Web bengali.cri.cn   
অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারের সিদ্ধান্ত
  2013-02-25 17:16:11  cri
উদীয়মান বৃহত্ অর্থনীতির দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়াতে তাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক কূটনীতি আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে চীন, ভারত, রাশিয়া ও ব্রাজিলের মতো সম্ভাবনাময় ও বৃহত্ বাজারগুলোর প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত 'ইপিবির রপ্তানি কর্মপরিকল্পনা' পর্যালোচনা-সভায় এসব সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

জানা গেছে, সভায় রপ্তানি আয় বাড়াতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উদীয়মান নতুন বাজারগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করা। চীন, ভারত, রাশিয়া ও ব্রাজিলের বাজারে রপ্তানি বাড়াতে দেশগুলোতে আরো বেশি করে বাণিজ্য-প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ চারটি দেশের পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার আরো কয়েকটি দেশে রপ্তানি বাড়াতেও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রপ্তানি বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে এবং সিদ্ধান্ত হয় সেখানে আয়োজিত বিভিন্ন বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে রাজ্যগুলোতে। প্রসঙ্গত, দেশটির অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ সমস্যার কারণে পূর্বাঞ্চলীয় ওই রাজ্যগুলোতো ভারতীয় পণ্যের মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় সেখানে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে।

ওই বৈঠকে প্রচলিত তৈরিপোশাক পণ্য যেমন টি-শার্ট, জিনস প্যান্ট, পোলো শার্ট ও সোয়েটারের পাশাপাশি আরো উচ্চ মূল্যসংযোজনশীল পোশাক যেমন স্যুট, ব্লেজার, ট্রাউজার ও জ্যাকেট রপ্তানি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেওয়া হয়।

এছাড়া বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রাখার ক্ষেত্রে যে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে আলাচোনা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ সুবিধা রক্ষায় সরকার প্রাণপণ চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষিত হচ্ছে না – এমন অভিযোগ তুলে আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার অ্যান্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশন নামের একটি সংগঠন দেশটিতে বাংলাদেশের বিশেষ অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা বাতিলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ সুবিধা বাতিল চেয়ে সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে আবেদন দাখিল করেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ এবং অস্ট্রেলিয়া, জাপান, রাশিয়া, তুরস্ক, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও বেলারুশে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে।

ব্যুরোর হিসেব মতে, বাংলাদেশি পণ্যের বিশেষ অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশধিকারের আওতায় ২০১২ সালে ইউরোপের ২৭টি দেশে মোট দুই কোটি ৮১ হাজার ২৩৭টি জিএসপি সনদ ইস্যু করা হয়। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোয়ে সাফটা চুক্তির আওতায় ২০১২ সালে এক হাজার ৮৯১টি সাফটা সনদ, চীনের ক্ষেত্রে ৬৫০টি সিও, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে ছয় হাজার ৫০০টি, আপটাভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৬০৩টি সনদ ইস্যু করা হয়।

অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকারের বাজারগুলোর ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার রক্ষায় মালিকদের আরো বেশি উদ্যোগী হওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয় বৈঠকে।

বাংলাদেশ তৈরিপোশাক উত্পাদন ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ওই বৈঠকে বলেন, অগ্নিনিরাপত্তা, শ্রমিকদের বেতন, ওভারটাইম, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, কল্যাণ সুবিধা ও মহিলা শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে কারাখানাগুলোতে। তবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে তৈরি পোশাকের দাম কমছে, অন্যদিকে বাড়ছে, যার ফলে উত্পাদক ও রপ্তানিকারকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকে বলা হয়, কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ১০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। অথচ কোনো ধরনের সমীক্ষা ছাড়াই বন বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে সুন্দরবন এলাকায় কাঁকড়া ও কুঁচে ধরার ওপর নিষেধাঞ্চা আরোপের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এ রপ্তানি খাত ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়।(এসআর)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040