|
দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর সদস্য দেশগুলো অর্থাত্ বাংলাদেশ পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ভুটান কোনো আর্থিক সঙ্কটে পড়লে এ ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিতে পারবে। কোনো দেশের নিজ মুদ্রা অথবা নিজ মুদ্রার রাষ্ট্রীয় বন্ডের বিপরীতে মার্কিন ডলার, ইউরো বা ভারতীয় রুপিতে এ ঋণ দেওয়া হবে।
সার্ক সদস্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক রেটিংস এবং দু'মাসের রপ্তানি ব্যয়ের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে কোন দেশ এ ব্যবস্থা থেকে কত ঋণ নিতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সীমা ১০০ মিলিয়ন ডলার আর সর্বোচ্চ ৪০০ মিলিয়ন ডলার। নির্ধারিত ঋণ কোনো সদস্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার, ইউরো বা ভারতীয় রুপিতে কয়েক কিস্তিতে গ্রহণ করতে পারবে। এ ঋণের সুদের হার ২০০ ভিত্তি পয়েন্ট বা বার্ষিক ২ শতাংশ। অর্থ ফেরত দেওয়ার মেয়াদ সেটি গ্রহণ দিন থেকে তিন মাস। তবে প্রথম মেয়াদ শেষে দরকার পড়লে গ্রহণকারী ব্যাংক তা আরো দুই মেয়াদের জন্য ব্যবহার করতে পারবে। এর মধ্যে প্রথম অতিরিক্ত মেয়াদে অর্থ ব্যবহারের জন্য সুদ দিতে হবে স্বাভাবিক হারে। তবে দ্বিতীয় অতিরিক্ত মেয়াদে সুদের হার হবে স্বাভাবিকের সঙ্গে আরো ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বা ০.৫ শতাংশ বেশি।
ঋণ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে এবং সে চুক্তি ভারত সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
ডলারের দর বৃদ্ধি এবং তারল্য সঙ্কটের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সোয়াপ ব্যবস্থার আওতায় ঋণ লেনদেনের ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি আলোচনায় আসে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। জানুয়ারিতে ঢাকায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের পঞ্চম সম্মেলন শেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শিগগির সোয়াপ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। অর্থমন্ত্রীদের ওই বৈঠকের বৈশ্বিক আর্থিক সংকট বিষয়ক আরেকটি মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে এ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় এবং সে মোতাবেক ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সোয়াপ ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব অনুমোদন করে।
মন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠকে বল হয়, "অঞ্চলের বর্তমান উদ্বেগের একট বড় কারণ হলো ঋণের সুযোগ সীমিত হওয়া এবং আর্থিক বাজার সংকুচিত হয়ে পড়। সেকারণে স্বল্পমেয়াদি তারল্য সংকট দূর করতে এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার সম্পূরক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অঞ্চলে একটি ব্যবস্থা চালু করা দরকার।"
অঞ্চলের আর্থিক খাতের কর্মকর্তারা আশা করছেন, সোয়াপ চালু হওয়ার ফলে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে আর্থিক ও অর্থনৈতিক জোরদার হবে, আন্ত-আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন বেগবান হবে।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |