Web bengali.cri.cn   
শিল্পের কার্বন নির্গমন কমেনি অর্থনৈতিক মন্দায়ও
  2011-12-15 09:14:54  cri

বিশ্বজুড়ে চলমান মন্দায় এ বছর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও শিল্পোত্পাদন কমেছে ব্যাপক মাত্রায়। এতে ব্যাহত হয়েছে প্রবৃদ্ধিও। কিন্তু তা সত্ত্বেও কমেনি বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধিকারী কার্বন গ্যাস নির্গমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বমন্দার মধ্যেও এ বছর শিল্প-কারখানা থেকে কার্বন গ্যাস নির্গমন বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ। গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জলবায়ু সম্মেলনে।

বৈশ্বিক কার্বন প্রকল্প প্রকাশিত বার্ষিক এ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৮-০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটে কার্বন গ্যাস নির্গমন সামান্য কমেছিল বটে, কিন্তু ২০১০ সালে আবার তা ৬ শতাংশ বেড়ে যায় এবং ২০১১ সালেও বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর 'জার্নাল ন্যাচার'-এ প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনেও শিল্প-কারখানার গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের তথ্য উঠে এসেছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, "কার্বন গ্যাস নির্গমন থেকে অর্থনীতিকে বের করে আনার জন্য বৈশ্বিক আর্থিক সংকট একটি ভালো সুযোগ ছিল। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এ সুযোগ কাজে লাগানোর কোনো চেষ্টাই হয়নি।"

ডারবানে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিস্তর আলোচনা করেন; তবে সম্মেলন থেকে তেমন কোনো ফলাফল আসেনি।

গবেষণায় বলা হয়, উন্নত ও উন্নয়শীল বিশ্বের কয়েকটি দেশ কার্বন গ্যাস নির্গমনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং আরো কয়েকটি দেশ কার্বন নির্গমন কমাতে যদিও দীর্ঘমেয়াদে সবুজ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তবে এ নিয়ে তাদের স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার তেমন কোনো কার্যকারিতা দেখা যাচ্ছে না।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে জীবাশ্ম জ্বালানি ও সিমেন্ট উত্পাদন থেকে কার্বন গ্যাস নির্গমন বেড়েছে ৫.৯ শতাংশ। যদিও চলতি বছর সেটা ১.৪ শতাংশ কমেছে। তবে দুই বছরেই কার্বন নির্গমনে এগিয়ে ছিল উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলো। এর মধ্যে ২০১০ সালে ব্রাজিলের কার্বন নির্গমন বাড়ে ১১.৬ শতাংশ, চীনের ১০.৪ শতাংশ, ভারতের ৯.৪ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ৯.২ শতাংশ হারে। এর বাইরে ওই বছর কয়েকটি উন্নত দেশেও কার্বন গ্যাস নির্গমন বাড়ে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ে ৪.১ শতাংশ এবং রাশিয়ায় ৫.৮ শতাংশ।

দু হাজার দশ সালে বিশ্বব্যাপী কার্বন গ্যাস নির্গমন কয়লা থেকে হয়েছে ৪১ শতাংশ, তেল থেকে ৩৪ শতাংশ এবং বাকিটুকু হয়েছে গ্যাস ও সিমেন্ট থেকে। গবেষণা প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, অর্থনৈতিক সংকট শেষে বিশ্ব অর্থনীতি আগের প্রবৃদ্ধিতে ফিরলে গ্যাস নির্গমন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে।

গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের ব্যাপারে ডারবান সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা কোনও আশাব্যাঞ্জক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারলেও, তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনও মতভেদ নেই যে, মানবজাতি যদি বেঁচে থাকতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই নির্গমন কমাতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইক রোপেক যথার্থই বলেছেন, "আমরা যত বেশি বাঁচতে চাই আমাদের তত বেশি কার্বন নির্গমন কমাতে হবে এবং তা দ্রুত করতে হবে।" (সূত্র: রয়টার্স)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040