|
আগামী নভেম্বরে এ্যাপেকের ২১ সদস্যের অংশগ্রহণে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠেয় সংস্থার পূর্ণাঙ্গ সম্মেলনের আলোচ্যসূচীও নির্ধারিত হয় এ সম্মেলনে। স্বাগতিক জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী মাসাইউকু নাওশিমা জানান, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় পূর্ণাঙ্গ সম্মেলনে অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
নাওশিমা বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।"
এপেকের সদস্য দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই, কানাডা, চিলি, চীন, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউ গিনি, পেরু, ফিলিপাইনস, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম। বিশ্বের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকই উত্পাদিত হয় এই দেশগুলোতে।
সম্মেলন শেষে বাণিজ্য মন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নে তারা প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। ষোল বছর আগে ইন্দোনেশিয়ার বোগরে দেশগুলোর মধ্যে প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নে তারা অনেকখানি এগিয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ২০১০ সালের মধ্যে অ্যাপেক জোটের শীর্ষ অর্থনৈতিক দেশগুলোর মধ্যে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে, এ ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি।
গোটা অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য চালু করার সম্ভাব্য উপায় সম্বলিত একটি কর্মপরিকল্পনা চলতি বছর নভেম্বরের মধ্যে চুড়ান্ত করার ব্যাপারে একমত হন এ্যাপেক নেতারা। তাঁরা জানান, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আগামী ২০২০ সাল নাগাদ মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে।
অ্যাপেকের এ সম্মেলনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডাব্লিউটিও'র প্রধান প্যাসকেল ল্যামিও যোগ দেন। অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চালু ব্যাপারে সংস্থাটির কার্যক্রম অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে তিনি বলেন, "অ্যাপেকের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক দেশগুলোকে মুক্ত বাণিজ্যের আওতায় আনা গেলে প্রকৃত অর্থেই বিশ্ব অর্থনীতি অনেক লাভবান হবে।"
তবে নেতাদের এই আশাবাদের পাশাপাশি রয়েছে কিছু নেতিবাচক বাস্তবতা। এ জোটের মধ্যে যেমন রয়েছে উন্নত দেশ, তেমনি রয়েছে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ এবং দরিদ্র দেশও। উন্নয়নশীল দেশগুলো চায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সহযোগিতা সংস্থা আসিয়ানের ভিত্তিতে একটি মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে; অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ আটটি দেশ চায় বাধ্যবাধকতামূলক একটি আলাদা চুক্তির ভিত্তিতে এটি চালু করতে।
সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো যে মুক্ত বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী তাতে কারোরই কোন সন্দেহ নেই। এখন তাদের দরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেদের মধ্যকার মতভেদটুকু দূর করা। সেটা করা গেলে এ ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে আর কোন বাধাই থাকবে না।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |