Web bengali.cri.cn   
জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য প্রবৃদ্ধি কমাতে পারে
  2011-03-31 16:15:20  cri
উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ায় গত বছরের শেষ দিকে যে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়, তা পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে ওই অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কটি দেশে, যেখান থেকে বিশ্বের জ্বালানি তেলের চাহিদার বড় অংশের যোগান দেওয়া হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতায় তেলের উত্পাদন মারাত্মকভাবে ব্যহত হয় দেশগুলোতে। আর অবসম্ভাবীভাবে তার প্রভাব পড়ে বিশ্ববাজারের তেলের যোগানে ও মূল্যে। তিউনিশিয়ার আন্দোলনের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক তেলের এ মূল্যবৃদ্ধি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে উন্নত অর্থনৈতিক দেশগুলোর সংস্থা - অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ওইসিডি-কে। সংস্থার এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে, জ্বালানি তেলে সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি ২০১২ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত অর্থনৈতিক দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।

অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও মুদ্রাস্ফীতির ওপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব শীর্ষক ওই সমীক্ষায় বলা হয়, "জ্বালানি তেলের সাম্প্রতিক সময়ের উচ্চমূল্য স্বল্পমেয়াদে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।... এ উচ্চমূল্য অব্যাহত থাকলে ২০১২ সালের মধ্যে ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় অর্ধেক কমে যেতে পারে।" ওইসিডি'র আশঙ্কা একই কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতির হার ০.৭৫ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।

গত নভেম্বরে প্রকাশিত ওইসিডির আগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, এ সংস্থাভুক্ত ৩৪টি দেশে চলতি বছর গড়ে ২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং আগামী বছর ২ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে।

ওইসিডির আশঙ্কাকে আরো চাঙ্গা করে দিয়েছে তেল উত্পাদনকারী দেশগুলোর সংস্থা ওপেক-এর সাম্প্রতিক এক বিবৃতি। বিবৃতিতে ওপেক-এর প্রধান ও ইরানের তেলমন্ত্রী মাসউদ মিরকাজেমি বলেছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে ওপেক দেশগুলো তাদের জ্বালানি তেলের উত্পাদন বাড়াবে না। যোগান নিয়ে উত্কণ্ঠায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ইতোমধ্যে ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেলেও ওপেক মনে করছে, তেলের সরবরাহ এখনো পর্যাপ্ত। মিরকাজেমি বলেন, আর সেকারণে ওপেক তেলের উত্পাদন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে না।

বিবৃতিতে উত্তর আফ্রিকা ও পারস্য উপসাগরের কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক সংকট ছাড়াও বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া তেলের চাহিদা বৃদ্ধিকেও সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়।

অবশ্য জ্বালানি তেল নিয়ে মন্দ খবরের মধ্য একটি ভালো খবরও আছে। লিবিয়ায় প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি-বিরোধী বিদ্রোহীরা ঘোষণা দিয়েছে রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া লিবিয়ার তেল ক্ষেত্রগুলোতে আবার উত্পাদন শুরু করবে তারা। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, বন্ধ হয়ে যাওয়া তেল ক্ষেত্রগুলো থেকে জ্বালানি তেল উত্পাদন ও রপ্তানি অব্যাহত রাখার বিষয়ে কাতারের সঙ্গে তাদের একটি চুক্তিতে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, লিবিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার আগে প্রতিদিন গড়ে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্পাদিত হতো। তবে গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে উত্পাদন কমে দৈনিক এক লাখ ব্যারেলের কাছাকাছি নেমে আসে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040