Web bengali.cri.cn   
কফি দোকান
  2010-02-11 20:17:01  cri
বন্ধুরা, অবসরের সময় যখন আমরা এক কাপ কফি পান করি তখন অত্যন্ত আরাম লাগে। তাই না? সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-আসিয়ান মেলা চীনের কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নাননিন শহরে গড়ে তোলার আলোকে আসিয়ানের কফিও সঙ্গে সঙ্গে নাননিন শহরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বতর্মানে অবসরের সময় নাননিন শহরের অধিবাসিরা কফি খেতে পছন্দ করেন। ছোট ছোট কফি কাপ থেকে আমরা কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অবাধ অঞ্চলের ভবিষ্য দেখতে পেরেছি। আজকের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে আপনারা শুনতে পারবেন নাননিন শহর থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতাবের নিজস্ব সংবাদদাতার পাঠানো একটি রিপোর্ট।

নাননিন শহর কুয়াংসি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী। এই শহরের চিনচৌ রাস্তায় একটি কফি দোকান আছে। বাইরে থেকে এই কফি দোকান দেখতে কোন বৈশিষ্ট্য মনে করা হয় না। কিন্তু দোকানের ভিতরে গেলে দেখা যায় এই কফি দোকানের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই কফি দোকানের নাম হল ছনইয়ান কফি দোকান। এ দোকানে ভিয়েতনামের কফি পরিবেশন করা হয়।

এ কফি দোকানে ঢুকে সঙ্গে সঙ্গে লোকেরা মনরোম ভিয়েতনামী সঙ্গীত শুনতে পারেন । কফি দোকানের ভিতরে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। যেমন বাঁশির তৈরী ঝালানো বাতি, কাঠের ভাষ্কার্যযুক্ত সাদা রঙের দেয়াল, গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদ ইত্যাদি। এত সুন্দর পরিবেশে মানুষ কত আরাম লাগে।

৩০ বছর বয়স্ক ইয়েন ইয়াং নাননিন শহরে জন্ম ও বড় হয়েছে।ভিয়েতনামের কফি বিক্রি করে বলে তিনি এ শহরে মোটামুটি বিখ্যাত। বতর্মানে তিনি নাননিন শহরে মোট তিন কফি দোকান খুলেছেন। এ তিনটি দোকানের ব্যবসাও ভাল। তার চোখে নাননিন শহরে আসিয়ান দেশগুলোর কফি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগে তিনি আসিয়ান দেশগুলোর কফি ব্যবসা শুরু করেছেন। তবে ভিয়েতনামের কফি তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে আমি ব্যবসার জন্য বেশ কয়েক বার ভিয়েতনামে ছিলাম। সকালের নাস্তা শেষ হওয়ার পর আমার ভিয়েতনামী বন্ধুরা সাধারণত আমাকে কফি দোকানে নিয়ে যেতেন। আমার মনে হয়, চীনের কফি অত্যন্ত হালকা। কিন্তু ভিয়েতনামের কফি খুব শক্তিশালী। তখন আমি মানে মানে ভাবছিলাম, কবে আমার নিজের একটি কফি দোকান হবে?।

২০০৫ সালে ইয়ান ইয়াং ভিয়েতনামের কফি নাননিন শহরে এনেছেন ।তার পর তার দৃষ্টি ভিয়েতনামের জনইয়ান কফি কোম্পানির ওপর নিবিষ্ট হয়। জনইয়ান কফি কোম্পানিকে ভিয়েতনামের একটি রহম্যময় কফি কোম্পানি হিসেবে মনে করা যায়। জানা গেছে, ব্রাজিলের পর ভিয়েতনাম বিশ্বের দ্বিতীয় বড় কফি রফতানিকারি দেশ। ভিয়েতনামীরা কফির অথর্নীতি নিয়ে খুব গর্ব বোধ করেন। বতর্মানে বিদেশে হাজারাধিক শাখা দোকান আছে। কিন্তু জনইয়ান কফি এসব শাখা দোকানের মধ্যে আকারের দিক থেকে জনইয়ান কফি দোকান সবচেয়ে বড়। ইয়েনইয়াং বলেন, কুয়াংসিতে চীন-আসিয়ান মেলা আয়োজনের পর কেবল ভিয়েতনামের কফির সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। তিনি বলেন ২০০৫ সালে জনইয়ান কফি কোম্পানি চীন-আসিয়ান মেলায় অংশ নিয়েছে। ২০০৬ সালের প্রথম দিকে আমরা এই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং পরে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এই দোকান উদ্বোধনের দিনে ভিয়েতনামের কানসিওলারও উপস্থিত ছিলেন। দোকানটি খোলার পর ব্যবসা অত্যন্ত ভাল। প্রতি দিন শতাধিক অতীথি এখানে কফি খেতে আসেন।

