|
এ অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে। এখন শুনুন চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে শিরোনামে একটি প্রতিবেদন।
১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ২০১২ সালের নতুন অগ্রগামীদের বার্ষিক সম্মেলন অর্থাত গ্রীষ্মকালীন দাভোস ফোরাম উত্তর চীনের থিয়ান চিনে শুরু হয়। এ ফোরামের প্রধান প্রতিপাদ্য হচ্ছে ভবিষ্যতের অর্থনীতি গড়ে তোলা। বিশ্বের ৮৬টি দেশের দুই হাজারেরও বেশি রাজনীতিক ও বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তি এ ফোরামে অংশ নেন। ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও তার ভাষণে বলেন, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি এখনো এ বছরের গোড়ার দিকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে এবং ইতোমধ্যে প্রশমনের মধ্যে ক্রমে স্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ওয়েন আরো বলেন, চীনের অর্থনিতি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দ্রুত উন্নতি লাভ করেছে, বিশেষ করে গত দশ বছরে চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন ঐতিহাসিক উল্লম্ফন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি বলেন,
গত দশ বছরে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে এবং ওঠানামার মাত্রা অপেক্ষাকৃত কম। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের পর চীন সার্বিকভাবে এক প্যাকেজ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ নীতির কল্যাণে চীন সর্বপ্রথমে তার অর্থনীতিকে ভালোর দিকে নিয়ে গেছে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এ বছরের প্রথম দিক থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জটিল পরিবর্তন ঘটেছে। ফলে চীনের অর্থনীতিও বহু অসুবিধার মুখে পড়েছে এবং চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে। এ সম্পর্কে ওয়েন চিয়া পাও বলেন, এর মোকাবিলার জন্য চীন সরকার তার সামষ্টিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার ও সুসংহত করেছে, ইতিবাচক আর্থিক নীতি ও স্থিতিশীল মুদ্রা নীতি অনুসরণ করেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে স্থিতিশীল রাখাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এসব নীতির সুবাদে চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল ও অপেক্ষাকৃত দ্রুত উন্নতি হয়েছে।
এ বছরের চীন সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কিত রিপোর্ট অনুসারে ২০১২ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এটি আগের বছরগুলোর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০.৫ শতাংশ কম। ওয়েন চিয়া পাও বলেন, চীন যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দিয়েছে, তার লক্ষ্য হচ্ছে চীনের অর্থনৈতিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পদ্ধতির পরিবর্তনের জন্য হিতকর করা। চীন এ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা চরিতার্থ করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন,
সংস্কার ও উন্মুক্ততার নীতি এখনো চীনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের একটি চালিকা শক্তি। এটি একটি উজ্জ্বল পথ। আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং একটুও পিছ পা হবো না। আমাদেরকে প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং জনসাধারণের জীবনযাত্রার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
ওয়েন চিয়া পাও তার ভাষণে আরো বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট ইতোমধ্যে পঞ্চম বছরে প্রবেশ করেছে এবং অর্থনীতির ওপর তার প্রতিকূল প্রভাব প্রকট হয়ে ওঠছে। তিনি বলেন, বিশ্বের প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক গোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের উচিত ব্যাপকভাবে তাদের অভিন্ন মিল খুঁজে বের করা এবং ইতিবাচক ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন দেশের সম্মুখীন নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করা। ওয়েন চিয়া পাও বলেন,
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির সমন্বয়ের কাজ জোরদার করতে হবে, বাণিজ্যিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণবাদের বিরোধিতা করতে হবে এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের অবাধকরণ ও সুবিধাকরণের মান উন্নত করতে হবে, যাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার বাস্তবায়ন করা যায়। আশা করি, বিভিন্ন দেশের শিল্পপতিরা তাদের প্রযুক্তিবিদ্যাগত উদ্ভাবনের কাজ জোরদার করবে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |