Web bengali.cri.cn   
চীনের অর্থনীতির প্রত্যাশা সম্পর্কিত ফোরাম ২০১১
  2011-01-20 21:17:00  cri
প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ শিয়াবু রাহমানের কাছ থেকে বিশ্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদ ও প্রতিবদেন শুনলেন। এখন শুনুন চীনের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির সংবাদ ও একটি প্রতিবেদন। প্রথমে শুনবেন কয়েকটি সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর। পরিবেশন করছি আমি আপনাদের বন্ধু ---- ' চীনের অর্থনীতির প্রত্যাশা সম্পর্কিত ফোরাম ২০১১ ' ১৫ জানুযারি পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফোরামে অংশ গ্রহণকারীরা ২০১১ সালে চীনের অর্থনীতি রূপান্তরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইয়াংচিন প্রবাসি চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট হুয়াসেন বলেন, শহরায়নের পটভূমিতে কেন্দ্রীয় রূপান্তর হচ্ছে শহরায়নের রূপান্তর । শহরায়নের রূপান্তরে ভূমি ও বাড়ীঘরের সমস্যা বিরাজ করছে। সুতরাং ভূমি নীতি ও বাড়িঘরের দাম নিয়ন্ত্রণ করাটা অর্থনীতি রূপান্তরের সম্মুখীন কঠোর পরীক্ষা। ফোরামে চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইয়াং বলেন, চীনের অর্থনীতির রূপান্তর সম্পাদিত হলে উদ্ভাবনের ভিত্তিতে অর্থনীতির কাঠামো সম্পূর্ণভাবে সংস্কার ও উন্নয়ন করতে হবে, সেবামূলক শিল্প ব্যাপকভাবে উন্নয়ন করতে হবে এবং বিশেষভাবে ব্যাংকিং শিল্প উন্নয়ন করতে হবে। ফোরামে অংশ গ্রহণকারীরারা মনে করেন, বর্তমানে চীনের অর্থনীতি রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। সুতরাং অর্থনীতি উন্নয়নের পদ্ধতি রূপান্তরের গতি দ্রুততর করা ভবিষ্যতে চীনের অর্থনীতির একটি সবচেয়ে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রী জেন ডে মিং ১৪ জানুয়ারি পেইচিংয়ে বলেছেন, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে চীনের সংকল্প দৃঢ়। চীন বৈদেশিক ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরাদার করতে ইচ্ছুক। ১৪ জানুয়ারি পেইচিংয়ে আয়োজিত বিদেশী ব্যবসায়ীদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ সংক্রান্ত ফোরামে বাণিজ্য মন্ত্রী জেন ডে মিং এ কথা বলেন। ফোরামে পি আ্যন্ড জি, এইজ পি, সিমেন্স, সোনি, মাইক্রোসফটসহ বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি ও চীনে বিদেশের বাণিজ্য ক্যাম্পাসের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা চীনের বাণিজ্য, রাষ্ট্রীয় শুল্ক প্রশাসন , শিল্প ও বাণিজ্যের গুণগতমান পরীক্ষাসহ কয়েকটি বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে মত বিনিময় করেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রী জেন ডে মিং ব্যাখ্যা করে বলেন, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের ব্যাপারে চীন সরকার অব্যহতভাবে বিদেশী ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করবে। তা ছাড়া মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিদেশী ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্বেগ সঠিকভাবে মোকাবিলা করা উচিত। চীন আশা করে, বিদেশী ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চীনকে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে নিজ নিজ দেশের অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করবে। বিদেশী ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা বলেছেন, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে চীন অত্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তারা বলেন, এ ক্ষেত্রে চীন অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। চীনের সিছুয়ান প্রদেশের বাণিজ্য বিভাগ ১৩ জানুয়ারি জানিয়েছে, সিছুয়ান প্রদেশে বিশ্বের ৫০০টি শক্তিশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬০টি তাদের শাখা প্রতিষ্ঠা করেছে। জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে সিছুয়ান প্রদেশে বিদেশী ব্যবসায়ীদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত পুঁজিবিনিয়োগের ১৫৯০ কোটি মার্কিন ডলার গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল থেকে জানা গেছে, ১২তম পাঁচশালা পরিকল্পনা চলাকালে তিব্বতে ১৮টি দারিদ্র্য বিমোচনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হবে। কৃষি ও পশুপালন শিল্প উন্নয়নে মোট ৯০০ কোটি রেন মিন পি বরাদ্দ করা হবে। চীনের বাণিজ্য উপমন্ত্রী জেন জিয়েন ১২ জানুয়ারি পেইচিংয়ে বলেন, চীন ব্যাপকভাবে বৈদেশিক ঠিকাদার প্রকল্প উন্নয়ন করবে। বিদেশে চীনের প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য সংশ্লিষ্ট নীতি সম্পূর্ণ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়নে উত্সাহ দিতে হবে। এতক্ষণ কয়েকটি সংক্ষিপ্ত অর্থনীতির খবর শুনলেন। এখন একটি প্রতিবেদন শুনবেন। প্রতিবেদনটির শিরোনাম: ' দুলর্ভ মাটির জন্য আত্মরক্ষার লড়াই' গেল ২০১০ সালে দুর্লভ মাটির নাম বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বতর্মানে সারা বিশ্বে উদ্ধারকৃত দশ কোটি টনের মজুতের মধ্যে ৩৬ শতাংশ চীনে । কিন্তু কয়েক বছর আগে চীনে এই মাটির মজুতের পরিমাণ বিশ্বের শতকরা ৫০ ভাগ ছিল। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ কমে গেছে। দীর্ঘকাল ধরে বিশ্বের ৯০ শতাংশ বাজারে চীন থেকে আমদানিকৃত মাটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সোনার মতো মূল্যবান এই দুলর্ভ মাটি সাধারণ মাটির দামে বিক্রি করা হয়। অনেক হাইটেক উত্পাদন শিল্পে দুলর্ভ মাটি একটি অপরিহার্য কাঁচামাল । সামরিক ক্ষেত্রে, ধাতু ও রাসায়ন, নতুন সামাগ্রীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই মাটিকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হয়। দুলর্ভ মাটিকে 'শিল্পের ভিটামিন' বলে গণ্য করা হয়। জনমত অনুযায়ী, বিংশ শতাব্দীতে তেল যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল একবিংশ শতাব্দীতে দুলর্ভ মাটি তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং দুলর্ভ মাটিকে একবিংশ শতাব্দীর স্বর্ণ বলে গণ্য করা হয়। বতর্মানের উত্পদান গতি চলতে থাকলে আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুলর্ভ মাটি শেষ হয়ে যাবে। একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্ব বাজারে দুলর্ভ মাটি নিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলতে থাকবে। দুর্লভ মাটির জন্য চীনের আত্মরক্ষা লড়াই শুরু হয়েছে। সম্প্রতি জার্মানি সফরকালে চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী লি খে ছিয়াং জার্মানির অর্থমন্ত্রীর উপস্থাপিত দুলর্ভ মাটির রফতানি নীতি পরিবর্তনের প্রস্তাব নাকচ করেছেন। সত্যি কথা এই যে, চীনের আইন অনুযায়ী প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য দুর্লভ মাটি খননের গতি কমিয়ে দিতে হবে, নইলে চারপাশের পরিবেশ দূষিত হবে। দুষণ থেকে পরিবেশকে বাঁচানোর লক্ষ্যে চীন সরকার দুর্লভ মাটি উন্নয়ন ও উত্পাদনে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু পাশ্চাত্য দেশগুলো এ ক্ষেত্রে চীনের ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি করেছে। চীন এই চাপের প্রতি নতি স্বীকার করবে না । সম্প্রতি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের যৌথ চাপের মুখে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও শিল্প ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বলেছেন, সম্পদের খনন নিয়ন্ত্রণ করা চীনের স্বাবর্ভৌম ব্যাপার। কোন দেশ এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এতক্ষণ একটি প্রতিবেদন শুনলেন। শোনার জন্য ধন্যবাদ।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040