Web bengali.cri.cn   
৯ ডিসেম্বর ২০১২: চীনের রাজধানী বেইজিং এর প্রথম দিন
মহা গণভবন এবং নিশিদ্ধ নগরী পরিদর্শন:
  2012-12-14 21:15:27  cri

"হাইনান আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপ" জ্ঞানযাচাই প্রতিযোগিতার গ্রেন্ড পুরস্কার বিজয়ী শ্রোতাদের গ্রুপ ছবি

আজ বেইজিং সময় সকাল ৮:৩০টায় আমরা হোটেল লবি থেকে সিআরআই ৬টি বিভাগের কর্মকর্তা এবং বিজয়ী শ্রোতাবন্ধুরা সহ একসাথে পর্যটন বাস যোগে রওনা হয় চীনের বেইজিং শহর পরিদর্শন করতে। বেইজিং এর তাপমাত্রা তখন মাইনাস ছয় ডিগ্রি (-৬°এফ)। পর্যটন বাসে আমাদের চাইনিজ গাইড বেইজিং এর ইতিহাস, ঐতিহ্য, জীবন-যাপন, ইত্যাদি বিষয়ে নানা তথ্য প্রদান করেন চীনা ভাষায়। আর তার বক্তব্য আমাকে বাংলায় অনুবাদ করে শুনান আমার বন্ধু চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই) বাংলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ছাইয়ূএ মুক্তা আপু। এভাবে ৬টি বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের স্ব স্ব শ্রোতাবন্ধুকে অনুবাদ করে শুনান। আমরা যখন আমাদের প্রথম পরিদর্শনের গন্তব্যে এসে পৌঁছায় তখন সময় সকাল ১০:০০টা। পর্যটন বাস থেকে নামার পূর্বে ৬জন বিজয়ীকে সিআরআই এর বিশেষ জ্যাকেট (শীতের পোশাক) প্রদান করা হয়। আমার বন্ধু ছাইয়ূএ মুক্তা আমার জন্য সিআরআই মনোগ্রাম খচিত টকটকে লাল রং-এর একটি জ্যাকেট পছন্দ করেন। যেটি আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। কারণ লাল আমার প্রিয় রং! বাস থেকে নেমে আমরা পায়ে হেটে চীনের বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থান মহা গণভবন-এ আসি। তাপমাত্রা মাইনাসে থাকায় শীতের তীব্রতা এতো বেশি ছিলো যে বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে গণভবনের সামনে আসার পথে-ই আমার হাত এবং মুখের ত্বক শুকিয়ে টান টান হয়ে যায়। এমন কি আমার কন্ঠস্বরও অস্পষ্ট হয়ে যায়। সকালের আকাশ অনেক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ছিলো এবং সূর্যের আলোও ছিলো কিন্তু শীতের প্রভাব মোটেও কমেনি। আমার গায়ে অনেকগুলি শীতের পোশাক থাকার পরেও আমার কিছুটা কষ্ট হয়েছে। তবে, এর পরেও আমি বিষয়টি আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। অনেক বড় জায়গা নিয়ে এ মহা গণভবনটি তৈরী। গণভবনের সামনে মাঠের মাঝখানে একটি উচু স্মৃতি ফলক রয়েছে যেখানে নয়া চীনের জনক মাওসেতুং এর লেখা বাণী রয়েছে। এছাড়া দুটি বড় টিভি পর্দা বা স্ক্রিন রয়েছে যাতে অটোমেটিক ভাবে নিয়মিত তুলে ধরা হয় চীনের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সাফল্যের কথা। মহা গণভবনের সামনে রাস্তার বাম পাশে রয়েছে তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর। মহা গণভবনের আশে পাশে আর কোন বড় বা ছোট ভবন না থাকায় সেটি একটি উজ্জল এবং অভিজাত্যপূর্ণ এলাকায় রূপান্তরিত হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রিয় সিদ্ধান্ত গুলি এখানে এই মহা গণভবনে নির্ধারিত হয়। সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)'র ১৮তম জাতীয় কংগ্রেস এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং চীনের নতুন নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রিয় অনুষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য সময়ে যে কোন লোক এখানে পরিদর্শনে আসতে পারেন। ফলে এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক পরিদর্শনে আসেন। আমারও দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিলো এ স্থানটি নিজ চোখে দেখার। আজ আমার সেই স্বপ্ন পুরন হয়েছে সিআরআই এর কল্যাণে। এর জন্য আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সিআরআই এর কাছে। সত্যি কথা বলতে কি আমি নিজে এ স্থানটি পরিদর্শক করতে পেরে নিজেকে সম্মানিত এবং গর্বিত মনে করছি। এখানের প্রতিটি মূহুর্ত আমার মন প্রাণ ছুয়ে গেছে।

