|
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিসংখ্যাণ ব্যুরোর ৩০ আগস্ট প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর চীনের আউশ ধানের মোট উত্পাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টন হয়েছে যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ লাখ ৩০ হাজার টন বেশী।
চীন-এশীয় ইউরোপ মেলা ১ সেপ্টেম্বর চীনের সিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী উরুমুছি শহরে শুরু হয়েছে। রাশিয়া, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ফ্রান্স ও ইতালিসহ ৩৩টি দেশ এবং শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা এবং হংকং, ম্যাকাও তাইওয়ান অঞ্চল এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। এবার মেলায় প্রধানত জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণ ও খাদ্য দ্রব্যসহ পণ্যদ্রব্য প্রদর্শিত হয়। মেলা চলাকালে কৃষি সহযোগিতা উন্নয়ন ফোরাম, ব্যাংকিং সহযোগিতা ফোরাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিনিময় সহযোগিতা ফোরাম এবং চীন ও বিদেশের সংস্কৃতি প্রদর্শন সপ্তাহসহ বিভিন্ন তত্পরতার আয়োজন করা হবে।
এতক্ষণ শুনলেন কয়েকটি সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর। এখন শুনবেন একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম: 'ওয়েনযৌ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের বতর্মান অবস্থা'। আজকের অনুষ্ঠানে এ সিরিজ প্রতিবেদনের তৃতীয় অংশ শুনতে পারবেন।
ওয়েনযৌর অর্থনীতিকে 'তৃণমূল অর্থনীতি' বলে গণ্য করা হয়। দীর্ঘকাল ধরে ওয়েনযৌর অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে বিকশিত হয়ে আসছে। এ বছরের শুরু থেকে জটিল সামষ্টিক অর্থনীতির পরিবেশে ও অন্যান্য অসুবিধার কারণে চীনের অর্থনীতির খাতে নানা ধরনের অসুবিধা দেখা দিয়েছে। কিন্তু ওয়েনযৌর মাঝারি ও ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে অসাধারণ জীবনীশক্তি দেখা দিয়েছে। তাহলে ওয়েনযৌর মাঝারি ও ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে অপ্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেয়েছে? এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান কীভাবে উন্নয়ন অর্জন করেছে? এ সব প্রশ্নের জবাব ওয়েনযৌর সবুজ গোষ্ঠির সংবাদদাতা মিও চি হং ও বাও গুও এনের লেখা একটি প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যাবে। এখন শুনুন ' ওয়েনযৌ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের বতর্মান অবস্থা' সম্পর্কীত তৃতীয় অংশ : ' উদ্ভাবন ও রূপান্তরের মাধ্যমে উন্নয়ন অর্জইত হোক' শিরোনামে একটি রিপোট।
সম্প্রতি ওয়েনযৌর মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর তদন্ত চালানোর প্রক্রিয়ায় সংবাদদাতারা জানতে পেরেছেন যে, বৈদেশিক বাণিজ্য বা অভ্যন্তরীণ বিক্রয় যাই হোক না কেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়েনযৌর চশমা, লাইটার ও তালাসহ শ্রমবহুল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো হালকা মূনাফার কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। নিম্ন পারিশ্রমিক ও নিম্ন দামের উত্পাদন সামগ্রীর ওপর অবলম্বন করে মূনাফা অর্জন করার দিন ইতিহাস হয়ে গেছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে ওয়েনযৌর কোন কোন মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব সূপ্ত শক্তিকে অনুসন্ধান করতে হবে। অথবা কোন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের উন্নয়নের জন্য নিজস্ব উত্পাদনের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে।
লাইটার হচ্ছে ওয়েনযৌর চারটি প্রধান শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্যতম। ওয়েনযৌর তৈরী লাইটার সারা পৃথীবির ৭০ শতাংশের বাজার দখল করে আছে। ওয়েনযৌ শহরের ডংফেন লাইটার কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক লি জন জিয়েন বলেছেন, ওয়েনযৌর তৈরী লাইটারের মধ্যে বেশির ভাগ অন্যসব ব্র্যান্ডের। সুতরাং ওয়েনযৌর তৈরী লাইটারের মেধাতত্ত্বের অভাব রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাঁচামাল ও জ্বালানীর দাম অনেক বেড়েছে। যার ফলে ওয়েনযৌর লাইটার পণ্যদ্রব্যের মূনাফা ব্যাপক মাত্রায় সঙ্কুচিত হয়েছে। তিনি মনে করেন, ওয়েনযৌর লাইটার শিল্প প্রতিষ্ঠান বেশী অগ্রগতি অর্জন করতে চাইলে পণ্যদ্রব্যের গুণগতমান উন্নত করা তাদের একমাত্র পথ। এর পাশাপাশি নিজস্ব ব্র্যান্ডের পণ্যদ্রব্য তৈরী করতে হবে। নইলে বিশ্ব বাজারে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে মহাব্যবস্থাপক লি জন জিয়েন বলেন,
এ বছর মুদ্রা সঙ্কুচিত হয়েছে। ওয়েনযৌর মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তা অত্যন্ত কঠিন। বিশেষভাবে শ্রমবহুল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য জ্বলন্ত আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার মতো। কেননা, এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের মূনাফা কম। তাদের পক্ষে ভাল ব্যান্ড সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
জেচিয়াং জুগুয়াং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি লিমিটেড কোম্পানির পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান জু জিয়েন পিং আগে ছিলেন জুতা বানানোর মালিক । ২০০৬ সালে তিনি উপলব্ধি করেছেন যে, জুতা শিল্পের উন্নয়ন করা খুব কঠিন। তিনি লেড ব্র্যান্ডের পণ্যদ্রব্য গবেষণার জন্য ১০ কোটি রেন মিন পি বরাদ্দ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
দীর্ঘকাল ধরে আমার কোম্পানির তৈরী জুতার ব্র্যান্ড লাইলিস। মুনাফা অত্যন্ত কম ছিল। উপরন্তু ওয়েনযৌতে অনেক লোক জুতা শিল্পে নিয়োজিত হয়েছে। এই শিল্প সম্প্রসারণ করা খুব কঠিন। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমি জুগুয়াং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কোম্পানি গঠন করার কথা বিবেচনা করেছি। আমার মনে হয় এ শিল্পের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।
গত কয়েক বছরের কঠোর প্রচেষ্টায় সাফল্য দেখা দিয়েছে। ২০১০ সালে শাংহাই বিশ্বমেলায় জেচিয়াংয়ের জুগুয়াং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি লিমিটেড কোম্পানির তৈরী লেড ব্র্যান্ড বাতি চীনের ভবনে প্রদর্শিত হয়। চেয়ারম্যান জু জিয়েন পিং বলেন,
শাংহাই বিশ্বমেলার চীনা ভবনের দু'তলায় সাজানো বাতি আমাদের কোম্পানির তৈরী। বাতির প্রযুক্তিও আমাদের কোম্পানির নকশা। তা ছাড়া, বিশ্বমেলার উদ্যানের রাস্তার দু'পাশের বাতিও আমাদের কোম্পানির তৈরী।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়েনযৌর অধিক থেকে অধিকতর শিল্প প্রতিষ্ঠান জুগুয়াং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি লিমিটেড কোম্পানির মতো উত্পাদনের পদ্ধতি রূপান্তর করেছে। ওয়েনযৌ শহরের পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের প্রথমার্থে ওয়েনযৌ হাইটেক উত্পাদনের মোটমূল্য ৫ হাজার কোটি রেন মিন পি ছাড়িয়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৩ শতাংশ বেশী হয়েছে।
গত জুন মাস নাগাদ ওয়েনযৌ শহরে মোটামুটি শক্তিশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৯৯৩টি যা গত বছরের চেয়ে ২২৭টি বেশী এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, এ বছর ওয়েনযৌ শহরের বেশির ভাগ মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। ওয়েনযৌর মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন সমিটির চেয়ারম্যান চৌ ডে ওয়েন প্রস্তাব করে বলেছেন,
একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথমে অসুবিধা অতিক্রম করার আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। ওয়েনযৌর এ সব মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার সময় উত্তীর্ণ হয়েছে। এ সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি প্রতিরোধের সামর্থ্য আছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ওয়েনযৌর এ সব মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান অসুবিধা থেকে রেহাই পেতে পারবে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |