|
চীনের গণ ব্যাংক থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি উপাত্তে জানা গেছে, ২০১১ সাল নাগাদ চীনের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৩১৮১১ দশমিক ৪৮ ট্রিলিয়ান মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা ২০১১ সালের প্রথম ন'মাসের তুলনায় ২ হাজার ৬০ কোটি মার্কিন ডলার কম।
সম্প্রতি চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি খবরে বলা হয়েছে, ২০১১ সাল নাগাদ চীনের গ্রামাঞ্চলে মোট ২০ কোটি গার্হস্থ্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিক্রি করা হয়েছে। বিক্রির পরিমাণ ৫ কোটি ইউয়ান বাস্তবায়িত হয়েছে। উল্লেখ্য ২০১০ সালের শেষ দিকে গ্রামাঞ্চলে গার্হস্থ্য বৈদ্যুতিক সামগ্রীর বিক্রি উত্সাহ দেয়ার জন্য সরকার ভতুর্কি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১১ সালে এ ক্ষেত্রে চীন সরকার প্রায় ৬০ লাখ ইউয়ানের ভতুর্কি দিয়েছে।
পেইচিং শহরের বাণিজ্য কমিটি সম্প্রতি জানিয়েছে, অসম্পূর্ণ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বতর্মানে বিশ্বের ৫'শ সবচেয়ে শক্তিশালী কোম্পানির মধ্যে পেইচিংয়ে ৪১টি রয়েছে। ২০১১ সালে পেইচিং শহরে মোট ৯৮টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। এখন পেইচিং বিশ্বের দ্বিতীয় মহানগরের স্থান পেয়েছে।
এতক্ষণ কয়েকটি সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর শুনলেন।
দু'হাজার আট সালে বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বাজারের পরিবর্তন ও ব্যাংকিং সংকট মোকাবিলার জন্য চীনের সিনসিং চিহুওয়া কোম্পানি লিমিটেড শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সংস্কার চলে আসছে। গত তিন বছরে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সংস্কারে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ব্যাবস্থাপনা কাঠামোর উদ্ভাবনে এই কোম্পানি লিমিটেডের লক্ষ্যনীয় উন্নয়ন হয়েছে।
সিনসিং চিহুয়া কোম্পানি লিমিটেড চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের পুঁজি ও সম্পদ পযর্বেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কমিশনের অধীনে একটি বড় আকারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে হালকা শিল্পের বস্ত্রবয়ন ও সরঞ্জাম নির্মাণসহ কয়েকটি কারখানা আছে। এ সব কারখানায় শতাধিক পন্যদ্রব্য তৈরি করা হয়। যেমন, ইস্পাতজাত সামগ্রী, বস্ত্রজাত পন্যদ্রব্য, চামড়ার জুতা ও রাবারজাত পন্যদ্রব্য ইত্যাদি ।
সিংহুওয়া ঢালাই কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে সিনসিং জিওয়া গোষ্ঠির একটি প্রধান কোম্পানি। এই কোম্পানির মহা ব্যবস্থাপক জান ঠং বোও একটি সাক্ষাত্কারে ব্যাখ্যা করে বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সংস্কার চালু হওয়ার তিন বছরে কোম্পানির মুনাফা বিপুল মাত্রায় বেড়েছে। তিনি বলেন,
তিন বছর আগে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সংস্কার শুরু হয়। গেল তিন বছর আমাদের কোম্পানির ব্যবসার আকার থেকে আয় ও মুনাফা পযর্ন্ত প্রতি বছর ২০ শতাংশেরও বেশি সূচক বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এক বছরে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি বাস্তবায়িত হয়।
সিনসিং ঢালাই কোম্পানি লিমিটেড একটানা সাত বছরে ' চীনের সবচেয়ে সম্ভবনাপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠান ' নির্বাচিত হয়েছে। বতর্মানে এই কোম্পানি লিমিটেড চীনের শেয়ার বাজারের ৫০টি শক্তিশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্যতম। দেশের একমাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান যা একটানা ১৩ বছরে শেয়ার বাজারে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এখন এই কোম্পানি লিমিটেডের ঢালাইজাত পণ্যদ্রব্যের বিক্রি পরিমাণ বিশ্বের প্রথম স্থানে উন্নীত হয়েছে। সিনসিং জিহুয়া কোম্পানি লিমিটেডের বোর্ড চেয়ারম্যান লিও মিন জং এক সাক্ষাত্কারে শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঠামোর উদ্ভাবনে ' নকল বৈধ ব্যক্তির প্রচলন কাঠামো' প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করে বলেন
বতর্মানে 'নকল বৈধ ব্যক্তি ' কোন ইউনিট বা কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন না। প্রতি ওয়ার্কশপ, কারখানার প্রতি গ্রুপের কাছে বাজারের বিভিন্ন চাপ জানানো হয়। তা ছাড়া, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শ্রমিককে বাজারের পরিস্থিতিও জানতে হবে। যার ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজের শক্তির ওপর নির্ভর করে ব্যবসা চালায়। শ্রমিকরা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক হয়ে গেছেন। এটা সিনসিং জিহুয়া কোম্পানি লিমিটেডের প্রথম উদ্ভাবন বলে বলা যায়।
উত্পাদিত পন্যদ্রব্য দ্রুত গতিতে বাজারে বিক্রি করা এই কোম্পানি লিমিটেডের দ্বিতীয় উদ্ভাবন ও ব্যবস্থাপনা কাঠামো। এই কাঠামোর বৈশিষ্ট্য হল বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সম্পদ, পন্যদ্রব্য ও সামগ্রীর সরবরাহ করা হয়। এই সংস্কার চালানোর ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা আগের চাইতে আরও সম্প্রসারিত হয়েছে।
সিনসিং ঢালাই কোম্পানি লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক জান ঠং বোও ব্যাখ্যা করে বলেন, এই কাঠামো চালু হওয়ার ফলে কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবসা সব সময় প্রায় একই রকম চালানো হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
বছরে কোন কোন সময় কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবসা কম বেশী হতে পারে। কিন্তু যখন শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীয় সংস্কার চালু হয় তখন থেকে সারা বছর ব্যবসা প্রায় এক রকম চলতে পারে। যেমন সাধারণত শীতকালে নির্মাণ কাজ কম হয়। ইতোমধ্যে পন্যদ্রব্যের বিক্রির পরিমাণ কমে যায়। এ অবস্থায় দেশের অন্যান্য জায়গা বিশেষ করে দক্ষিণ চীনের বাজারগুলোতে আমাদের কোম্পানি লিমিটেডের পন্যদ্রব্য পাঠানো হয়। সুতরাং শিল্প প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক কার্যকরিতা নিশ্চিত হয়।
গত তিন বছরের উদ্যোগে এ কোম্পানি লিমিটেডের অভ্যন্তরীণ সংস্কারে লক্ষ্যনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। গত তিন বছরে সিনসিং জিহুয়া কোম্পানি লিমিটেডের মুনাফা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ব্যবসার আয় ২০১০ সালের এই সময়ের তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেশী। এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সংস্কারের ফলে অর্থনৈতিক কারিগরি লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। তা ছাড়া , শ্রমিকদের ধারণাও পরিবর্তিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোম্পানি লিমিটেডের বোর্ড চেয়ারম্যান লিও মিন জং ব্যাখ্যা করে বলেন,
অতীতে শ্রমিকরা বেকল নিজেদের কাজ জানতেন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংস্কার চালু হওয়ার পর , তারা কাঁচামালের বাজার ও পন্যদ্রব্য বাজারের পরিস্থিতি জানতে পেরেছেন। তারা কাঁচামাল ও পন্যদ্রব্য বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজেদের উত্পাদন মূল্য ও মুনাফার হিসাব করতে থাকেন।
অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সংস্কার কোম্পানি লিমিটেডের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সামর্থ্য বাড়িয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্যায়নের নির্মাণ কাজ আরও সম্প্রসারিত হয়েছে। কোম্পানি লিমিটেডের বোর্ড চেয়ারম্যান লিও মিন জং ব্যাখ্যা করে বলেন, সাম্প্রতিক দু'বছরে কোম্পানি লিমিটেডের পেটেন্ট অধিকারের সংখ্যা একটানা বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই কোম্পানি লিমটেডের বাক অধিকার বেড়েছে। লিও মিন জং বলেন,
আমাদের কোম্পানি লিমিটেডের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা বিশ্বের আধুনিক মানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বের একই ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের কোম্পানি লিমিটেডের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য কম নয়। আমাদের কোম্পানি নিলিটেডের উত্পাদিত পন্যদ্রব্যের গুণগতমানও সবচেয়ে ভাল। কিন্তু আমাদের উত্পাদনের মূল্য সবচেয়ে নিম্ন। এ কথায় বিশ্ব বাজারে বাক অধিকার বাড়তে চাইলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সংস্কার চালাতে হবে।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |