Web bengali.cri.cn   
ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত হচ্ছে আফ্রিকার অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের প্রধান চালিকা শক্তি
  2010-05-13 20:16:19  cri

তিন দিনব্যাপী আফ্রিকার ২০তম বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম সংক্রান্ত সম্মেলন সম্প্রতি ত্যান্জানিয়ার রাজধানী দারুসসালামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের ৮৫টি দেশের প্রায় এক হাজার অংশগ্রহণকারী আফ্রিকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, আফ্রিকার উন্নয়নের সুপ্ত শক্তিকে পুরোপুরি কাজে লাগানো এবং আফ্রিকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ওপর চীনের ভূমিকাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন। আমাদের সংবাদদাতা এবারের ফোরামে যোগ দেয়া চীনের সামাজিক একাডেমীর আফ্রিকা বিষয়ক গবেষণা বিভাগের পরিচালক হো ওয়েন পিং-এর সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। আজকের চীনের অর্থনীতি অনুষ্ঠানে সে বিষয়টিই আপনাদের জানাবো।

প্রথমে হো ওয়েন পিং আফ্রিকার অর্থনীতি উন্নয়নের ত্রিশ বছরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।

তিনি বলেন,

গত শতাব্দীর ৮০'র দশকে আফ্রিকা ছিল একটি অনুন্নত মহাদেশ । আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অর্থনীতি বৃদ্ধির হারের তুলনায় বেশি ছিল। ৯০ দশকের মধ্যবর্তী পর্যায় থেকে আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন শুরু হয়। এরপর আফ্রিকার অর্থনীতি আর হ্রাস পায় নি। দশ বছর ধরে আফ্রিকার অর্থনীতি বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ বজায় রয়েছে। এ সংখ্যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তুলনায় ২ শতাংশ কম। বিশ্বের আর্থিক সংকটের পর ২০০৮ সালে আফ্রিকার অর্থনীতির অগ্রগতি কিছুটা কমে যায়, তবে তা শিগগিরই পুনরুদ্ধার হয়েছে।

হো ওয়েন পিং বলেন, বিশ্বের আর্থিক সংকটের পর আইসল্যান্ড ও গ্রীসসহ উন্নত দেশগুলোয় পুরোপুরি এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে আফ্রিকার অর্থনীতি স্বল্প-মেয়াদীতেই পুনরুদ্ধার হয়েছে। এমনকি চলতি বছর আফ্রিকার অর্থনীতি উন্নয়নের হার আর্থিক সংকটের আগের মান ছাড়িয়ে গেছে। এটি আফ্রিকার বাণিজ্যিক বাজার উন্মুক্তকরণের অঞ্চল এবং পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যসহ নতুন বাজারে আফ্রিকার পণ্য রপ্তানির প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করার সঙ্গে সম্পর্কিত।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক পাস্কাল লামি এ ফোরামে আফ্রিকার দেশগুলোর সরকারকে ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বেশি সহায়তা প্রদান ও ব্যক্তি মালিকানাধীন অর্থনীতি উন্নত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি আফ্রিকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও তাত্পর্যবহ।

হো ওয়েন পিং বলেন,

ব্যক্তি মালিকানাধীন অর্থনীতি আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় আরো বেশি ভূমিকা পালন করছে। আগে আফ্রিকার দেশগুলো সমাজতন্ত্র চর্চা করেছিলো। তখন আফ্রিকার বেশির ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ছিল রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। তবে স্নায়ু যুদ্ধ শেষে আফ্রিকার দেশগুলো রাজনীতিতে বহুদলীয় ব্যবস্থা নিয়েছে, অর্থনীতির কাঠামো সুবিন্যস্ত ও সংস্কার করেছে। সুতরাং, বর্তমানে আফ্রিকায় রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান নেই। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান দ্রুত উন্নত হয়েছে। যদিও এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান বড় নয়, তবে তারা আফ্রিকার অর্থনীতি উন্নয়নের স্তম্ভ শিল্পে পরিণত হয়েছে। এসব শিল্প বর্তমানে কেবল সরকারের সমর্থন পেতে চায় তা নয়, বরং নতুন বাজারেও তাদের গুরুত্ব তুলে ধরতে চায়। এ ফোরামের কয়েকজন অংশগ্রহণকারী বলেছেন, চীন আফ্রিকা - চীন উন্নয়ন বিষয়ক তহবিল গড়ে তুলেছে। এ তহবিল গড়ে উঠার বেসরকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক সাহায্য দিতে পারবে।

আফ্রিকার দেশগুলো আর্থিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে সাহায্য চীনের দেয়া প্রসঙ্গে হো ওয়েন পিং বলেন,

চীন আফ্রিকার প্রতি আর্থিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে বেশি অবদান রেখেছে। চীন-আফ্রিকা বাণিজ্যিক বিনিময়ের মাধ্যমে আফ্রিকার অর্থনীতি বৃদ্ধির ওপর অবদানের হার ২৫ শতাংশ। আর্থিক সাহায্য ক্ষেত্রে বর্তমানে চীন ও কিছু উপসাগরীয় দেশ আফ্রিকায় অবকাঠামো ব্যবস্থা নির্মাণের ক্ষেত্রে দেয়া অর্থ বিশ্ব ব্যাংকসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থার দেয়া অর্থের তুলনায় বেশি ছিল। অবকাঠামো ব্যবস্থা নির্মাণের কাজ আফ্রিকার অর্থনীতি উন্নয়নের দিকটিকে ত্বরান্বিত করেছে। চীনের পণ্যের মান ভাল ও দাম সস্তা, এটিও স্থানীয় নাগরিকদের ভোক্তার মানকে উন্নত করেছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040