Web bengali.cri.cn   
পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধি থেকে সরবে না ভারত
  2011-05-26 15:41:02  cri
ভারত সরকার ঘোষণা করেছে, পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সম্প্রতি তারা নিয়েছেন, তা থেকে পিছিয়ে আসবেন না।

অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি চলতি সপ্তাহে এ ঘোষণা দেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, তেল কম্পানিগুলোকে ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকার ইতোমধ্যে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। সেকারণে পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার প্রশ্নই আসে না।

সরকার লিটারপ্রতি ডিজেলে ১৬ রুপি, কেরোসিনে ২৬ রুপি ও পেট্রোলে ১৪ রুপি এবং কেজিপ্রতি এলপিজি সিলিন্ডারে ৩২০ রুপি ভর্তুকি দিচ্ছে।

সরকারের এই ভর্তুকির বোঝা কিছুটা লাঘব করার লক্ষ্যে দেশটির রাষ্ট্রীয়-মালিকানাধীন তেল বাজারজাতকারী কম্পানিগুলো সম্প্রতি পেট্রলের মূল্য লিটারপ্রতি ৫ রুপি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার পর বিভিন্ন মহল থেকে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি ওঠে, এই যুক্তিতে যে এ সিদ্ধান্ত মুদ্রাস্ফীতিকে উস্কে দেবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রণব মুখার্জি সে কথা কবুলও করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য ও তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতির যে চাপ বাড়ছে, তা অর্থনীতির মধ্যমেয়াদি প্রবৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তা সত্ত্বেও পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসা যাবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।

তিনি বলেন, "আজ পর্যন্ত আমরা ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি। এর ফলে মূল্যবৃদ্ধি থেকে পিছিয়ে আসার প্রশ্নই আসে না। কারণ বিপুল ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। গত বছর এই ভর্তুকির পরিমাণ ছিল এক লাখ কোটি রুপি। চলতি বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা আমরা জানি না।"

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের ওপর পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে সরকার।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্য বেড়েই চলেছে। কিন্তু ভারতে সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় করা হয় ২০০৬ সালের জুন মাসে। ওই সময়ে অপরিশোধিত তেলের মূল্য ছিল ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৮৯ ডলার এবং বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭ ডলারে।

এদিকে তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগের কথা ব্যক্ত করেছেন নীতি নির্ধারকদের মধ্যে অনেকে। প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু বলেছেন, তেলের দাম যদি এমন উচ্চ পর্যায়ে থাকে, তাহলে আর্থিক ঘাটতি কমিয়ে আনার সরকারি লক্ষ্য বাস্তবায়িত নাও হতে পারে।

গত ফেব্রুয়ারিতে চলতি বছরের বাজেট পেশ করার সময় প্রণব মুখার্জি আর্থিক ঘাটতি মোট দেশজ উত্পাদন বা জিডিপির ৪.৬ শতাংশের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, সরকারের আশা ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ ঘাটতি ৪.১ শতাংশ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩.৫ শতাংশে নেমে আসবে।

কৌশিক বলেন, "ঘাটতির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০-৯৫ ডলার বিবেচনায় রেখে। কিন্তু এখন তেলের দাম বেড়ে গেলে ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে।"

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি তৈল উত্পাদনকারী দেশে রাজনৈতিক ডামাডোল শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে টালমাটাল অবস্থা শুরু হয়। যদিও তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক সময়ে সময়ে ঘোষণা দিয়ে আসছে যে, আন্তর্জাতিক বাজারে তারা তেলের পর্যাপ্ত যোগান নিরবিচ্ছিন্ন রাখবে, তবে সে সব ঘোষণাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তেলের দাম বেড়েই চলেছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040