Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তদেশীয় শেয়ার লেনদেনের উদ্যোগ
  2011-07-07 19:31:31  cri
দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি শেয়ার বাজার আন্তর্জাতিক মানের বাজারে পরিণত হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি বাজার সেদিকে অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু অঞ্চলের সবগুলো শেয়ার বাজারকে যদি একই সুতোয় গাঁথা সম্ভব হয়, তাহলে সামগ্রিক বাজারটির কী রূপ দাঁড়াবে তা সহজে অনুমান করা যায়।

হ্যাঁ এমনই একটা উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্ক অঞ্চলের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সংগঠন - দক্ষিণ এশীয় ফেডারেশন অব এক্সচেঞ্জেস (এসএএফই)। বলা হচ্ছে, এ উদ্যোগের আওতায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্তদেশীয় শেয়ার লেনদেন চালু হবে এবং অঞ্চলের এক দেশের কম্পানি অন্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হতে পারবে। এতে দেশগুলোর মধ্যে পুঁজির আদান-প্রদান বৃদ্ধির পাশাপাশি শেয়ার বাজারের ব্যাপ্তি বাড়বে, যার কল্যাণে শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য মূলধন সংগ্রহ অনেক সহজ হয়ে যাবে; আরো বেশি লাভবান হবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, এসএএফই অনেক দিন ধরেই এ উদ্যোগটি নিয়ে কথাবার্তা বলে আসলেও সম্প্রতি বেশ বেশ জোরালো ভূমিকা নিয়েছে। ইতোমধ্যে একটি প্রাথমিক অবস্থানপত্র তৈরি করেছে সংস্থাটি। এতে কম্পানির তালিকাভুক্তি ও লেনদেন চালুর ক্ষেত্রে সদস্যদেশগুলোর বিদ্যমান আইনকানুনের সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা এবং সেগুলো দূর করার উপায় তুলে ধরা হয়েছে।

এ অবস্থানপত্রের ভিত্তিতে সদস্যদেশগুলোর সরকার ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করেছে এসএএফই। সাতই জুলাই নেপালের অর্থমন্ত্রী, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠনটির প্রতিনিধি দল। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও বৈঠক করবে এসএএফই।

সংস্থাটি মনে করে, দক্ষিণ এশিয়া আগামী দিনে বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় এক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর পারস্পরিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি অর্থনৈতিক বিকাশকে আরও গতিশীল করবে।

জানা গেছে, আন্তদেশীয় তালিকাভুক্তি ও লেনদেন চালুর জন্য বিস্তারিত কৌশলপত্র প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে এসএএফই। চলতি বছরেই সংস্থাটি আন্তদেশীয় পোর্টফোলিও বিনিয়োগের মডেল নিরূপণ এবং সদস্যদেশগুলোর পুঁজিবাজারের তথ্য নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় তথ্যব্যাংক গড়ে তুলবে। আর আগামী বছরে সদস্যদেশগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য অভিন্ন বিধিমালা এবং আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ও নিকাশের জন্য চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া এ অঞ্চলে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশীয় বিনিয়োগ সম্মেলন নামে একটি বিশেষ বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে এ সংস্থার উদ্যোগে।

বর্তমানে এসএএফইর সদস্যদেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ভুটান ও মরিশাস। এসব দেশের ১৫টি স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমোডিটি এক্সচেঞ্জ এর পূর্ণ সদস্য। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়া, মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ, মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়া, করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ, লাহোর স্টক এক্সচেঞ্জ, পাকিস্তান মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ, নেপাল স্টক এক্সচেঞ্জ, রয়েল সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ অব ভুটান এবং স্টক এক্সচেঞ্জ অব মরিশাস।

ভৌগলিক দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো কাছাকাছি হলেও, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ও কাঠামোর দিক থেকে দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যোজন যোজন ফারাক। সেকারণে এসএএফই যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বাস্তবায়ন খুব সহজ হবে - এমনটা আশা করছে না কেউ-ই। কিন্তু সবার সদিচ্ছা থাকলে উপায় নিশ্চয়ই একটা বের হবে, অন্তত যেখানে রয়েছে অঞ্চলের সব দেশের উপকারিতার একটা নিশ্চয়তা।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040