|
প্রতিবেদনটির শিরোনাম: ' চীনের সিনচিয়াংয়ের তৈরী সামগ্রী বিশ্ব বাজারে সমাদৃত' প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা , প্রথম চীন-এশিয়া ও ইউরোপ মেলা সম্প্রতি সিনচিয়াংয়ে শেষ হয়েছে। দেশ বিদেশের প্রায় ৫০ হাজার প্রতিনিধি এ মেলায় অংশ নিয়েছেন। কিন্তু মেলার আগে মনে হয়েছিল মাত্র ২ হাজার প্রতিনিধি মেলায় অংশ নেবেন। এবার মেলায় বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শিত হয়েছে। নি:সন্দেহে এবার মেলার আয়োজক----সিনচিয়াং এই মেলাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটর্ফম হিসেবে গণ্য করেছে। সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জায়গার তৈরী পণ্যদ্রব্য এবারের মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে । সিনচিয়াং এবার মেলার সুযোগ নিয়ে তাদের পণ্যদ্রব্য জনপ্রিয় করে তুলতে চেষ্টা করেছে। মেলায় সিনচিয়াংয়ের সাফল্য লক্ষ্যণীয়। মেলার মাধ্যমে সিনচিয়াংয়ের তৈরী পণ্যদ্রব্য সমাদৃত হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে সিনচিয়াংয়ের তৈরী পণ্যদ্রব্য এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশ করবে। ভবিষ্যতে মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সিনচিয়াংয়ের তৈরী জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। এবার মেলার হাইটেক প্রদর্শনী এলাকায় একটি কোম্পানির তৈরী ইলেকট্রোনিক পণ্যদ্রব্য ব্যবসায়ী ও দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বেশ কয়েকজন কর্মচারী ব্যবসায়ী ও দর্শকদের পণ্যদ্রব্য সম্পর্কে বর্ণনা ও প্রদর্শন করতে ব্যস্ত ছিলেন । হো ছুয়েন ফু একটি বড় কোম্পানির মহা ব্যবস্থাপক। যখন তার সঙ্গে সংবাদদাতার দেখা হয় তখন তিনি পাকিস্তানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে কথাবর্তা বলেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, অল্প কয়েক দিনের মেলায় তিনি ও তার শিল্প প্রতিষ্ঠান অনেক কিছু পেয়েছে। তিনি আবেগের সঙ্গে বললেন,কাজিকস্তানের একজন এজেন্ট ব্যবসায়ী আমাদের সঙ্গে এজেন্ট চুক্তি স্বাক্ষর করতে চান। আমরা ইনিনে অবস্থিত আমাদের একটি শাখা শিল্প প্রতিষ্ঠান বাছাই করেছি। কারণ ইনিন হোয়গুস স্থল বন্দের কাছাকাছি।হোয়গুস স্থল বন্দরের মাধ্যমে আমাদের পণ্যদ্রব্য মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশে যেতে পারে। তার পর আমাদের পণ্যদ্রব্য মধ্য এশিয়ার মাধ্যমে ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রবেশ করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যতে আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের তৈরী পণ্যদ্রব্য মধ্য এশিয়া তথা ইউরোপীয় দেশগুলোর বাজারে সমাদৃত হবে। হো ছুয়েন ফু বলেন, তার কোম্পানি গত বছর শাংহাই বিশ্ব মেলায় অংশ নিয়েছে। তারা অনেক নতুন পণ্যদ্রব্য এবার মেলায় নিয়ে এসেছে । তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের ব্যাপক সমর্থন ছাড়া তাদের উদ্যোগ সফল হতে পারে না।
গত এপ্রিল মাসে এনবেয় অর্থাত ইলি ইলেকট্রোনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি লিমিটেড কোম্পানি সিনচিয়াং ইনিন হাইটেক উদ্যানে প্রবেশ করেছে। স্থানীয় সরকার বিনাপয়সায় তাদের জন্য কারখানা দিয়েছে। যার ফলে অবকাঠামোর জন্য কোম্পানি খুব কম অর্থ ব্যয় করেছে। সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় যন্ত্রপতি আসলে উত্পাদন শুরু হবে। এ প্রসঙ্গে ইনিন সীমান্ত অর্থনীতি ও সহযোগিতা অঞ্চলের উন্নয়ন ও গবেষণালয়ের পরিচালক সু পিং বলেন, দেশ বিদেশের উন্নয়ন ব্যবসায়ীরা যাতে ইনিনে পুঁজিবিনিয়োগ করতে আসে এবং আসার পর স্থায়ীভাবে এখানে থাকে সেই জন্য আমরা এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি সুবিধাজনক নীতি প্রণয়ন করেছি । অবশ্যই চীনের পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন অভিযানে কেন্দ্রীয় সরকারও অনেক সুবিধাজনক নীতি প্রণয়ন করেছে। আমরা এ সব সুবিধাজনক নীতিকে কাজে লাগিয়ে দেশ বিদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনতে চেষ্টা করেছি। এখন অধিক থেকে অধিকতর শিল্প প্রতিষ্ঠান ইনিনে পুঁজিবিনিয়োগ করতে আসছে। সিনচিয়াংয়ের শিনহুয়া সুইচ লিমিটেড কোম্পানি এবার মেলায় অংশ নিয়েছে। এবার মেলায় অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে এই লিমিটেড কোম্পানির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক লি চাও বলেছেন, অতীতে তারা সর্বত্রই বিদেশী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহযোগিতা চালানো ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করতে চেষ্টা করতো। কিন্তু এখন বিদেশী ব্যবসায়ীরা তাদের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে লি চাও বলেন, আমাদের বৈদেশিক রফতানিতে উত্সাহ দেওয়ার জন্য সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ও নীতি প্রণয়ন করেছে। আগে আমাদের পণ্যদ্রব্য কেবল কাজাখস্তানে যেতো , কিন্তু এখন আমাদের কোম্পানির ধারাবাহিক পণ্যদ্রব্য মধ্য এশিয়ার সকল দেশে রফতানি করা হয়। এবার মেলার মাধ্যমে সিনহুয়ালেন সুইচ কয়েকটি বিদেশী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহযোগিতার অভিলাষ-পত্র স্বাক্ষর করেছে। এই কোম্পানি পরিচালক গুও জে মিং বলেন, সিনচিয়াং কর্ম সংক্রান্ত ফোরাম শেষ হওয়ার পর , বিদ্যুত ট্রান্সফর্মার উত্পাদন শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় উন্নয়নের সুযোগ দিয়েছে। তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান সিনচিয়াংয়ের ভিত্তিতে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন, এখন আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যবপকতা সম্প্রসারিত হয়েছে। সুতরাং আমাদের উন্নয়নের কৌশলও আপনাআপনি আধুনিক নির্মান শিল্পের দিকে রুপান্তর করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যত লক্ষ্য হল গোট সিনচিয়াং তথা গোটা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উত্পাদন ও গবেষণা কেন্দ্রের জন্য বিদ্যুত সরবরাহ করা।
প্রথম এশিয়া-ইউরোপ মেলা শেষ হল। কিন্তু সিনচিয়াংয়ের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই মেলার প্রভাব কেবলমাত্র শুরু হলো। এবার মেলা মাত্র পাঁচ দিন ছিল। কিন্তু দেশ বিদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগোলোর সঙ্গে সিনচিয়াংয়ের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পর্ক দীর্ঘকাল থাকবে। এবার মেলায় সিনচিয়াংয়ের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক লাভবান হয়েছে। এবার মেলায় দেশ বিদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভবিষ্যতে দু'পক্ষের সহযোগিতা আরও ঘনিষ্ঠ হবে আশা করা হচ্ছে। সিনচিয়াংয়ের সিইয়ান ফুল শিল্প লিমিটেড কোম্পানির একটি উত্পাদন ওয়ার্কশপে শ্রমিকরা নিজেদের হাতের কাজে ব্যস্ত। জানা গেছে, এবার মেলায় এই শিল্প প্রতিষ্ঠানের উত্পাদিত ১৩ ধরনের পণ্যদ্রব্য প্রদর্শীত হয়েছে। তাদের পণ্যদ্রব্যের গুণগতমান ভাল বলে এবার মেলায় অনেক অর্ডার করা পেয়েছে। তা ছাড়া , তাদের উত্পাদিত পণ্যদ্রব্য মধ্য এশিয়া এমন কি ইউরোপের কয়েকটি দেশে রফতানি করা হবে। এই লিমিটেট কোম্পানির প্রতিক্রিয়া ওয়ার্কশপের ম্যানিজার ইউয়ু ফি বলেন,এবার মেলায় ঐতিহ্যবাহী পণ্যদ্রব্য ছাড়াও আমাদের কোম্পানির অনেক নতুন পণ্যদ্রব্যের অর্ডারের পরিমাণ বেড়েছে। এ সব অর্ডার পুরন করার জন্য আমাদের শ্রমিকরা ওভারটাইম কাজ করছে। জানা গেছে , প্রথম চীন-এশিয়া-ইউরোপ মেলায় মোট ১৭০টি প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্যের বিনিময় মূল্য ৫৫০ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |