|
এই পরিকল্পনা আওতায় আগামী এক দশকে দেশটিতে ৩৩ লাখ লোকের জন্য উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো মালয়েশিয়া যাতে মধ্যম আয়ের আবর্তে আটকে না থাকে এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য সেটাই। প্রাথমিকভাবে আগামী এক দশকে বছরপ্রতি ৬ শতাংশ হারে জাতীয় আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয়েছে। সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে, এই হিসেবে ২০২০ সালে মালয়েশিয়ার মোট জাতীয় আয় দাঁড়াবে পাঁচ হাজার ২৩০ কোটি ডলার। গত বছর এর পরিমাণ ছিল এক হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।
এ পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ১৩৩টি প্রকল্প, যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য চার হাজার ৪৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। অবশ্য এ বিনিয়োগের ৯২ শতাংশ আসবে ব্যক্তি খাত থেকে। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরকে অর্থনৈতিকভাবে আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাও এ পরিকল্পনার একটি অংশ।
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান দেশটির মন্ত্রীপরিষদের সদস্য ইদ্রিস জালা বলেছেন, "সময় নষ্ট করার সুযোগ মালয়েশিয়ার নেই। আমাদের দরকার পরিপূর্ণ বৈপ্লবিক পরিবর্তন। পুরনো অর্থনৈতিক ধারা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।" তিনি আরো বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক গতিতে চলতে থাকলে মালয়েশিয়ার মধ্যম আয়ের দেশের আবর্তে আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইদ্রিস জানান, এ পরিকল্পনায় উচ্চ আয়ের ৩৩ লাখ কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়ার কারণ হল দীর্ঘদিন ধরে বেতনের পরিমাণ স্থির রয়েছে।
এরকম উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নেওয়ার বেশ কটি রেকর্ড রয়েছে মালয়েশিয়ার। অতীতে এসব পরিকল্পনার বেশির ভাগ বাস্তবায়ন পর্যায়ে গিয়ে থমকে গেলেও এবার এমনটা হওয়ার আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে ইদ্রিস জোর দিয়ে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাত এখন রূপান্তর কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যেই ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে তেল, গ্যাস, জ্বালানি ও আর্থিক সেবাসহ বেশ কিছু খাত।
সমালোচকরা অবশ্য বলছেন, রূপান্তর কর্মসূচি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি মুসলিম নীতিমালার আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি সুবিধা পেতে পারে এই চিন্তায় শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকারীরা এ পরিকল্পনায় বিনিয়োগে নিরুত্সাহিত হতে পারেন। ইদ্রিস অবশ্য কথা দিয়েছেন, এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং সবকিছুতেই স্বচ্ছতা থাকবে।
পরিকল্পিত অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকার ইদ্রিস জালার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে। এর আগে দেশটির বিমান সংস্থাকে দেউলিয়া অবস্থা থেকে রক্ষা করে লাভজনক অবস্থানে ফিরিয়ে আনার দৃষ্টান্ত তিনিই স্থাপন করেন। তবে সর্বশেষ এ উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইদ্রিস কতটা দক্ষতা দেখাতে পারবেন এবং এ থেকে কতটা আসবে বিষয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও বেশ কিছু সময়।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |