Web bengali.cri.cn   
তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের সপ্তম আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক ফোরাম
  2011-05-11 19:57:16  cri
তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের সপ্তম আর্থ-বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক ফোরাম ৮ মে চীনের জেনতুতে সমাপ্ত হয়। চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের চেয়ারম্যান চিয়া ছিং লিন এবার ফোরামে উপস্থিত ছিলেন। ফোরামে ভাষণ দেয়ার সময় চিয়া ছিং লিন বলেন, বতর্মানে অর্থনীতি ক্ষেত্রে তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের সহযোগিতা অত্যন্ত ভাল। তিনি বলেন, এ বছর থেকে চীনের মূল ভূভাগে জাতীয় অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নের দ্বাদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা কার্যকর হবে। দুই তীরের পারষ্পরিক সহযোগিতার ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চিয়া ছিং লিং জোর দিয়ে বলেন, তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের স্বদেশীয়দের এই শান্তিমূলক উন্নয়নের সুযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা উচিত।

জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহা সাগরীয় আর্থ-সামাজিক সংস্থার ৫ই মে প্রকাশিত এক রিপোটে অনুমান করা হয়েছে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহা সাগরীয় অঞ্চলে চীন এখনও সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি সত্তা। চলতি বছর চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হার ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। রিপোটে বলা হয়, ২০১০ সালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহা সাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি অপেক্ষাকৃতভাবে দ্রুত গতিতে বিকশিত হয়েছে।

এক খবরে জানা গেছে, চীনের ম্যানচোলি শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ম্যাচোলি শহরের স্থল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির পরিমাণ ৮৯ কোটি মার্কিন ডলার পৌছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ ম্যানচোলি স্থল বন্দর প্রধানত বে সরকারি মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরী জিনিসপত্র রফতানি করা হয়। আমদানিকৃত সামগ্রী প্রধানত সম্পদভিত্তিক বাণিজ্য।

সম্প্রতি চীনের শুল্ক অধিদফতর প্রকাশিত এক রিপোটে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে চীনের বাণিজ্যে ১১৪৩ কোটি মার্কিন ডলারের অনুকুল উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। ইইউ , যুক্তরাষ্ট্র , আসিয়ান ও জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশও অঞ্চলের সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্যে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে।

প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর শুনলেন। এখন শুনুন একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম: ' কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্প চীনের অর্থনীতি চাঙ্গায় গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হবে' । সম্প্রতি 'কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্প প্রতিষ্ঠা ও বিকশিত করা' একটি স্বাধীন অধ্যায় হিসেবে চীনের জাতীয় অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নের দ্বাদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের চিন্তাধারায় গভীরভাবে পরিবর্তন ঘটেছে। কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্প চীনের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলার গুরুত্বপূর্ণ শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

গত পাঁচ বছরে চীনের বার্ষিক গড়পড়তা জি ডি পির প্রবৃদ্ধি হার ১১ দশমিক ২ শতাংশে পৌছেছে। কিন্তু এই সাফল্যের বিনিময় হয়েছে অতিরিক্ত জ্বালানী ব্যয় ও বিপুল পরিমাণের বিষাক্ত গ্যাসের নি:সরণ । চীনের জাতীয় তথ্য কেন্দ্রের অর্থনীতির ভবিষ্যদ্বাণী বিভাগের গবেষক জু বাও লিয়ান বলেন, বতর্মানে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি প্রধানত মাধ্যমিক উত্পাদন শিল্পের ওপর নির্ভর করে থাকে। তবে মাধ্যমিক উত্পাদন শিল্পে ইস্পাত ও লোহা, নির্মান এবং রাসায়ন শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,

ভবিষ্যতে চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন জ্বালানী, পরিবেশ , শ্রম শক্তির মূল্য একটানা বৃদ্ধির চাপের সম্মুখীন। এগুলো চাপ থেকে বোঝা যায় যে, আমাদের উত্পাদন শিল্প কাঠামোয় পরিবর্তন আনা উচিত।

এ ধরনের পটভূমিতে ' দ্বাদশ পাঁচশালা পরিকল্পনা কর্মসূচীতে সাতটি বড় কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্প নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচীতে নির্ধারণ করা হয়েছে যে, আগামী পাঁচ বছরে নতুন প্রজম্মের তথ্য প্রযুক্তি, জ্বালানী সাশ্রয় ও পরিবেশ সংরক্ষণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানীসহ উত্পাদন শিল্পের ওপর বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের উপ মহা পরিচালক জান শিও ছাং ব্যাখ্যা করে বরেন,

কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্প হচ্ছে নবোদিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নবোদিত উত্পাদন শিল্পের মিলন। এই উত্পাদন শিল্প বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উত্পাদন শিল্প উন্নয়নের দিকস্থিতির প্রতিনিধিত্ব করে। কৌশলগত দিক থেকে এই উত্পাদন শিল্পে উন্নয়নের সুপ্ত শক্তি রয়েছে। ভবিষ্যতে আর্থ-সমাজিক উন্নয়নে এ ধরনের উত্পাদন শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রবর্তী শিল্পে পরিণত হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৫ সাল নাগাদ জি ডি পির অনুপাতে চীনের কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি হার ৮ শতাংশের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, ২০১৫ সালে কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্পের প্রবৃদ্ধি হার প্রায় ৪ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ান ডলার হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অথএব বতর্মানে চীনের নবোদিত উত্পাদন শিল্পের উন্নয়ন কয়েকটি কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হবে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে এ ক্ষেত্রে অনেক ব্যবধান রয়েছে। চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের শহরাঞ্চল উন্নয়ন কেন্দ্রের গবেষক ইয়াংয়ু মনে করেন, এ সময় সরকারের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,

উল্লেখিত সাতটি নবোদিত উত্পাদন শিল্পে সাহায্য করার জন্য সরকারের উপযোগী নীতি একান্ত প্রয়োজন। এ সব উত্পাদন শিল্পের সম্মুখীন সমস্যার সমাধান করার জন্য সরকারের যথাসাধ্য নীতি প্রণয়ন করা উচিত। যাতে এ সব নবোদিত উত্পাদন শিল্প সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হয়।

আসলে এ সব নবোদিত উত্পাদন শিল্পের উন্নয়ন উত্সাহ দেয়ার জন্য কর আদায়, তহবিল গড়ে উঠার ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেয়া হয়েছে। প্রধান প্রধান উত্পাদনের উদ্ভাবন প্রকল্পগুলোর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রাসঙ্গিক নীতি প্রণয়ন করবে। সম্প্রতি চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে , ভবিষ্যতে চীনের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সবুজ অর্থনীতি, নিম্ন কার্বান ব্যবহৃত অর্থনীতি , পরিবেশ সংরক্ষণ প্রযুক্তি , জীবাণু ও ওষুধসহ নবোদিত উত্পাদন শিল্প সম্পর্কিত বিষয় শিক্ষাদান করা হবে। অদূর ভবিষ্যতে কৌশলগত নবোদিত শিল্প ক্ষেত্রে আরও বেশী দক্ষ ব্যক্তিদের তৈরী করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ সব পদক্ষেপ চীনের কৌশলগত নবোদিত উত্পাদন শিল্পের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। তা ছাড়া তারা মনে করেন, চীনের এ সব উত্পাদন শিল্প উন্নত করার জন্য আর্থিক, প্রযুক্তি , ব্যবস্থাপনা ও অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040