নিশিদ্ধ নগরের সামনে দিদারুল ইকবাল

এরপর আমরা আন্ডারপাস রাস্তা পার হয়ে চীনের আরেকটি ঐতিহাসিক এবং প্রায় ৩ হাজার বছরের ইতিহাসখ্যাত তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর পরিদর্শনে যায়। এখানে দীর্ঘ লাইন ধরে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর পরিদর্শনের সময় আমি প্রতিটি গদক্ষেপে চমৎকৃত হয়েছি। এখানে অনেকগুলি প্রাসাদ রয়েছে যা পূর্ণাঙ্গ ভাবে ভালো করে একদিনে দেখা মোটেও সম্ভব নয়। এমনকি এখানে আপনি কোন প্রাসাদকে রেখে কোনটিকে সেরা বলবেন সেটা নির্বাচন করতে কঠিন পরীক্ষার সন্মুক্ষিন হতে হবে। এখানে আসা পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ভাষার অডিও গাইড লাইনও রয়েছে। যে কোন ব্যক্তি ইচ্ছে করলে কোন গাইড ম্যান ছাড়াই অডিও গাইড লাইনের মাধ্যমে এলাকা পরিদর্শন করতে পারবেন এবং এর সমস্ত ইতিহাস সাবলিল ভাবে বুঝতে পারবেন। মূল ভবনে প্রবেশের পূর্বে আমার সিআরআই বন্ধু ছাইয়ূএ মুক্তা আপু আমাকে একটি সারপ্রাইজ দেন আর সেটি হচ্ছে একটি বাংলা অডিও গাইড। আপনারা জানেন তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর পরিদর্শনের বাংলা অডিও গাইড কে তৈরী করেছেন? নিশ্চয় না! আপনাদের মতো আমিও বিস্মিত হয়েছি অডিও গাইডটি পেয়ে! তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন আমাদের সিআরআই বাংলা বিভাগের অতি পুরাতন মিষ্টি কন্ঠি চীনা বন্ধু শি চিং উ! আমাদের দলে গাইড, দলের বন্ধু এবং বিশেষ করে আমার বন্ধু ছাইয়ূএ মুক্তা আপু থাকার পরেও বন্ধু শি চিং উ'র তৈরী বাংলা অডিও গাইডটি আমাকে সমস্ত প্রাসাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে সহজ করে দিয়েছে। এই সুযোগে আমি আমাদের অতি পুরোনো চীনা বন্ধু শি চিং উ- কে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানায়। আমি বিশ্বাস করি শি চিং উ'র তৈরী বাংলা অডিও গাইডটি বাঙালী পর্যটক বন্ধুদের তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর পরিদর্শনের সময় গাইডের কাজটি অত্যন্ত সহজ করে দিবে এবং দিয়েছে। তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগরের ভেতরে আমি চীনের রাজ বংশের রাজা-রাণীদের জীবন যাপনের ধরন, ব্যবহায্য পোশাক, আসবাবপত্র, সিংহাসন ইত্যাদি দেখেছি যা এখানে অল্প কথায় লিখে শেষ করা যাবেনা। এক কথায় বলা যায় আমি প্রতিটি মূহুর্তে বিস্মিত হয়েছি। তবে এ তিয়ানমেন স্কয়ার বা নিশিদ্ধ নগর সম্পর্কে ভিন্ন একটি লেখায় আপনাদের কাছে আরো বিস্তারিত তুলে ধরবো। উল্লেখ্য মহা গণভবন এবং নিশিদ্ধ নগরী পরিদর্শনের সময় আমরা ব্যক্তিগত ও গ্রুপ ভিত্তিক অনেক ছবি তুলেছি এবং সিআরআই আমাদের এই পরিদর্শনের সকল বিষয় ভিডিও রেকর্ড ও ইন্টারভিউ নিয়েছে।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে দিদারুল ইকবাল

দিদারুল ইকবাল

"হাইনান আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপ"

জ্ঞানযাচাই প্রতিযোগিতার গ্রেন্ড পুরস্কার বিজয়ী

২০১২-১২-০৯

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040