ইয়েনইয়াংর স্ত্রী একজন ভিয়েতনামী। তার নাম লিন বি ছাং। তিনি সংবাদদাতাকে বলেন, ভিয়েতনামের স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কফি বানানোর পদ্ধতি প্রসংশনীয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিয়েতনামের কফির বানানো পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং সুবিধাজনক। সাধারণত ৫ মিনিটের মধ্যে এক কাপ কফি বানানো হয়ে যায় । তা ছাড়া , ভিয়েতনামের কফি খেতে বেশ ভাল লাগে।

হয়তো ভিয়েতনামী মেয়েকে বিয়ে করার কারণে ইয়েনইয়াং ভিয়েতনামের সংস্কৃতি অত্যন্ত পছন্দ করেন। নাননিন শহরের তিনটি কফি দোকানের দেয়ালে ভিয়েতনামের শিল্পীদের বিভিন্ন শিল্পকলা ঝোলানো হয়। তার বইয়ের সেলফে ভিয়েতনামের বিভিন্ন বই ও পত্রপত্রিকা রাখা হয়েছে। গোটা কফি দোকান ভিয়েতনামের একটি ছোট আকারের সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী ঘরের মতো সাজানো হয়েছে। কফি ছাড়া, তারা দোকানগুলোতে ভিয়েতনামের খাবার সংস্কৃতিও জনপ্রিয় করে তোলা হয়েছে। তার কফি দোকানগুলোতে ভিয়েতনামের বিভিন্ন বৈশিস্ট্যময় খাবার পাওয়া যায়।

সেন সেন নাননিন শহরের একটি বিদেশী অথার্য়ানের শিল্প প্রতিষ্ঠানের মেনিজার । তিনি জনইয়ান কফি দোকানের একজন নিয়মিত অতিথী হিসেবে তিনি মাঝেমাঝে ভিয়েতনামের কফি ও বৈশিস্ট্যসম্পন্ন খাবার উপভোগ করেন। তিনি বলেন,

নাননিন শহরে জনইয়ান কোম্পানির কফি খুব বিখ্যাত। এই শহরের অধিবাসীরা ভিয়েতনামের কফি সংস্কৃতি জানতে চাইলে তাদেরকে অবশ্যই জনইয়ান কোম্পানির কফি আস্বাদন করতে হবে। ভিয়েতনামের বন্ধুরা আমাকে বলেছেন, জনইয়ান কফি খেলে কফির আসল স্বার উপভোগ করা যায়।

তিনি বলেন, আগে প্রতি বছর তার বন্ধুর মাধ্যমে সীমান্ত থেকে নাননিন শহরে কফি পাঠানো হতো। কিছু ডাকের খরচ হলেও নাননিন শহরের বাজারের চেয়ে সস্তা। এখন বন্ধুর মাধ্যমে সীমান্ত থেকে নাননিন শহরে পাঠানোর দরকার নেই। অদূর ভবিষ্যতে চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন নাননিন শহরে ভিয়েতনামের কফির দাম বেশী হবে।

জানা গেছে, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পর কফির শুল্ক কর অবশেষে শুণ্য হয়ে যাবে। তখন নাননিন শহরের বাজারে আসিয়ানের কফি প্রচুর পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, আমার আশা হল, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর আরও বেশী আসিয়ানের পণ্যদ্রব্য চীনে আসবে। যাতে চীনের জনসাধারণ অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের ফলাফল উপভোগ করতে পারেন ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040