|
সার্বভৌম ঋণে জর্জরিত গ্রিসের পুনরুদ্ধারে দ্বিতীয় কিস্তির আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন অভিন্ন মুদ্রা ব্যবহারকারী - ইউরো অঞ্চলের অর্থমন্ত্রীরা। দেশটির জন্য দ্বিতীয় কিস্তির ১৩০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ সহায়তার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় ২০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। ওই ঋণ অর্থ পেতে বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার বেঁধে দেওয়া শর্ত পূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিপুল আকারের এই সহায়তা পরিকল্পনার পাশাপাশি অঞ্চলের সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত দেশটি যাতে আবারও দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে না পৌঁছায় সেজন্য করণীয় ঠিক করা হয় বৈঠকে। যথাসময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল থেকে অর্থ না পেলে গ্রিস দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে - এমন আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে এ বৈঠক করা হয়, যদিও ঋণের শর্ত গ্রিস পুরোপুরিভাবে মেনে না নেওয়ায় গত বৈঠকটি বাতিল করে দেয় ইউরো অঞ্চলের নেতারা।
গত দুই বছর ধরে সমস্যায় জর্জরিত গ্রিসকে বাঁচাতে গত ছয় মাস ধরে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এর কারণ ঋণের শর্ত নিয়ে দু পক্ষের মধ্যকার ব্যবধান। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রিস সরকার ও সহায়তাকারীদের মধ্যে সম্পাদিক চুক্তি দেশটির সংসদে অনুমোদন, নতুন করে ৩৪৫ মিলিয়ন ইউরোর সরকারি ব্যয় সংকোচন এবং সংস্কারের ব্যাপারে কোয়ালিশন সরকারের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি প্রদান। ঋণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার প্রভাব পড়ছে গোটা ইউরো জুড়ে। এজন্য গত কয়েক মাস ধরে সঙ্কট থেকে উদ্ধার নতুবা দেশটিকে ইউরোজোন থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি জোরালো হয়েছে। বাড়তি অর্থ সহায়তা পেতে দেশটির কোয়ালিশন সরকার স্থানীয় জনগণ ও ইউনিয়নের বিরোধিতা এবং বিক্ষোভ সত্ত্বেও দাতা সংস্থাগুলোর সংস্কার ও কঠোর কৃচ্ছ তা সাধনের শর্ত মানতে রাজি হয়েছে।
সরকারের এ সম্মতির প্রেক্ষাপটে ইউরো অঞ্চল ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, চরম অবস্থায় নিপতিত হওয়া থেকে গ্রিসকে রক্ষার সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ফ্রাঙ্কুইজ বেরন ইউরোপের রেডিও ওয়ানকে বলেন, গ্রিসকে ঋণ সঙ্কট থেকে মুক্ত করতে আমাদের সব ধরনের সুযোগই রয়েছে। একজন অর্থমন্ত্রী হিসেবে বৈঠকে এসব যুক্তিই আমি তুলে ধরি। আমেরিকার অর্থমন্ত্রী টিমোথি গেইথনার জানান, তার দেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে অনুরোধ করেছে গ্রিস বিষয়ে সর্বাত্মক সহায়তা করার। তবে এটি নিশ্চিত নয় আইএমএফ কতটা সহায়তা করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিতীয় কিস্তির আর্থিক সহায়তা দিতে ইউরো অঞ্চলের অর্থমন্ত্রীরা সম্মত হওয়ায় বিপর্যয় থেকে আপাতত রক্ষা পাচ্ছে গ্রিস। কারণ বিশ মার্চের মধ্যে ১৪.৫ বিলিয়ন ইউরো ঋণ পরিশোধ করার বাধ্যবাধকতা ছিল গ্রিসের। ইউরো অঞ্চলের দেশগুলো প্রতিশ্রুত অর্থ না দিলে এই ঋণ পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়তো গ্রিসের জন্য।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |