|
আগামী ২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার হবে ১ লাখ ৩০/৩২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে। সেদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৪ এপ্রিল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এ কথা জানান।
তিনি জানান, আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি'র আয়তন হবে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি আর মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপি'র লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হলো এক লাখ ১৩ হাজার ৮শ' ১৯ কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ৩০ হাজার ৫শ' কোটি টাকা। অবশ্য পরে তা সংশোধন করে ২৮ হাজার ৫শ' কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
মন্ত্রী জানান, গ্যাস ও বিদ্যুত্ খাত, বাস্তবায়নের দক্ষতা এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই বাজেট প্রণীত হবে।
সাংবাদিকেরা গ্যাস ও বিদ্যুত্ খাতকে প্রাধান্য দেওয়া, যানজট কমানো, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জেলা বাজেট বাস্তবায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে বিনিয়োগে রূপান্তর, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব-ভিত্তিক কর্মসূচী বাস্তবায়ন, রেলপথকে গুরুত্ব দেয়া, কৃষকদের জন্য শস্যবীমা চালু করা, কর দেওয়ার পদ্ধতি সহজীকরণ এবং সরকারি বিভিন্ন ভবনে আরও সৌরবিদ্যুত্ চালুর পরামর্শ দেন।
মন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিমুখী শিল্প খাতগুলোর জন্য প্রণোদনার অর্থ ছাড় প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এটি ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা যেটা চান সেটা হয়তো হয়নি, তবে অর্থ ছাড় হয়েছে।'
বিশ্ব অর্থনীতির নতুন চালিকা শক্তি মেনাসা
মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়া (মেনাসা) বিশ্ব অর্থনীতির নতুন চালিকা শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। আর এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাজারে এদের প্রভাবও বেড়ে চলেছে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স সেন্টার (ডিআইএফসি)-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ নাসের সাঈদ একথা বলেছেন।
৫ এপ্রিল দুবাইয়ে মেনেসা ফোরামের উদ্বোধন উপলক্ষে তিনি বলেন, "গত ১৫ বছরে, বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে, এশিয়া ও অন্যান্য উদীয়মান বাজারের দিকে বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্র পরিবর্তিত হয়েছে।"
বিশ্বের মোট উত্পাদনে এশিয়ার অবদান হলো ৪০ শতাংশ, এ কথা জানিয়ে সাঈদ বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক খাতেও এ অঞ্চলের ভূমিকা দিন দিন বাড়ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মেনেসা অঞ্চলের জনসংখ্যা শিগগির বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছবে এবং এবছর এখানকার মোট দেশীয় উত্পাদন বা জিডিপি হবে ৪.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে বিশ্বের মোট জিডিপিতে এ অঞ্চলের অবদান ৭.৬ শতাংশ। (গালফ্ নিউজ)
অবকাঠামো খাতে আরো বিনিয়োগে ভারতকে মার্কিন অর্থমন্ত্রীর পরামর্শ
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী তিমোথি গেইথনার ৬ এপ্রিল দু'দিনের ভারত সফরে যান। দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতিগুলোর একটি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কোন্নয়নে ওবামা প্রশাসনের প্রচেষ্টারই অংশ এ সফর। সফরকালে গেইথনার বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক অর্থনৈতিক সহযোগিতা কার্যক্রম চালু করেছে, যার মাধ্যমে উভয় দেশই ব্যাপকভাবে লাভবান হবে।
তিনি বলেন, ভারতের ভবিষ্যত উন্নতি বহুলাংশে নির্ভর করবে গণঅবকাঠামো খাত, বিশেষ করে বিমান বন্দর, রেল, সড়ক যোগাযোগ ইত্যাদিতে দেশটির বিনিয়োগের ওপর।
জবাবে ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী দেশটির দ্রুত অগ্রসরমান এ খাতে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোকে আহবান জানান। তিনি জানান, ভারত প্রতি বছর ৪ হাজার ৪শ' মাইল মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। (ওয়াশিংটন পোস্ট)
বিশ্ব বাণিজ্যে মন্দা কাটতে শুরু করেছে
ক্রমেই কেটে যাচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্যের মন্দা। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডাব্লিউটিও আশা করছে ২০১০ সাল নাগাদ বিশ্ব বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি হবে আগের বছরের তুলনায় ৯.৫ শতাংশ। ডাব্লিউটিও মহাসচিব প্যাসকেল লেমি সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছেন, বাণিজ্য বৃদ্ধি বিশ্বমন্দা কাটিয়ে উঠার এক বিরাট সূচক। তিনি দ্রুত সম্প্রসারণশীল পণ্যের বাজার উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য সকল দেশের প্রতি আহবান জানান।
ডাব্লিউটিও অবশ্য এর আগে আশা করেছিল ২০০৯ সালে বিশ্ব বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি হবে ১০ শতাংশ, যদিও বছর শেষে দেখা যায় বাণিজ্য তো বাড়েই নি বরং আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ওই বছর এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের বাণিজ্যই হ্রাস পেয়েছিল। সেসময় বিশ্বের সামগ্রীক উত্পাদন কমেছিল ২.৩ শতাংশ।
ডাব্লিউটিও প্রতিবেদনে দেখা যায়, সংস্থাটি মনে করছে চলতি বছর উন্নত দেশগুলোর রপ্তানি বাড়বে ১১ শতাংশ আর উন্নযনশীল দেশগুলোর ৭.৫ শতাংশ।
তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেকারত্বের বর্তমান অবস্থার উন্নতি না হলে কাঙ্খিত এ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ-কানাডা বাণিজ্য ১৪০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে
বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০০৯ সালে ১৪০ কোটিতে পৌঁছেছে। ওই বছর বাংলাদেশ থেকে কানাডায় রপ্তানি করা হয়েছে ৮০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য, আর কানাডা থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৬২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য। ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশের অনুকূলে উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ক্যানচেম) এ তথ্য দিয়েছে।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা যায়, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য কানাডায় রপ্তানি করেছিল। একই সময়ে কানাডা থেকে আমদানি করা হয়েছিল ৩১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য। এর ফলে সেবছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৬ কোটি ২০ লাখ ডলার আর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশের অনুকূলে উদ্বৃত্ত দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
কানাডায় পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ভারত থেকে কানাডায় ২শ'৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়। বিপরীতে কানাডা থেকে আমদানি করা হয় ২শ' কোটি ডলারের পণ্য।
কানাডা বাংলাদেশ থেকে প্রধানত তৈরি পোশাক, বস্ত্র, মত্স্য, জুতো ও সিরামিক পণ্য আমদানি করে। অন্যদিকে কানাডা থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে মূলত লৌহ ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, তেলবীজ, সবজি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |