|
প্রথম চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরবিষয়ক তথ্যমাধ্যম ফোরাম গত ১৭ নভেম্বর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদ, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর পরিষদের সদস্য-চেয়ারম্যান মুশাহিদ হোসাইন, পাকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েই তোং, চীনের বিভিন্ন তথ্যমাধ্যমের ১১ জন প্রতিনিধি এবং পাকিস্তানে চীনা ও বিদেশি সংবাদদাতারা এ ফোরামে উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েই তোং
পাকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েই তোং প্রথমে এ ফোরামে উদ্বোধনী ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং 'এক অঞ্চল, এক পথ' কৌশলগত ধারণা উত্থাপনের পর 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর' এক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে তথ্যমাধ্যমের ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তথ্যমাধ্যম ফোরামকে তিনি পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানো এবং দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের মধ্যে গভীর মতবিনিময় করার এক সুবিধাজনক প্লাটফর্ম হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, "তথ্যমাধ্যম ফোরামের মাধ্যমে আমরা একসঙ্গে চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রী ও সহযোগিতা, বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্প নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করতে পারি। আমি বিশ্বাস করি, এ ফোরাম দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের সহযোগিতা জোরদার করার জন্য সহায়ক হবে। আমরা এমন এক যুগে আছি, যখন নিরন্তরভাবে ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে। চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরবিষয়ক তথ্যমাধ্যম ফোরাম দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের মধ্যে গভীর বিনিময়ের এক অনুকূল প্লাটফর্ম। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, তথ্যমাধ্যমের বন্ধুরা ভবিষ্যতে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্পের প্রচার ও সমর্থন করবেন। আপনাদের অবদান আমাদের অভিন্ন প্রয়াসের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। দু'দেশের জনগণ এ প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন।"
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদ
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদ তার ভাষণে বলেন, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর কেবল একটি সড়ক নয়, বা এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না। জনসাধারণকে এ ধারণা বুঝাতে চাইলে প্রথমে দু'দেশের তথ্যমাধ্যমকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। তথ্যমাধ্যম ফোরামের আয়োজন দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের তথ্য বিনিময়ের জন্য সহায়ক হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, "চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তথ্য ও সংস্কৃতি বিনিময়ও এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। জনমত গড়ে তুলতে তথ্যমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দু'দেশেরই উচিত তথ্যমাধ্যমকে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরসম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি প্রকল্পস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের বাস্তব অবস্থা ও অগ্রগতি জানার সুযোগ দেওয়া। এতে তথ্যমাধ্যমগুলো আরও বাস্তবভাবে তথ্য প্রচার করতে পারবে। পাকিস্তান সরকার এ ফোরাম প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানায়। বিভিন্ন সংবাদদাতা ও চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অগ্রগতির তথ্য জানতে আগ্রহী জনসাধারণের জন্য এ ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি শুনেছি, এ ফোরাম পাকিস্তানের অন্য একাধিক প্রদেশেও আয়োজিত হবে। আমি একে স্বাগত জানাই।"
ফোরামে দু'দেশের তথ্যমাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিরা চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের প্রচার, প্রচার প্রক্রিয়ায় তথ্যমাধ্যমের ভূমিকা, দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের সহযোগিতার প্রস্তাবসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দক্ষিণ এশিয়া কেন্দ্রের পরিচালক লো হোং বিং
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের দক্ষিণ এশিয়া কেন্দ্রের পরিচালক লো হোং বিং বলেন, "যখন আমরা চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রী ও সহযোগিতার যুগে দাঁড়িয়ে 'চীনের স্বপ্ন' এবং চীন ও পাকিস্তানের অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছি, তখন চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্প দু'দেশের তথ্যমাধ্যমের মধ্যে সহযোগিতা গভীরতর করার ঐতিহাসিক নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে।"
পাকিস্তানের পরিকল্পনা উন্নয়ন ও সংস্কার মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, "চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর কেবল এক বিশাল সার্বিক প্রকল্প নয়, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভাই-ভাই এর মতো দুটি দেশের সম্পর্কও পরিবর্তিত হবে।" (ইয়ু/আলিম)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |