Web bengali.cri.cn   
আসিয়ান বাজারে ফুচিয়ানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাফল্য
  2013-01-14 15:12:26  cri

   আসিয়ানের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব চীনের উপকূলীয় প্রদেশ – ফুচিয়ানের সুদীর্ঘকালের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের সম্পর্ক রয়েছে। এখন আসিয়ান ফুচিয়ানের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। ২০১২ সালে তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক পরিমাণ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আসিয়ানের আগে রয়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সম্প্রতি সিআরআইয়ের সংবাদদাতা ফুচিয়ান প্রদেশের বাণিজ্য উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান চাং ছিউ এবং ফুচিয়ানের ছুয়ানচৌ শহরের দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাক্ষাত্কার নেন।

ফুচিয়ান প্রদেশের বাণিজ্য উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান চাং ছিউ সিআরআইয়ের সংবাদদাতাকে সাক্ষাত্কার দিচ্ছেন।

চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের বাণিজ্য উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান এবং সেখানকার বৈদেশিক বাণিজ্য ও অর্থনীতি সহযোগিতা বিভাগের উপপ্রধান চাং ছিউ সংবাদদাতাকে বলেন, এ প্রদেশের ১ কোটি ২৬ লাখ নাগরিক প্রবাসী। তাদের মধ্যে অধিকাংশই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রয়েছেন। তিনি বলেন, "২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফুচিয়ান ও আসিয়ানের বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর আগের বছরের তুলনায় এ অঙ্ক ১৯ শতাংশ বেশি। ২০১১ সালের শেষ নাগাদ আসিয়ানে ফুচিয়ানের বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৪৪টি। ২০১২ সালে বাড়ে আরো ১১টি। এ সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ৩৫ কোটি ডলার। খনিজ পদার্থ, সমুদ্রে মাছ ধরা, বন সম্পদ, ইলেকট্রনিক তথ্য ও যন্ত্রপাতি খাতে বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি।"

ছুয়ানচৌ হচ্ছে ফুচিয়ান প্রদেশের তিনটি বড় শহরের অন্যতম। এখান থেকে চীনের প্রাচীনকালের 'সামুদ্রিক রেশমপথের' শুরু। সামুদ্রিক রেশমপথ দিয়ে কেবল রেশমি কাপড়ই পরিবহণ করা হতো না; চীনামাটি, চিনি ও যন্ত্রপাতির রপ্তানি এবং মসলা, ওষুধ ও মণি আমদানি হতো সেখান দিয়ে।

তখন থেকে এক হাজার বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। ছুয়ানচৌ এখনো উন্নত অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও ব্যস্ত বন্দর। যন্ত্রপাতি, জুতা, টুপি ও পোশাকসহ নানা পণ্য ছুয়ানচৌ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রপ্তানি হয়।

ছুয়ানচৌ হচ্ছে চীনের দ্বিতীয় 'স্পোর্টস সু' বা ক্রীড়াজুতা উত্পাদনের কেন্দ্র। আনথা, থবু, ৩৬১ ডিগ্রি, পিক, হোংশিংএরকসহ অনেক বিখ্যাত ব্র্যান্ড উত্পাদিত হয় এ নগরে। এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ সব ক্রীড়াজুতার দোকান চালু হয়েছে। তা ছাড়া ছুয়ানচৌর হালকা শিল্পের যন্ত্রপাতি জাতীয় পণ্যগুলোও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও সুনাম অর্জন করেছে।

ছুয়ানচৌ ছিশিং যন্ত্রপাতি কোম্পানির কর্মশালা

ছুয়ানচৌ ছিশিং যন্ত্রপাতি কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে চীন ও ফিলিপাইনের যৌথ-মালিকানা প্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানির উপ-প্রধান ব্যবস্থাপক হুয়াং বিন হুয়াং সংবাদদাতাকে বলেন, "দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার হচ্ছে আমাদের অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ বাজার। চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে আমাদের রপ্তানির পরিমাণ অপেক্ষাকৃত বেশি। এখন আমরা ক্যাম্বোডিয়া, লাওস ও মিয়ানমারে বিনিয়োগ জোরদার করেছে। আমরা এ সব দেশে গিয়ে স্থানীয় সহযোগিতা-অংশীদার খোঁজার পরিকল্পনা করেছি।"

ছুনফাং বুদ্ধিবৃত্তি কোম্পানি লিমিটেডের কর্মশালা

ছুয়ানচৌ অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঞ্চলে অবস্থিত ছুনফাং বুদ্ধিবৃত্তি কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে সড়কের ইট ও রঙিন টালি সংশ্লিষ্ট কংক্রিট পণ্য নির্মাণের যন্ত্রপাতি উত্পাদনের প্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানির পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।

এ কোম্পানির বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক হুয়াং ওয়েন ওয়েই বলেন, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ ইউয়ান। তিনি বলেন, "গত দু'বছর আসিয়ানের উন্নয়নের গতি ছিল অতি দ্রুত। ২০১২ সালে মিয়ানমার, লাওস ও ভিয়েতনামে আমাদের বিক্রিত সাজসরঞ্জামের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা একক-মালিকানা আর যৌথ-মালিকানা পদ্ধতিতে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় কার্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছি।"

হুয়াং ওয়েন ওয়েই মনে করেন যে, উন্মুক্ত বাজার চীনের জন্য যেমন সুযোগ বয়ে এনেছে, তেমনি পাশাপাশি নিয়ে এসেছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও। তিনি বলেন, চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত ভালোভাবে বাজার জেনে নেওয়া এবং প্রযুক্তিগত সংস্কারের মাত্রা আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা সক্ষমতা আরও বাড়ানো। (ইয়ু/এসআর)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040