Web bengali.cri.cn   
বিশ্বব্যাপী এবার খাদ্যপণ্যের দাম কমবে
  2012-02-09 15:19:27  cri

বেশ ক' বছর ধরে খাদ্যপণ্য বৃদ্ধি ছিল বিশ্বব্যাপী এক বড় উত্কণ্ঠার বিষয়। কিন্তু এবার পরিস্থিতি বদলাবে; খাদ্যপণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমবে। এমন অনুমান বিশ্বব্যাংকের। আন্তর্জাতিক এ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বলছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার পাশাপাশি বাজারে সরবরাহ বাড়ায় খাদ্যপণ্যের দামের এ হ্রাস ঘটবে। তবে পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক এই বলে সতর্ক করে দিয়েছে যে, তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় দাম আবারও বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক জানায়, অর্থনৈতিক মন্দায় ভোক্তাচাহিদা কমে আসবে ২০১২ সালে। এর পাশাপাশি ভারত, চীন, অস্ট্রেলিয়া ও আর্জেন্টাসহ বেশ কয়েকটি দেশে খাদ্যপণ্যের উত্পাদন বাড়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এবছর বছর খাদ্য সরবরাহ বাড়তে পারে। এ দুটি কারণে খাদ্যপণ্যের দাম কমার খুব সম্ভাবনা রয়েছে।

বিগত ২০০৯ সালে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের পর থেকে বিশ্বব্যাংক খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জোরদার করে। সেবারের ওই খাদ্য সংকটে সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় পড়েছিল খাদ্য আমদানিকারী দেশগুলো। ওই সংকট বিশ্ববাসীকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কৃষিখাতে বিনিয়োগ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ছিল।

বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ উপাত্ত অনুযায়ী, গত বছর খাদ্যপণ্যের দাম তার আগের বছরের চেয়ে গড়ে ২৪ শতাংশ বেড়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তকে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল বেশ উঁচু, যদিও পরবর্তী ৫ মাস ধরে তা কমতে থাকে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে দাম ৮ শতাংশ পড়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীর প্রধান ওতাভিয়ানো কানুতো বলেন, খাদ্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সময় হয়তো শেষ হয়ে গেছে, তবে এখনো সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। পাশাপাশি একথাও তিনি বলেন যে, অনেক দেশে এখনো নির্দিষ্ট কয়েকটি খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি অবস্থায় রয়েছে। এতে কয়েক কোটি মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত ঝুঁকিতে অবস্থান করছে। পরিস্থিতির সঙ্গে যাতে মানুষ খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান কানুতো।

বিশ্বব্যাংকের হিসেবে দেখা যায়, ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত উগান্ডায় চালের দাম বৃদ্ধি পায় ৮৬ শতাংশ। ওই সময় বেলারুসে গমের মূল্য বাড়ে ৮৮ শতাংশ। অন্যদিকে কেনিয়ায় ভুট্টার দাম ১১৭ শতাংশ এবং মেক্সিকোয় ১০৬ শতাংশ।

তবে দাম কমার পূর্বাভাস করলেও, বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে দিয়ে জানায়, তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোয় রাজনৈতিক অস্থিরতা লেগে থাকায় তেলের দাম আরো বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে খাদ্যের দামের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সম্প্রতি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরান থেকে যদি তেল রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে অপরিশোধিত তেলের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

এ ছাড়া জৈব জ্বালানি তৈরিতে খাদ্যশস্য ব্যবহারও বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্বব্যাংকের আশংকা। পাশাপাশি আবহাওয়ার পরিবর্তনও খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে লা নিনার প্রভাবে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভুট্টা ও সয়াবিন উত্পাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040