|
বিশ্বের দরিদ্র জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ ভাগই এশিয়ায় বাস করে এবং এখানকার জনসংখ্যা অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা মেটাতে চালের উত্পাদন বাড়ানো দরকার এবং তা করতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
এ দুটি সংস্থা মনে করে: "এশিয়ায় শুধু যে চাল উৎপাদনে ঝুঁকি রয়ে গেছে তা নয়, বরং চাল বিক্রি ও ব্যবসায়ও ঝুঁকি আছে। এ ঝুঁকি কমানোর একটি উপায় হলো অঞ্চলে, বিশেষ করে এখানকার বৃহত্ দেশগুলোতে, চালের মজুদ বাড়ানো।"
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ার দেশগুলোতে চালের মজুদের জন্য বিশাল বিশাল সংরক্ষণাগার বানানো এই মুহূর্তে বেশ ব্যয়বহুল। তাই চাল মজুদ করার বিদ্যমান পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে চালের দামে স্থিতিশীলতা আনতে হবে।
এশিয়ার কেন্দ্রস্থল সিঙ্গাপুরকেন্দ্রিক আঞ্চলিক চালের বাজার তৈরি করতে অঞ্চলের দেশগুলোর সরকারকে পরামর্শ দিয়ে এতে বলা হয়েছে, "ভবিষ্যত কেনাবেচার একটি বৃহত্ বাজার সাধারণ পরিস্থিতিতে চালের মূল্যে স্বচ্ছতা এবং বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে অবদান রাখবে।"
প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, এশিয়ার অধিবাসীদের প্রধান খাদ্য চালের পেছনেই এ মহাদেশের মানুষের অর্ধেক ব্যয় হয়। প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ খাদ্যস্বল্পতায় ভোগে। যাদের দৈনিক আয় ১ দশমিক ২৫ ডলারের চেয়ে কম, বাজার তাদের কাছে সবসময়ই ব্যয়সাধ্য। এতে বলা হয়েছে, এশিয়ার দরিদ্র জনগোষ্ঠী, যাদের বেশিরভাগেরই উদ্বৃত্ত চাল উৎপাদনের জমি নেই, চালের বাজারের অস্থিতিশীলতার কাছে তারাই সবচেয়ে বেশি নাজুক।
গত তিন দশকে কৃষি খাতে সবচেয়ে কম গুরুত্ব দেওয়ার ফলে কৃষিপণ্যের দামে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সম্প্রতি এরকম হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর পরই এশিয়া সোসাইটি ও ইরির এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হল। জাতিসংঘের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষিখাতে প্রতিবছর যে ৮ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করা হচ্ছে ২০৫০ সাল নাগাদ ক্ষুধা ও দারিদ্র দূর করার জন্য তার ওপর প্রতিবছর আরো ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে।
ইরির হিসাব অনুযায়ী, চাল উৎপাদনে বার্ষিক ১২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা গেলে এশিয়ায় ২০১০ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে সাড়ে ৮ শতাংশ হারে উৎপাদন বৃদ্ধি সম্ভব। এতে অঞ্চলের দারিদ্র্য ১৫ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্য উত্পাদনের হার বাড়াতে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি অঞ্চলের সরকারগুলোর উচিত্ খাদ্য সংকটের কাছে সবচেয়ে নাজুক মানুষদের জন্য নিরাপত্তা জাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যার মধ্য অন্তর্ভূক্ত থাকবে শর্তসাপেক্ষে দরিদ্রদেরকে অর্থের যোগান দেওয়া।
ক্ষুধা দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রণালীবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণে একটা আঞ্চলিক খাদ্য নিরাপত্তা সমন্বয় কেন্দ্র গড়ে তোলার তাগিদও দেওয়া হয় প্রতিবেদনে। (এএফপি/রহমান)
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |