Web bengali.cri.cn   
তৈরি পোশাকের নতুন বাজারের সন্ধানে বাংলাদেশ
  2010-07-08 20:19:32  cri

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের জন্য নতুন বাজারের খোঁজে নেমেছেন দেশটির সরকার ও উদ্যোক্তারা। প্রাথমিকভাবে নিউজিল্যান্ড, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, হংকং, তুরস্ক, জাপান ও ভারতের বাজারকেও লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেছেন তারা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের বাজার পরিস্থিতি যাচাইয়ের জন্য তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিনিধিদল পাঠানো হচ্ছে দেশগুলোতে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি বিদ্যমান বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

স্থানীয় একটি সংবাদপত্রকে বিজিএমইএ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, "শিগগরিই নিউজিল্যান্ড, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও জাপানে পাঁচটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হচ্ছে। বিশ্বকাপ শেষ হলেই একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে। এসব দেশে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।"

উদ্যোক্তারা মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সির চাহিদার কারণে সেখানে বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ল্যাটিন আমেরিকা মেক্সিকো, চিলি ও ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। কিন্তু দেশগুলোতে বাংলাদেশের দূতাবাস বা কনসুলেট না থাকায় ক্রেতাদের বাংলাদেশের ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে। এসব দেশে দূতাবাস ও কনসুলেট স্থাপনসহ সরকারের কূটনৈতিক তত্পরতা চালানো জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে "তৈরি পোশাক বাণিজ্য উন্নয়ন" শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। জার্মানি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জার্মান কারিগরি সহায়তা বা জিটিজেডের আর্থিক সহায়তায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

"তৈরি পোশাক বাণিজ্য উন্নয়ন" প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো জাপান, হংকং ও অস্ট্রেলিয়ার বিদ্যমান বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান আরো শক্তিশালী করা এবং ব্রাজিল, চিলি ও দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনাময় নতুন বাজার তৈরি করা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বা ইপিবি'র তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ায় ৪৯ কোটি, নিউজিল্যান্ডে ৪ কোটি, ভারতে ১১ কোটি, জাপানে সাড়ে ৭ কোটি, দক্ষিণ আফ্রিকায় সোয়া ৪ কোটি, তুরস্কে ২৪ কোটি ও ব্রাজিলে ৫ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করে। বাংলাদেশ সরকার ও রপ্তানিকারকরা মনে করেন, এ দেশগুলোতে আরো বিপুল পরিমাণ পোশাক রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের তিন-চতুর্থাংশই আসে তৈরি পোশাক থেকে। রপ্তানি আয় ছাড়াও এ খাত অন্য যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছে তাহলো কর্মসংস্থান। প্রায় ৩০ লাখ লোকের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এ খাত। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর অতিমাত্রায় এ খাতের নির্ভরশীলতাকে অনেক দিন ধরেই নিরুত্সাহিত করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এ ধরণের নির্ভরশীলতা এ খাতের ভবিষ্যত্ প্রবৃদ্ধিকেই কেবল ব্যহত করবে না; বরং এ খাতকে ঝুঁকির মধ্যেও ফেলে দিতে পারে। তাঁরা অপ্রচলিত বাজার খুঁজে বের করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

সরকার ও বিজিএমইয়ের প্রত্যাশা মতো এ নতুন বাজারগুলো যদি বাংলাদেশ খুঁজে বের করতে পারে তাহলে এ খাতের প্রবৃদ্ধির হারই শুধু বাড়বে না; বরং এর ভিত্তিও মজবুত হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040