Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির খবর
  2014-06-16 20:23:36  cri

১. চলতি বছর বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২.৮ শতাংশ: বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস

চলতি বছর বিশ্বে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২.৮ শতাংশ। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক 'বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা' শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। জানুয়ারিতে এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশ হবে বলে সংস্থাটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। কিন্তু বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রে বৈরী আবহাওয়া, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা, আন্তর্জাতিক অর্থবাজারে অস্থিরতা এবং প্রধান উন্নয়নশীল দেশগুলোতে টানা তৃতীয় বছরের মতো প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে থাকার কারণে বিশ্ব ব্যাংক তার পূর্বানুমান থেকে সরে আসে। প্রতিবেদনে বিশ্বকে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এড়াতে বাজেট ঘাটতি কমানো এবং সুদের হার ও উত্পাদশীলতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সংস্থাটির পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি গত বছরের ৪.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে এবার ৫.৩ শতাংশ হবে। বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি গত বছরের মতো এ বছরও ৫.৭ শতাংশ হবে বলে অনুমান করছে বিশ্বব্যাংক। অন্যদিকে, চলতি বছর ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপালের জিডিপি বাড়বে এবং কমবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার।

বিশ্বব্যাংকের মতে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ২.১ শতাংশ। চার প্রধান উন্নয়নশীল দেশ—ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও কম হবে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক আশার বাণীও শুনিয়েছে। সংস্থাটির মতে, ২০১৫ সালে বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৩.৪ শতাংশে ও ২০১৬ সালে ৩.৫ শতাংশে উন্নীত হবে।

২. বাংলাদেশে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ১৬ হাজার ২২২ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন

২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ১৬ হাজার ২২২ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করেছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। মূল বাজেট ছিলো ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের আকার ৬ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা কমলেও, ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৫৯ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। মূল বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছিল ৫৫ হাজার ৩২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার কাটছাঁট করে ৬০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।

এদিকে, সংশোধিত বাজেটে সরকারের ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। মূল বাজেটে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। শুধু ব্যাংক খাত থেকেই সরকারকে ঋণ করতে হচ্ছে ২৯ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা।

৩. বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১২ হাজার ৭০০ টাকা

বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১৬২.২০ মার্কিন ডলার বা ১২ হাজার ৭০০ টাকা বলে সংসদে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের এক প্রশ্নের উত্তরে বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আরো জানান, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরের ৩০ জুন বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের (পাবলিক সেক্টর) স্থিতির পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৯০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; টাকার অঙ্কে যা প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা। গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ২৭৪.১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ২ হাজার ১৪৭.৬০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। এ সময়ে ঋণের আসল বাবদ ৩ হাজার ৫১৫.৬০ মিলিয়ন ডলার বা ২৭ হাজার ৫৪৪.৭০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়।

৪. বিদেশ ভ্রমণের ওপর কর বাড়লো বাংলাদেশে

বাংলাদেশের ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশভ্রমণের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। ফলে আকাশপথে ভ্রমণ করলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি কর দিতে হবে। আগামী জুলাই মাস থেকে এই নতুন হার কার্যকর করা হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী, আকাশপথে সার্কভুক্ত দেশভ্রমণে একজন যাত্রীকে এক হাজার ২০০ টাকা করে ভ্রমণ কর দিতে হবে। এখন এক হাজার টাকা ভ্রমণ কর দেন যাত্রীরা। ফলে আগের চেয়ে যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা খরচ বাড়বে।

একইভাবে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দূরপ্রাচ্যের দেশেগুলোয় ভ্রমণ করলে কর দিতে হবে চার হাজার টাকা। আগে এর পরিমাণ ছিল তিন হাজার টাকা। এসব দেশে যেতে হলে যাত্রীদের এক হাজার টাকা করে বাড়তি গুনতে হবে। এ ছাড়া, অন্যান্য দেশে যেতে হলে ভ্রমণ কর আড়াই হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়েছে।

৫. ভারতে সাত মাস বাদে ১০% ছাড়াল রফতানি বৃদ্ধির হার

গত বছরের তুলনায় ১২.৪% বেড়ে মে মাসে ভারতে রফতানি দাঁড়িয়েছে ২৮০০ কোটি ডলারে। এ ছাড়া, আমদানি ১১.৪% কমে ছুঁয়েছে ৩৯২৩ কোটি ডলারে। বুধবার প্রকাশিত দেশটির শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, রফতানি বাড়া ও আমদানি কমার কারণে, বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১১২৩ কোটি ডলারে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১৯৩৭ কোটি ডলার। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আমেরিকা ও ইউরোপের অর্থনীতির অবস্থা ভালো হচ্ছে বলেই ভারতের রফতানি এতটা বেড়েছে।

৬. বাংলাদেশের পর এবার ভারত থেকে পান আমদানি নিষিদ্ধ করলো ইইউ

ভারত থেকে পান আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এর আগে গত মাসে ভারতের আলফানসো আমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইইউ।

ইউরোপের 'র‍্যাপিড অ্যালার্ট সিস্টেম ফর ফুড অ্যান্ড ফিড' (আরএএসএফএফ)-এর রিপোর্টের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই কারণে বাংলাদেশ থেকে পান আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

এদিকে, চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত আরএএসএফএফ-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, ভারত থেকে আমদানি হওয়া পান পাতায় সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে মানুষের শরীরে ডায়েরিয়া হয়। ভারতীয় কচু, করলা, বেগুন, পটল ইত্যাদি সব্জির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ইইউর। আঞ্চলিক জোটটির অভিযোগ, ক্ষতিকারক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে ওসব সব্জিগুলিতে।

৭. মে মাসে পাকিস্তানের রপ্তানি আয় কমেছে

ইউরোপের বাজারে বাণিজ্য সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও, চলতি বছরের মে মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পাকিস্তানের রপ্তানি আয় কমেছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরো (পিবিএস)-এর প্রকাশিত উপাত্ত অনুসারে, মে মাসে দেশটির রপ্তানি আয় হয়েছে ২১১.৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.২১ শতাংশ কম। টেক্সটাইল শিল্পমন্ত্রী আব্বাস খান আফ্রিদি 'ডন' পত্রিকাকে জানিয়েছেন যে, বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং পাঞ্জাবের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় রপ্তানি কমেছে।

এদিকে, দেশটিতে আমদানিও তুলনামূলকভাবে কমেছে। মে মাসে দেশটি আমদানি করেছে ৩৬৭.৫ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫.৪৪ শতাংশ কম।

৮. পাকিস্তানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে

২০১৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত মোট ১১ মাসে পাকিস্তানের প্রবাসী কর্মীরা দেশে মোট ১৪৩৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২.৩৭ শতাংশ বেশি। পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরো সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে। ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ওই ১১ মাসে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জিসিসি দেশসমূহ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে প্রবাসী পাকিস্তানিরা পাঠিয়েছে যথাক্রমে ৪২৫, ২৮১.৩, ২২৪.২, ১৯৭.৯, ১৬৯.১, এবং ৩৯.৪৩ কোটি মার্কিন ডলার। অন্যদিকে, এসময় নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপানসহ বাকি দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে মোট ৯৫.৪৮ কোটি মার্কিন ডলার।

৯. মালদ্বীপে ডলার রাজস্ব আয় বেড়েছে ২১ শতাংশ

চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসে মালদ্বীপ মার্কিন মুদ্রায় রাজস্ব আয় করেছে মোট ১৮.০২ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধু মে মাসেই দেশটির আয় হয়েছে ৩.৮৭ কোটি মার্কিন ডলার।

১০. মালদ্বীপের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাপক সুবিধা

মালদ্বীপের প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকাসমূহে বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা দেবে সরকার। সম্প্রতি দেশটির সংসদে উত্থাপিত 'বিশেষ অর্থনৈতিক জোন বিল'-এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। বিলে ৯টি বিশেষ ক্যাটাগরির অর্থনৈতিক জোন গঠনের কথা বলা হয়েছে।

(আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040