Web bengali.cri.cn   
ফাটকাবাজি রোধে কর বসছে ইউরোপ
  2013-01-28 17:13:31  cri
ফাটকাবাজি রোধে আর্থিক লেনদেনের ওপর কর আরোপে সম্মত হয়েছে ইউরোপের ১১টি দেশ। তাদের এ সম্মতির মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো আঞ্চলিকভাবে আর্থিক লেনদেন কর বলবত্ হতে যাচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ তথা ইউরো অঞ্চলভুক্ত ১৭টি দেশ এই কর আরোপের বিষয়ে কোনো মতৈক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলেও জার্মানি, ফ্রান্সসহ ১১টি দেশ এই কর আরোপ করবে বলে একমত হয়েছে। এ কর আরোপকারী অন্য দেশগুলো হলো অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, এস্তোনিয়া, গ্রিস, ইতালি, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া ও স্পেন।

এর ফলে এসব দেশে শেয়ারসহ আর্থিক বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ০.১ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। তবে উত্পন্ন বস্তুর জন্য এই হার হবে ০.০১ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে যখন আর্থিক সংকট দেখা দেয় তখন থেকেই আর্থিক বাজারে ব্যাপক মাত্রায় ফাটকা কারবারের বিষয়টি নতুনভাবে আলোচনায় উঠে আসে। এটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইউরোপের কয়েকটি দেশের তরফ থেকে আর্থিক লেনদেনের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব আনা হয়। তবে অনেক দেশই তা সমর্থন না করায় বিষয়টি এতদিন ঝুলে ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, আর্থিকবাজারে মাত্রাতিরিক্ত ফাটকাবাজির মাধ্যমে কারবারীরা একটা পর্যায়ে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েন। বিনিয়োগকারীদের বিরাট লোকসানের মুখে পড়তে হয়। কেননা, কৃত্রিমভাবে বিভিন্ন আর্থিক পণ্য যেমন শেয়ার, বন্ড, ডেরিভেটিভস ইত্যাদির দাম বাড়িয়ে সেটা থেকে অধিক মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। অনেক সময় একাধিক আর্থিক পণ্যকে সমন্বিত করে নতুন পণ্য বানিয়ে বাজারে ছাড়া হয় নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্থিকবাজারের ফাটকাবাজির পরিধি এখন এতোটাই বিস্তৃত যে খাদ্যপণ্যের বাজারেও সেটি ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে খাদ্যের যে ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল তার পেছনে এই ফাটকাবাজির বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়।

আর্থিক লেনদেনের ওপর করের ধারণাটি আনেন অর্থনীতিবিদ জেমস টোবিন; আজ থেকে ৪০ বছর আগে। তাঁর নামানুসারে এটি 'টোবিন ট্যাক্স' নামে পরিচিতি পায়। অবশ্য অনেকে এই করকে 'রবিনহুড কর' বলেও অভিহিত করেন। তাঁদের মতে, আর্থিক বাজারে ফাটকাবাজি করে মানুষের কাছ থেকে প্রকারান্তরে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুট করে নেওয়া হয়। কাজেই এ ফাটকাবাজ কারবারীদের ওপর কর আরোপ করা উচিত।

আপাতত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবগুলো দেশে আর্থিক লেনদেন কর আরোপ না হলেও এটাকে একটা শুভ সূচনা বলা যায় নিশ্চয়ই। আশা করা যায়, অন্যদেশগুলোও এ উদ্যোগ শামিল হবে আর্থিক ফাটকাবাজি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেটা সম্ভব হলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ যেমন রক্ষিত হবে, তেমনি রক্ষিত হবে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলাও। (সূত্র: বিবিসি ও এএফপি।)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040