|
১৯৭৫ সালের ৯ জুন চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩৫তম বার্ষিকীতে চীনে ফিলিপাইনের দূতাবাস এবং কুয়াংচৌ, সাংহাই, ফুচিয়াং, হংকং ও ম্যাকাও'র কনস্যুলেট বেশ কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। যেমন চলচ্চিত্র উত্সব ও সুস্বাদু খাবার উত্সব। জোসিলিতো এ জিমেনো আমাদের সংবাদদাতাকে কুয়াংচৌ কনস্যুলেটের উদযাপনের পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেছেন,
চীনে ফিলিপাইনের কুয়াংচৌ, সাংহাই, ফুচিয়াং, হংকং ও ম্যাকাও'র কনস্যুলেটে উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে চীন ও ফিলিপাইনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩৫তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। আমাদের কুয়াংচৌ কনস্যুলেট চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বড় ধরণের সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করবে। তখন আমাদের আমন্ত্রণে বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ও জাতীয় নৃত্য শিল্পীরা চীনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীতে যোগ দেবেন। তাছাড়া, আমরা চীনের বহু প্রদেশ ও শহরে ফিলিপাইনের সুস্বাদু খাবার উত্সবের আয়োজন করবো। কুয়াংচৌয়ে আমরা এক সপ্তাহব্যাপী ফিলিপাইনের চলচ্চিত্র উত্সব করবো। আমাদের কনস্যুলেট এসব প্রদেশের সাংস্কৃতিক বিভাগের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
২০১০ সালে সাংহাই বিশ্ব মেলা অনুষ্ঠিত হবে। তখন ফিলিপাইন সাংহাই বিশ্ব মেলায় ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি দল পাঠাবে। তাছাড়া, ফিলিপাইন সাংহাই বিশ্ব মেলা এলাকায় দু'হাজার বর্গমিটারের জাতীয় ভবন নির্মাণ করবে। এ ভবন হবে ফিলিপাইনের যোগ দেয়া বিশ্ব মেলার শীর্ষ স্থান। জোসিলিতো এ জিমেনো বলেছেন, সাংহাই বিশ্ব মেলা ফিলিপাইনের জন্য সারা বিশ্বে ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রদর্শনের ভালো সুযোগ এনে দিয়েছে। ফিলিপাইন ও চীনের দীর্ঘদিনের বিনিময়ের ইতিহাস ও ঘনিষ্ঠ আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতামূলক সম্পর্কের কারণে উন্নয়নশীল দেশে প্রথম বারের মত আয়োজিত বিশ্ব মেলাকে ফিলিপাইন খুবই গুরুত্ব দেয়। তিনি বলেছেন,
ফিলিপাইনের জন্য ২০১০ সাল সাংহাই'র বিশ্ব মেলা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এবার হবে ফিলিপাইনের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের সুবর্ণ সুযোগ। বিশ্বের জনগণের কাছে ফিলিপাইনের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প যেমন পর্যটন, শিক্ষা, কৃষি, বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ খাত ব্যাখ্যা করার জন্য ফিলিপাইন বড় প্রতিনিধি দল পাঠাবে। সাংহাই বিশ্ব মেলার প্রসঙ্গ সমন্বিতকরণের জন্য ফিলিপাইন ভবন 'শহর প্রদর্শন' নামক প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছে।
১০১০ সালের পয়লা জানুয়ারী চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের পর তা উন্নয়নশীল দেশগুলো নিয়ে গঠিত বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। এ অঞ্চলের লোক সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন, জিডিপি ছ'ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাণিজ্যের পরিমাণ ৪.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি আরো বলেছেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাবে ২০০৮ সালে চীন ও ফিলিপাইনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ফলে দু'দেশকে বাণিজ্যের বহু সুযোগ এনে দেবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নের বিষয়টি ত্বরান্বিত করবে। ইতোমধ্যেই ফিলিপাইন আরো বেশি সুযোগ পাবে। ফিলিপাইন অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের বