|
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের নাগরিকদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় এখনো অত্যন্ত নিম্ন হলেও,
দ্রুত অগ্রসরমান চীন ও ভারত এবং তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির ওপর ভর করে এশিয়া এই অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এতে দেখা যায়, গত বছর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিলিয়নিয়ারের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়ে ৩.৩ মিলিয়নে দাঁড়ায়। অন্যদিকে উত্তর আমেরিকায় এ সংখ্যা ৩.৪ মিলিয়ন এবং ইউরোপে ৩.১ মিলিয়ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়ার সম্মিলিত সম্পদ গত বছর ১২ শতাংশ বেড়ে ১০.৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। সম্পদের এ পরিমাণ ইউরোপের চেয়ে বেশি এবং উত্তর আমেরিকার কাছাকাছি। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্মিলিত সম্পদ ৯ শতাংশ বেড়ে ১১.৬ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।
বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেরিল এবং বৈশ্বিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান কেপগিমিনির মতে, এখনো বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মিলিয়নিয়ার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও জার্মানিতে। তবে বর্তমানে সম্পদশালী মানুষের সংখ্যা অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্বজুড়ে মিলিয়নিয়ারদের সম্পদের পরিমাণ ৯.৭ শতাংশ বেড়ে ৪২.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির এ হার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা-পূর্ববর্ত ২০০৭ সালের হারকে অতিক্রম করে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাসা-বাড়ি বাদে যাদের কমপক্ষে ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার মতো অর্থ রয়েছে, তাদের সংখ্যা ৮.৩ শতাংশ বেড়ে ১০.৯ মিলিয়নে পৌঁছায়।
শিল্পোত্পাদন, রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ উত্পাদন থেকে সিঙ্গাপুর, চীনের হংকং ও ভারতের মতো দেশ ও অঞ্চলগুলোয় মিলিয়নিয়ার সংখ্যা বেড়েছে।
মেরিল লিন্স-কেপগিমিনির ভাষ্যের সমর্থন পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসালটিং গ্রুপের সাম্প্রতিক আরেকটি প্রতিবেদন থেকেও।
বোস্টনের বার্ষিক বিশ্ব সম্পদ প্রতিবেদনে অনুযায়ী, এশিয়ার মধ্যপ্রাচ্যে সম্পদশালী পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। সৌদি আরবের নাগরিকদের মধ্যে লাখে ১৮ জন রয়েছেন বিত্তশালী, যাদের বিনিয়োগকৃত সম্পদের বাজার মূল্য রয়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার। এতে বলা হয়, বিশ্বের বিত্তশালী পরিবারের দিক থেকে শীর্ষ দশে শুধু সৌদি আরব নয়, রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরো তিনটি দেশ - কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাজার মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর ও কাতার। এক্ষেত্রে কুয়েত ও আরব আমিরাতের অবস্থান যথাক্রমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ।
বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, জাপান ছাড়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোর জোরালো প্রবৃদ্ধির ফলে বিশ্ব সম্পদ ২০১০ সালে ৮ শতাংশ বেড়ে ১২১.৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।
প্রতিবেদন দুটিতে দেখা যায়, অতিবিত্তশালী, অর্থাত্ যারা ৩০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার বিনিয়োগ করেছেন এমন ব্যক্তিদের সংখ্যাও গত বছর বেড়েছে। তাদের সংখ্যা ১০ শতাংশ বেড়ে এক লাখ তিন হাজারে পৌঁছেছে। তাদের সম্পদ ১১.৫ শতাংশ বেড়ে ১৫ ট্রিলিয়ন হয়েছে।
সম্পদশালীদের সংখ্যা বৃদ্ধির যে হার প্রতিবেদন দুটিতে দেখা গেছে, তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় সম্পদশালী ও বিশ্বের বাকি মানুষগুলোর মধ্যে ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে এবং সম্পদ কেবলই ধনীদের কাছে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। (সূত্র: এবিসি নিউজ, আরব নিউজ)
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |