Web bengali.cri.cn   
আয়বৈষম্য ব্যাহত করতে পারে এশিয়ার প্রবৃদ্ধি
  2012-04-26 14:46:17  cri
আগামী দুই থেকে পাঁচ মে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর বার্ষিক সভা। অনেক বিষয়ের মধ্যে এবারের সভায় যেটা সবচেয়ে গুরুত্ব পেতে যাচ্ছে, সেটি হলো এশিয়ার আয়বৈষম্য। এডিবির সদরদপ্তরে অনুষ্ঠেয় এ বার্ষিক সভায় ৬৭ সদস্যদেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নররা আয়বৈষম্য ঘুচানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। আঞ্চলিক এ ব্যাংকের মতে, এশিয়ায় সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আয়বৈষম্যও। এ বৈষম্য দূর করা না গেলে তা সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিকে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকেই এ অঞ্চলের সরকারগুলোকে আয়বৈষম্য রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এডিবি। ব্যাংকের বার্ষিক সভাকে সামনে রেখে সোমবার সংস্থার প্রধান রজত নাগ বলেন, এ সমস্যার সমাধান করা না গেলে তা জনমনে অসন্তুষ্টি ছড়িয়ে দিতে পারে। আর বিক্ষুব্ধ জনগণকে তুষ্ট রাখতে সরকারগুলোকে একপর্যায়ে জ্বালানি ভর্তুকি বা বাজারে নগদ টাকা ছাড়ার মতো জনপ্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আর তার ফলে দেশ দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার দিকে যেতে পারে। তিনি বলেন, নীতি নির্ধারকরা যদি এখনই এ সমস্যা মোকাবিলার উদ্যোগ না নেন, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিপক্ষে চাপ বাড়বে। কারণ রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন ছাড় দেওয়ার চাপ ইতোমধ্যে গুরুতর হয়েছে। তবে অনতিবিলম্বে যদি এসব বিষয় মোকাবিলা করা যায়, তাহলে এ চাপ সামলানো সম্ভব হবে। নাগের মতে, এশিয়ার দেশগুলোতে যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ভাল, তবুও ক্রমবর্ধমান আয়বৈষম্য দারিদ্র দূরীকরণ তথা প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর আগে চলতি মাসে প্রকাশিত এডিবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে আয়বৈষম্যের ওপর বেশ জোর দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, এশিয়ায় সম্পদ বৃদ্ধি সমাজে বৈষম্য ও আয় ব্যবধান বাড়াচ্ছে। এতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্রে নিপতিত হচ্ছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২০ বছরে এশিয়ার দেশগুলোয় আয়বৈষম্য ০.৩৩ পয়েন্ট থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ০.৪৬ পয়েন্টে। এডিবির ভাষ্য হলো যদি আয়বৈষম্য না বেড়ে ১৯৯০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একই অবস্থায় থাকত, তাহলে অঞ্চলের ২৪০ মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র থেকে মুক্ত করা সম্ভব হতো। এশিয়ার উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচালিত এ ব্যাংকের মতে, আয়বৈষম্য কমানোর প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে জ্বালানি ও অর্থ হস্তান্তর কার্যক্রমের ওপরসহ সব ধরনের সাধারণ ভর্তুকি কমানো। ভর্তুকি থেকে বাঁচানো অর্থ জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মানব মূলধন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যয় করা যেতে পারে। এডিবির ভাষ্য হলো সরকারগুলোর উচিত উত্তম লক্ষ্যবিশিষ্ট সামাজিক ব্যয় ও সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প গ্রহণ করা। নাগ বলেন, “আপনাদেরকে সামাজিক খাতে আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে; আপনাদেরকে দেখতে হবে ভর্তুকি যেন বিস্তৃত না হয়; আপনাদেরকে দেখতে হবে করজাল যেন আরও প্রসারিত হয়।” আয়বৈষম্য কমানোর লক্ষ্যে এডিবির আসন্ন সভায় কী কী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়, তবে সমস্যাটি যে গুরুতর হয়ে উঠেছে তা এর প্রতিবেদন ও প্রধানের উদ্বেগ থেকে স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে। এ উদ্বেগের গুরুত্ব অনুধাবন করে অঞ্চলের অর্থনীতি খাতের নেতারা যত তাড়াতাড়ি কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং সেগুলো যত তাড়াতাড়ি কার্যকর করা সম্ভব হবে ততই মঙ্গল। (এসআর)
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040