Web bengali.cri.cn   
চীনের 'ইউ কু জাতি' বিষয়ক চলচ্চিত্র 'রিভার রোড'
  2015-07-16 13:30:50  cri



'রিভার রোড' চলচ্চিত্রে পরিচালক লি রুই চুন নিজের জন্মস্থানের ওপর দৃষ্টিপাত করেন এবং ইউ কু জাতির সংস্কৃতি ও মানবজাতির সম্মুখীন নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ইউ কু জাতির লোকেরা হুই হু জাতির বংশধর ছিলেন। চীনের কান সু প্রদেশের এই জাতির বর্তমান লোকসংখ্যা ১৪ হাজারেরও বেশি। এই জাতি যাযাবরের মতো দিনযাপন করতেন।

তৃণভূমির মরুকরণ ও তা বিলীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউ কু জাতির লোকসংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে চলেছে। সেই সঙ্গে ইউ কু জাতির নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও আজ বিলুপ্তির পথে ।

'রিভার রোড' চলচ্চিত্রে ইউ কু জাতির দু'জন ভাইয়ের বাবা ও বাড়ি খুঁজে বের করার গল্প বর্ণনা করা হয়।

ছি লিয়েন পাহাড়ের নীচে বাস করা ইউ কু জাতির এক পশুপালকের ছেলে হলেন বাথুয়ার ও আতিখার । বড় ভাই বাথুয়ার দাদার যত্নে বড় হয়ে উঠে এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক তেমন ঘনিষ্ঠ নয়।

ছোট ভাই আতিখার বাবা-মায়ের সঙ্গে জীবন কাটায়। দুই ভাইয়ের যখন স্কুলে যাবার বয়স হয়ে ওঠে তখন আলোচনার পর দাদা এবং বাবা-মা দুই ভাইকে একই স্কুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। তারা আশা করেন, একই স্কুলে লেখাপড়া করার মাধ্যমে দুই ভাইয়ের মধ্যে মমতার বন্ধন প্রতিষ্ঠিত হবে।

তবে বাস্তবতা সত্যি ভিন্ন জিনিস। সবার ইচ্ছা এবং ধারণা সবসময় এক হয়না। স্কুলে দুই ভাই কখনও একে অপরের সঙ্গে কথা বলে না। বড় ভাইয়ের ধারণা, ছোট ভাইয়ের কারণে সে বাবা-মার সঙ্গে জীবন কাটাতে পারে না। তাই সে ছোট ভাইকে একদম পছন্দ করে না।

একদিন দাদা মারা যান। স্কুলেও গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলে আসে।স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজনের সাথে বাসায় চলে যায়। তবে এই দুই ভাইয়ের বাবাকে স্কুলে দেখা যায় না। কোনো উপায় না পেয়ে দুই ভাই পাহাড়ের নিচে তৃণভূমিতে অবস্থিত নিজেদের বাড়ি খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ছোট ভাই বড় ভাইকে জানায়, ছোটবেলায় বাবা তাকে শিখিয়েছে যে, পশুপালনের সময় পথ হারালে নদী বরাবর চলতে হবে। কেবল নদী থাকলে ঘাস থাকবে এবং পশুপালকদের বাড়ি অবশ্যই ঘাস সমৃদ্ধ জায়গায় অবস্থিত হতে হবে।

এভাবে দুই ভাই বাবা এবং বাসার খোঁজে রওয়ানা হয়। পথে তারা পরস্পরের সঙ্গে খুব কম কথা বলে। একটি প্রায় শুষ্ক নদীর ধার দিয় তারা সামনের দিকে যেতে থাকে। পথে তারা কোনো পশুপালকদের পশুপালন করার দৃশ্য দেখতে পায় না। তারা শুধুমাত্র বিধ্বস্ত ও হলুদ তৃণভূমি দেখতে পায়।

এভাবে কয়েক দিন চলার পর তারা দু'জন একটি মন্দিরের কাছে পৌঁছায়। মন্দিরের লামারা বা ধর্মগুরুরা তাদের খাবার ও বাস করার জায়গা দেন। লামারা তাদের জানান, তারা ঠিক সময় মন্দিরে পৌঁছেছে। আসলে কয়েক দিন পর তাঁরা মন্দির ত্যাগ করবেন। কারণ এখানে কোনো পানি নেই। ভিক্ষুরা এখানে আর বেঁচে থাকতে পারছেন না।

দশ দিন পর দুই ভাই অব্যাহতভাবে শুষ্ক নদী বরাবর সামনের দিকে চলতে থাকে। নিরুপায় হয়ে তারা অবশেষে একে অপরের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে।

ছোট ভাই বড় ভাইকে বলে, 'বাসায় ফিরে যাওয়ার পর তুমি মায়ের হাতের তৈরি সুগন্ধ ভাত খেতে পারবে। আগে মা যখন সুস্বাদু খাবার তৈরি করতেন তখন তোমাকে নিয়ে অনেক কথা বলতেন। মা বলতেন, এখন তোমার বড় ভাই যদি আমাদের সঙ্গে থাকতো তাহলে অনেক ভালো হতো।শীতকাল আসার আগে যখন মা শীতের পোশাক তৈরি করতেন তখন সবসময় সবচেয়ে ভালো উল তোমার পোশাকে ব্যবহার করতেন।

এভাবে দিন দিন দুই ভাইয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। জীবনের নানান ঘটনার মাধ্যমে তারা একে অপরকে এবং বাবা-মা ও দাদাকে জানতে ও বুঝতে পারে।

অনেক দিন পর তারা এমন একটা জায়গায় পৌঁছায় যেখানে জনভিড় আছে। অবশেষে তারা সেই জনভিড়ে তাদের বাবাকে দেখতে পায়। (লিলি/টুটুল)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040