রীকৃষ্ণ-এর কাহিনী রাশিয়া ভাষা থেকে চীনা ভাষায় তাঁর দ্বারা অনুবাদিত হয়েছে এবং প্রকাশিত হয়েছে হুনান্ জনগণের প্রকাশনালয় থেকে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস ইন্দিরা , কৃষ্ণকান্তের উইল, রাজসিং , চন্দ্রশেখর চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন ,কিন্তু এখন প্রকাশিত হয় নি।
অধ্যাপক জিশিয়েনলিন-এর নেতৃত্বে তিনি "প্রাচ্যসাহিত্যের ইতিহাস" পাঠ্যপুস্তক লেখার কাজে যোগদান করেছিলেন ,তার মধ্যে বাংলা সাহিত্যের অংশ লেখেছেন। তিনি " আধুনিক ভারতীয় সাহিত্য"-র বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস লিখেছেন।
এখন তিনি সম্পূর্ণ রবীন্দ্র-রচনাবলীর অনুবাদ করতে শুরু করছেন ,সৌভাগ্যবশত এই কাজে তিনি প্রধান অনুবাদক ও প্রধান সম্পাদক হিসাবে যুক্ত আছেন। পরিকল্পনা অনুসারে আগামি 2015 সালে রবীন্দ্র-রচনাবলী চীনা ভাষায় প্রকাশিত হবে গণপ্রকাশনালয় থেকে । জানুয়ারী মাসে ২০১১ সালে বিরাট আকারে তাঁর লেখা রবীন্দ্র –জীবনী <ভারতীয় কবি---রবীন্দ্রনাথ >প্রকাশিত হয়েছে।
৮ তারিখ মে মাসে ২০১০ সালে রবীন্দ্র-ভারতীয় বিস্ববিদ্যালয় doctor of literature দিয়েছে এবং ৯ মে ২০১০ সালে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের বাংলা আকাডেমি তাঁহাকে রবীন্দ্র-পুরস্কার দিয়েছে।
দং ইউ চেন-র অনুবাদ :
১. রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলি : ছবি ও গান, কোড়ি ও কমল, মানসী, চৈতালি, মহুয়া ইত্যাদি;
২. নাটক: গোড়ায় গলদ , গুরু ,প্রায়শ্চিত , শরদোৎসব , প্রকৃতির প্রতিশোধ, গৃহপ্রবেশ, হাস্যকৌতুক, ইত্যাদি ;
৩. গল্পগুচ্ছ :ভিখারিনী,ঘাটের কথা,ব্যবধান, গিন্নি, রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা, সম্পত্তি-সমর্পণ, একরাত্রি, জিবিত ও মৃত, সুভা, মহামায়া, খাতা, মেঘ ও রৌদ্র, দিদি, অতিথি, শুভদৃষ্টি , যঞেশ্বরের যঞ , প্রতিবেশিনী , পণরক্ষা , হৈমন্তী , ভাইফোঁটা , পয়লা নম্বর , চোরাই ধন ইত্যাদি ;
৪. উপন্যাস : বউ-ঠাকুরানীর হাট , রাজর্ষি , নৌকাডুবি , ঘরে-বাইরে , ভগ্ননীড়
৫. প্রবন্ধগুলি: রাশিয়ার চিঠি ,ইত্যাদি
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |