Web bengali.cri.cn   
' বিশ্ব ব্যাংকিং মহলের নেতাদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নতুন ব্যাংকিং কাঠামোর পুনগঠন নিয়ে আলোচন'
  2011-12-01 09:47:46  cri
এতক্ষণ কয়েকটি সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর শুনলেন। এখন শুনবেন একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম: ' বিশ্ব ব্যাংকিং মহলের নেতাদের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নতুন ব্যাংকিং কাঠামোর পুনগঠন নিয়ে আলোচন'

ইউরোপীয় ঋণ সংকট একটানা ছড়িয়ে পড়া ও এপেক সম্মেলন সদ্য সমাপ্ত হওয়ার পটভূমিতে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিকে কীভাবে চাঙ্গা করে তোলা হয় এবং ঋণ সংকট থেকে রেহাই পাওয়ার পথ কীভাবে অনুসন্ধ্যাণ করা হয় তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যেকার প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বতর্মানে চীনেএর পেইচিংয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ফোরাম ২০১১ বিশ্বব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনে বিশ্বের দেশের ব্যাংকিং , শিক্ষা, বাণিজ্য ও তথ্য মাধ্যমের প্রায় একশো জন বিশেষজ্ঞ বিশ্বের নতুন ব্যাংকিং কাঠামোর পুনগঠন ও নতুন বিধানের প্রণয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা ও মত বিনিময় করেছেন।

সম্মেলন শুরুতে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ফোরামের স্থায়ী উপ মহা পরিচালক চীনের সাবেক গণ ব্যাংকের গর্ভনর ডেই শাং লংএর বেশ কয়েকটি প্রশ্ন সবাইয়ের নিন্তাভাবনা তুলে ধরেন। তিনি তিনি

' ১৯৯৭ সালে যখন থাইল্যান্ডসহ কয়েকটি নবোদিত অর্থনৈতিক গোষ্ঠিতে অর্থনৈতির সংকট ঘটে তখন আমার মনে হয় ২ থেকে ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যায়, কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি বরং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংকটের সৃষ্টি হয়। তারপর ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আরাত্মক ব্যাংকিং সংকট দেখা দেয়। গ্রীসের অর্থনীতির মোটমূল্য ইইউর ২ শতাংশ অধিকার করে। আমি ভাবছিলাম, এই সমস্যা সেই অঞ্চলে নিষ্পত্তি করা যায়। বতর্মানে বিশ্বের বৈদেশিক মূদ্রার সজুদ হল ৮ ট্রিলিয়ানেরও বেশী হয়েছে। আমাদের সন্দেহ এই যে, যখন অর্থনৈতিক সংকটের আবির্ভাব হয় তখন কেন একটি দেশ এ সমস্যা মোকাবিলা করতে পারে না।'

ডেই শাং লং স্মেলনে উপস্থিত সকলকে ইউরোপের বতর্মান ঋণ সংকট বিশেষ করে গ্রীসের ব্যাংকিং সংকটের উত্স ও বিস্তারের দিক নিশ্লেষণ করার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভূক্তি হওয়ার পর বিশ্ব মন্দার পটভূমিতে বতর্মানে অর্থনীতির বৃদ্ধি গতি কী দ্রুততর করা হবে না কী কমানো হবে। এর পাশাপাশি তিনি সম্মেলনে উপস্থিত সকল সদস্যকে বিশ্বের ব্যাংকিং , মূদ্রা ও তদারকি ব্যবস্থায় সংস্কার চালানোর জন্য ভাল প্রস্তাব উত্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ব ব্যাংকিং ফোরামের চেয়ারম্যান ,চীনের দশম গণ কংগ্রেসের ভাইস চেয়ারম্যান জেন সি ওয়ে এবাবর ফোরামেও ভাষণ দেন। তিনি বলেন, এ বছর পযর্ন্ত আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ফোরাম আট বছর পার গেছে। গত আট বছরে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি ও ব্যাংকিংয়ের উঠানামা দেখা দিয়েছে। এ ফোরাম এখন বিশ্বের একটি প্রভাবশীল ফোরামে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং শৃংখলার জরুরী সংস্কার সাধনের পটভূমিতে বিশ্ব ব্যাংকিং ফোরাম বিশ্বজুড়ে রাজনীতি ও ব্যাংকিং মঞ্চের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য মত বিনিময়ের প্ল্যাথর্ফোম প্রদান করেছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার জোরদারের জন্য এই ফোরাম বড় অবদান রেখেছে। তিনি বলেন,

কিছু দিন আগে ফ্রান্সের কানে জি ২০ গোষ্ঠির শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশের নেতাদের মধ্যে অর্থনীতির বৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক মূদ্রা ব্যস্থার সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ব্যাংকিং ক্ষেত্রের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যাপার নিয়ে আলোচনা হয়েছে । বেশ কয়েকটি বিষয়ে তাদের মধ্যে মতৈক্য অর্জিত হয়েছে। বতর্মানে সারা বিশ্ব নতুন পরিবর্তনের মুখে পড়ছে। বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং কাঠামো পুর্নগঠন করা ও নতুন ব্যাংকিং বিধান প্রণয়ন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ সব বাস্তবায়ন করতে চাইলে আমাদের নতুন করে কৌশলগত আলাপ-আলোচনা চালানো উচিত।

জাতিসংঘ মহা সচিব বান কি মং ভিটিওয়ের মাধ্যমে এবার ফোরামের পুরোপুরি স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি ফোরামে অংশ গ্রহণকারীদের সঙ্গে তার ধারণার ভাগাভাগি করেছেন। তিনি বলেন

বিশ্বের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য আমি চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করতে চাই। প্রথমত: ইউরোপীয় ঋণ সংকট মোকাবিলা করায় আমাদের সম্মিলিতভাবে সহযোগিতা চালানো উতিচ। দ্বিতীয়ত: আমাদের জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও জাতিসঙ্গের প্রস্তাব কার্যকর করা উচিত এবং প্রাসঙ্গিক অর্থনীতি গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। তৃতীয়ত: আমাদের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মন্তব্য শুনতে হবে। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সংক্রান্ত আইনবিধি নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। চতুর্থত: আঞ্চলিক গবেষণালয়গুলোর মধ্যে আরও বেশী সহযোগিতা চালাতে হবে।

ফোরামে বিভিন্ন দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকিং মহলের প্রতিনিধিরা চীনের ওপর বিশ্ব মন্দার প্রভাব এবং ব্যাংকিং তদারকি ব্যবস্থাপনার সংস্কারে অর্জিত সাফল্য নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন। চীনের ছিনহুয়া বিশ্ববিদ্যায়ের বিশ্ব অর্থনীতি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক লি ঠাও খুয়ে চীনের বর্তমান মূদ্রা নীতি প্রসঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ করে বলেন,

বতর্মানে চীনের প্রচলিত মূদ্রা নীতি অব্যহত থাকবে। আসলে চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল বৃদ্ধি নিশ্চিত করা বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে অবদান। এ সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। চীনের অর্থনীতি কাঠামোর পুনরুদ্ধার পর্যায়ক্রমে চালাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040