Web bengali.cri.cn   
বাংলাদেশে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষিত
  2013-02-11 20:01:04  cri
চলতি অর্থবছরের শেষার্ধ অর্থাত্ জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংযত মুদ্রানীতি থেকে সরে এসে এবার কিছুটা ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মুদ্রানীতি ঘোষণায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, এ মুদ্রানীতির লক্ষ্য হবে অর্থের প্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা এবং পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা নেওয়া।

গত জুলাই মাসে ঘোষিত মুদ্রানীতির তুলনায় নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণ কমানোর ও বেসরকারি খাতে বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন মুদ্রানীতিতে জুন ২০১৩ নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের ঊর্ধ্বসীমা প্রাক্কলিত ১৮ শতাংশের বদলে ১৮.৫ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যাপক মুদ্রার যোগানে এখাতে প্রবৃদ্ধির সীমা প্রাক্কলিত ১৬ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। আর সরকারের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০.৩ শতাংশ করা হয়েছে।

নতুন মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজার বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও এ বিষয়ে সক্রিয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর। গত অর্থবছরে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ১৭ শতাংশ, আগের বছরে যা ছিল ৩৮ শতাংশেরও বেশি।

এ মুদ্রানীতিতে নীতিনির্ধারণী সুদের হারে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। গভর্নর বলেন, উত্পাদন প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্ব মন্দাজনিত ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকের সব নীতিনির্ধারণী সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে আনা হবে।

গভর্নর মনে করেন, নীতি সুদহার কমলে প্রবৃদ্ধিমুখী ও উত্পাদনমুখী উদ্যোগে ঋণের যোগান বাড়বে। এর আগের সংযত মুদ্রানীতি গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে গভর্নর বলেন, ২০১১-১২ অর্থবছরে মুদ্রানীতির জন্য চ্যালেঞ্জগুলো আসে মূল্যস্ফীতি চাপ ও বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের ওপর চাপের মধ্য দিয়ে। এগুলো মোকাবিলার জন্যই তখন মুদ্রানীতিতে সংযত বা সতর্ক ভঙ্গি আনা হয়। তাঁর মতে এ নীতির সুফল হিসেবে বেসরকারি খাতে ঋণের যোগানে ২০ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেও মূল্যস্ফীতি নিম্নগামী করার এবং বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যে চাপ লাঘবের মূল লক্ষ্যগুলো অর্জন সম্ভব হয়।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য নেওয়া মুদ্রানীতির সুফল তুলে ধরে গভর্নর বলেন, গড় বার্ষিক ভোক্তা মূল্যসূচক গত ৯ মাস ধরেই নিম্নগামী থেকেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারির সর্বোচ্চ ১০.৯৬ শতাংশ থেকে সূচক ডিসেম্বরে ৮.৭৪ শতাংশে নেমেছে এবং চলতি অর্থবছরের মধ্যেই ৭.৫০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছার পথে রয়েছে। তিনি বলেন, খাদ্য ও খাদ্য-বহির্ভূত দু' খাতেই ভোক্তা মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী ধারায় চলে এসেছে। খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গত মার্চের শীর্ষ মাত্রা পর্যায় ১৩.৯৬ শতাংশ থেকে ডিসেম্বরে ৮.৪৩ শতাংশে নেমে এসেছে।

অবশ্য সরকারের ঘোষিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলা হলেও এ মুদ্রানীতিতে সে ধরনের কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং গভর্নর জানান, প্রবৃদ্ধির এ হার অর্জনের বিষয়ে তিনি খানিকটা সন্দিহান। পাশাপাশি তিনি অবশ্য বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের পূর্বাভাস মোতাবেক এ অর্থবছরে দেশের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি বিগত ১০ বছরের গড় অঙ্ক অর্থাত্ ৬.২ শতাংশের কম দাঁড়াবে না। আর অনুকূল পরিস্থিতি পেলে তা বেশির দিকেই থাকবে। (এসআর)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040