|
চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র সঙ্গে সম্প্রতি পেইচিং সফরকালে জার্মানীর চ্যান্সেলর এ্যান্জেলা মার্কেল বৈঠক করেছেন।
দু'পক্ষই মনে করে, চীন ও জার্মানীর সম্পর্ক আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, যাতে বিশ্বের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যায়। দু'পক্ষ বৈঠকে চীন ও জার্মানীর কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক সার্বিকভাবে ত্বরান্বিত করা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্যে পৌঁছেছে। এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য নতুন কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছে। বৈঠক শেষে দু'দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক বহু দলিলে স্বাক্ষর করেছে। উভয় পক্ষই প্রকাশ করেছে যে, তারা জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিবেশ সুরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করবে। আজকের চীনের অর্থনীতি অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে কিছু কথা বলবো।(১)
স্বাক্ষর অনুষ্ঠান এখন শুরু , আজ দশটি দলিলে স্বাক্ষর হবে।
১৬ জুলাই দুপুর চীন ও জার্মানীর প্রধানমন্ত্রী ও চ্যান্সেলর বৈঠক শেষে এ দশটি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক দলিল স্বাক্ষরের কাজ যৌথভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ দশটি দলিলে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে যে, অর্থনীতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা, ইলেকট্রনিকস, গাড়ি ও সংস্কৃতি। ইতোমধ্যেই দু'পক্ষের গড়ে তোলার জ্বালানি সম্পদ ও পরিবেশের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিবেশ সুরক্ষা এবং নতুন জ্বালানি সম্পদ ও সবুজ অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদারের জন্য কল্যাণকর। জনমত সাধারণত মনে করে, এবার চীন ও জার্মানীর সহযোগিতা নতুন পর্যায়ে পরিণত করবে।
আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক চীন ও জার্মানীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে সর্বজনবিদিত প্রতিরূপ। দু'দেশ তাদের নিজস্ব এলাকার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। ২০০৯ সালে আর্থিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাবে চীন ও জার্মানীর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ যদিও ১০৫.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। তবুও এ পরিমান চীন ও ইউরোপের মধ্যকার বাণিজ্যের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক উন্নয়নের প্রবণতা খুবই স্পষ্ট। এ লক্ষ্যে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন, (২)
আমরা আশা করি, জার্মানী চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানো, খাতের কাঠামো সুবিন্যাস দ্রুততর করা এবং আঞ্চলিক সমন্বিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার কৌশলগত সুযোগ কাজে লাগাবে, চীনের উচ্চ প্রযুক্তি ও তৈরি খাতের ওপর পুঁজি বিনিয়োগ জোরদার করবে এবং পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়নে আরো বেশি অংশ নেবে। চীন সরকার আরো উন্মুক্ত ও সুবিধাজনক বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়াস চালাবে।
এ্যন্জেলা মার্কেল জার্মানীর চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবার পর এবার হলো তার চতুর্থ বারের মত চীন সফর। মার্কেল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট সম্মুখীন হওয়ার সময়ে চীন ও জার্মানীর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নতুন পরিস্থিতিতে উন্নত দেশ ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ইতিবাচক সহযোগিতার দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, (৩)
চীন বিশ্বের আর্থিক সংকট চমত্কারভাবে মোচনের চেষ্টা করেছে। এর পাশাপাশি জার্মানীসহ বিশ্বের অন্যান্য রপ্তানি কারক দেশের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যাতে তাদের সঙ্গে সংকট মোচনে এক যোগে কাজ করা যায়।
ওয়েন চিয়া পাও বলেন, চীন ও জার্মানীর সম্পর্ক আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। দু'দেশের পারস্পরিক সমঝোতা ও আস্থা গভীর করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। এটি দু'পক্ষের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা সার্বিকভাবে ত্বরান্বিত করার ভিত্তি স্থাপন করেছে।
চীন ও ইউরোপের সম্পর্ক প্রসঙ্গে ওয়েন চিয়া পাও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের পুরোপুরি বাজার অর্থনীতির অবস্থার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জার্মানী তাকে ইতিবাচকভাবে সমর্থন দিয়েছে। চীনও তার প্রশংসা করেছে। জার্মানী চীন ও ইউরোপের সম্পর্ক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে যে আরো ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ ভূমিকা পালন করবে, চীন তাকে স্বাগত জানিয়েছে।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |