Web bengali.cri.cn   
পেইচিং থানচেন মন্দির-- ২
  2012-12-12 17:28:15  cri

প্রকাশ. থানচে মন্দিরের আরেকটি বিখ্যাত দৃশ্য হল ড্রাগন রাজা হলের সামনে একটি পাথর-মাছ। এর দৈর্ঘ্য ১.৭ মিটার, ওজন ১৫০ কেজি। বাহির থেকে দেখলে মনে হয় তামার মাছ; তবে সেটি আসলে পাথরের মাছ। আপনি যদি মাছটির গায়ে টোকা দেন, তবে পাঁচ সুরের লহরী শোনা যাবে। কথিত আছে, এ পাথরমাছ দক্ষিণ সাগরের ড্রাগন রাজপ্রাসাদের শ্রেষ্ঠ মণি ছিল যা ড্রাগন রাজা উপহার হিসেবে স্বর্গের রাজাকে দিয়েছিলেন। তবে পেইচিংয়ের খরা প্রতিরোধ করার জন্য স্বর্গের রাজা থানচে মন্দিরে এ পাথরমাছ রেখে দেন। একরাতে ঝড়বৃষ্টি আসার সাথে সাথে পাথরমাছ আকাশ থেকে মন্দিরে পড়ে। জানা গেছে, পাথরমাছের শরীরে ১৩টি অংশ আছে, যা কিনা চীনের ১৩টি প্রদেশের প্রতীক। এ কথা বিশ্বাস করা হয় যে, যখন যে প্রদেশে খরা দেখা দেয়, তখন পাথরমাছের সে-অংশ বাজালে সে-প্রদেশে বৃষ্টি হয়।

সুবর্ণা. থানচে মন্দিরের আরেকটি মজার দর্শনীয় স্থানের নাম 'বাঘ বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র শোনে'। মন্দিরের এক হলের বাইরে একটি পাথর দিয়ে তৈরী বাঘের মূর্তি স্থাপিত আছে। কথিত আছে, প্রাচীনকালে একটি হিংস্র বাঘ সবসময় মন্দিরের বনে লুকিয়ে থেকে লোকজনের ওপর আক্রমণ করতো। তখন অনেক লোক বাঘের হাতে প্রাণ হারায়। একদিন বাঘ থানচে মন্দিরের সামনে এসে সন্ন্যাসীদের ওপর হামলা চালাতে উদ্যত হয়। তখন মন্দিরের মঠাধ্যক্ষ বাঘের সামনে এসে বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র পড়ে শোনান। এতে বাঘটি শান্ত হয়ে মঠাধ্যক্ষের কাছে বসে পড়ে এবং মনোযোগ দিয়ে ধর্মের শাস্ত্র শুনতে থাকে। পরে লোকেরা মঠাধ্যক্ষ ও বাঘের স্মৃতি রক্ষার্থে থানচে মন্দিরে একটি বাঘের মূর্তি নির্মাণ করে।

প্রকাশ. প্রিয় বন্ধুরা, সুন্দর গল্প শোনার পর এবার আরকটি গান শোনার পালা। গানের নাম 'হানশান মন্দিরের বাইরে ফুল ঝড়েছে'। হানশান মন্দির চীনের চিয়াংসু প্রদেশের সুচৌ শহরের একটি বিখ্যাত মন্দির। প্রাচীনকালে চীনের অনেক কবি এ মন্দিরের জন্য কবিতা রচনা করেছিলেন।

সুবর্ণা. সুন্দর গানটি শোনার পর এখন থানচে মন্দিরের আরও কিছু সুন্দর দর্শনীয় স্থানের তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। তাসিয়োং হলের বাইরে পূর্ব দিকে একটি পুরনো অশ্বথ গাছ দাঁড়িয়ে আছে; এ-ধরনের গাছ ভারতের রাস্তায় দেখা যায়। গৌতম বুদ্ধ অশ্বথ গাছের নিচে বসে ধ্যান করতেন। এ-গাছের পেছনে একটি বড় আকারের রাজা গাছ আছে, যেটি আসলে একটি বড় আকারের ফার্ণ গাছ। কথিত আছে, প্রাচীনকালে চীনের একেকজন রাজা শপথগ্রহণের করতেন, আর গাছটির গোড়া থেকে একটি করে নতুন শাখা জন্ম নিত। দীর্ঘকাল ধরে এভাবে চলতে থাকায়, এ গাছের আকার অনেক বড় হয়েছে। এটি এতো মোটা যে, সাত জন লোক পরস্পরের হাত ধরে গোল হয়ে দাঁড়ালে এর গুঁড়ি আগলাতে পারে।

প্রকাশ. বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য থানচে মন্দির খুবই পবিত্র স্থান। মন্দিরের দোতলা উঁচু পিলু প্যাভিলিয়ন থেকে মন্দিরের সম্পূর্ণ দৃশ্য দেখা যায়। ধর্মানুরাগীরা যখন আগড়বাতি জ্বালায়, তখন গোটা মন্দিরের উপরে হাল্কা হাল্কা ধোয়া দেখা যায়, যা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ও মন্দিরের সোনালী স্থাপত্যের সাথে মিলেমিশে এক স্বর্গীয় দৃশ্যের অবতারণা করে।

সুবর্ণা. প্রিয় বন্ধুরা, থানচে মন্দিরের তথ্য জানার পর এখন শ্রোতাদের চিঠি পড়ে শোনানোর পালা। বাংলাদেশের ঢাকা ডিএম ইন্টারনেশনাল রেডিও ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডাবলু (দাবলু) আনওয়ার সেপ্টেম্বর মাসে চিঠিটি পাঠিয়েছেন। কিন্তু ডাকঘর দেরী করে আমাদের হাতে চিঠিটি পৌঁছায়। তাই আমি মাত্রই চিঠিটি দেখেছি। প্রিয় ডাবলু ভাই, আপনি চিঠির সাথে একটি ছোট্ট অথচ সুন্দর উপহারও পাঠিয়েছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমরা আসন্ন নতুন বছরে অনুষ্ঠানটি আরো সুন্দর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।

প্রকাশ. বন্ধুরা, সময় দ্রুত বয়ে যায়। অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। তবে শেষ করার আগে আরেকটি গান শুনে নিই। গানের নাম 'সন্ধ্যাবেলায় পুরনো মন্দির'। এ-গানে চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রে বাজানো সুর সংযোজন করা হয়েছে। এ-সুর শুনলে মন প্রশান্ত হয়।

সুবর্ণা. এবার এ-সপ্তাহের কুইজের প্রশ্ন। প্রশ্নটি হচ্ছে: থানচে মন্দিরে 'বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র শোনা' কোন পশুর মূর্তি আছে?

প্রকাশ. প্রশ্নটি আবার বলি: থানচে মন্দিরে 'বৌদ্ধ ধর্মের শাস্ত্র শোনা' কোন পশুর মূর্তি আছে?

সুবর্ণা. ঝটপট উত্তর পাঠিয়ে দিন আমাদের এই ঠিকানায়: ben@cri.com.cn.

আমরা আপনাদের চিঠি অপেক্ষায় রইলাম।

ক. সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে, একই দিনে, একই সময়ে। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম)


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040