Web bengali.cri.cn   
চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা আসিয়ানের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর
  2010-02-25 19:55:25  cri
চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল ২০১০ সালের পয়লা জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এ অঞ্চল বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দু'পক্ষের আমদানি ও রপ্তানির ৯৩ শতাংশ পণ্যদ্রব্যের শূণ্য শুল্ক কার্যকর করছে। এ অঞ্চলের লোক সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন, জিডিপি ছ'ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাণিজ্যের পরিমাণ ৪.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

চীনের রাষ্ট্রীয় শুল্ক প্রশাসনের বৈদেশিক প্রচার বিভাগের একজন কর্মকর্তা জাং সিয়াও লেই বলেছেন, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যিক বাজারের চাহিদা অব্যাহতভাবে হ্রাসের কারণে চীনের যন্ত্রপাতি ও বৈদ্যুতিক সামগ্রি ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পরিস্থিতি ভাল নয়। অন্যান্য দিকে চীনের ঐতিহ্যিক রপ্তানির পণ্য আসিয়ানের দেশগুলোর বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাছাড়া, চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান উন্মোচিত করার নতুন বাজার সম্প্রসারণ করেছে। বিশেষ করে, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হচ্ছে। চীনের শেনজেন বন্দরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চীন-আসিয়ান বাণিজ্যের অবস্থা ক্রমগত পুনরুদ্ধার হচ্ছে। জাং চিয়াও লেই বলেছেন, (১)

চীনের রাষ্ট্রীয় শুল্ক প্রশাসনের পরিসংখ্যানে দেখা দিয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারী থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত শেনজেন বন্দর যোগে আসিয়ানের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ৭৯ কোটি মার্কিন ডলার।

তিনি বিশেষভাবে বলেছেন, চীনের বেসরকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজের নমনীয় পরিচালনার প্রাধান্যকে পুরোপুরি তুলে ধরেছে এবং আসিয়ানের বাজার খাপ খাওয়ানোর জন্য পরিচালনার কৌশলকে ইতিবাচকভাবে সুবিন্যস্ত করেছে। ২০০৯ সালে শেনজেন বন্দরে আসিয়ানের মধ্যে রপ্তানির উন্নয়নের হার ২৪.৭ শতাংশ। আসিয়ানে চীনের রপ্তানির পরিমাণ ৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

শেনজেনে অবস্থিত খাংচিয়া গ্রুপ হচ্ছে রঙ্গিন টেলিভিশন ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন বেসামরিক ইলেকট্রোনিক দ্রব্য গবেষণা ও বিক্রিকারী চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে খাংচিয়া গ্রুপের বিশ্বের এক শো'রও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ব্যবসা রয়েছে। আসিয়ানের দেশগুলোও খাংচিয়া গ্রুপের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার।

খাংচিয়া গ্রুপের সহকারী চেয়ারম্যান মাদাম লু ইয়ান আমাদের সংবাদদাতাকে চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার মাধ্যমে পাওয়া সুযোগ সদ্ব্যবহারের দিকটি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, আসিয়ানের দেশগুলোর জনগণকে আরো ভালভাবে সেবা দেয়ার জন্য খাংচিয়া কোম্পানি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ গবেষণা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বিক্রির জন্য স্থানীয় পদ্ধতি রয়েছে। খাংচিয়া কোম্পানি স্থানীয় জনগণের পছন্দ অনুযায়ী পণ্যদ্রব্যকে পরিশিলীত করে বাজারে সরবরাহ করে থাকে। যাতে স্থানীয় জনগণের চাহিদা মেটানো যায়। তিনি বলেছেন, (২)

যেমন আসিয়ানের কিছু দেশের পাহাড়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান গ্রহণের সংকেত ভাল নয়। আমরা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য সংকেত গ্রহণের ভাল সামর্থ্য থাকা টেলিভিশন বিশেষভাবে তৈরী করেছি। এ ধরণের টেলিভিশন পশ্চিমা দেশ, জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়া কখনোই তৈরী করে নি। কারণ, এ রকম পণ্য গবেষণার ওপর বেশি অর্থ বরাদ্দ করা দরকার, তবে বিক্রির মুনাফা কম থাকে। আমাদের প্রচেষ্টা চালানোর লক্ষ্য হল স্থানীয় জনগণের জীবনযাপনের জন্য সুবিধা এনে দেয়া এবং আমাদের কোম্পানির ভাল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করা।

কিছু কিছু গ্রাহক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, শুল্ক হ্রাসের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় শিল্প ও বাণিজ্য খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না। এ প্রসঙ্গে খাংচিয়া গ্রুপের মাদাম লু ইয়ান বলেছেন, এতে কোন সমস্যা হবেনা। যদিও খাংচিয়া গ্রুপ হচ্ছে চীনের মার্কা। তবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বিক্রি বা উত্পাদনের পর স্থানীয় বিক্রি প্রতিনিধি, উত্পাদন ব্যবসায়ী ও গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে চলতে পারে। এখানকার কর্মীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ হল দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় নাগরিক। এর পাশাপাশি খাংচিয়া কোম্পানি তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি প্রদানের জন্য বিরাট অর্থ বরাদ্দ করেছে। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কর্মসংস্থান সমস্যার সমাধান এবং স্থানীয় শিক্ষা ক্ষেত্রকে ত্বরান্বিত করার জন্য অবদান রেখেছে। সুতরাং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জনগণের বিদেশের পণ্য কেনা ও তৈরী করার সঙ্গে সম্পর্কিত। লু ইয়ান বলেছেন, (৩)

এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জনগণের যৌথ প্রচেষ্টার ফল।

চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি চীন ও আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের জনগণের বিনিময় আরো ঘনিষ্ঠ হবে। এসব দেশের মধ্যে সুবিধা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বিমান পথ নির্মাণের কাজ হচ্ছে অবশ্যম্ভাবী প্রবণতা। শেনজেন বিমান লিমিডেট কোম্পানির আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক ছেন জি হোং এ প্রসঙ্গে আস্থাবান।

বর্তমানে শেনজেন বিমান কোম্পানি আসিয়ানের প্রধান প্রধান দেশগুলোর রাজধানীতে যাতায়াতের জন্য নিয়মিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করেছে। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর ,ফিলিপাইনের ম্যানিলা এবং ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শেনজেন বিমান কোম্পানি হচ্ছে চীনের পঞ্চম বৃহত্তম বিমান গ্রুপ। ছেন জি হোং বলেছেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে শেনজেন বিমান কোম্পানি আসিয়ানের বিভিন্ন দেশে যাতায়াতের জন্য আরো বেশি ফ্লাইট চালু করবে। যাতে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক বিনিময় ও পর্যটনের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। তিনি বলেছেন, (৪)

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার যাত্রীদের আরো ভালভাবে পরিসেবা দেয়ার জন্য আমরা বিশেষ পরিসেবা দিয়েছি। আমাদের বিমানের সকল পরিসেবক কেবল অনর্গল ইংরেজী বলতে পারে তাই নয়, বরং তারা শরীরি ভাষার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি প্রশিক্ষণ পেয়েছে। তারা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জনগণের সঙ্গে সহজভাবে বিনিময় করতে পারে। বিনিময়ে বাধা না থাকা হচ্ছে পরিসেবার মান উন্নত করার প্রধান দিক।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040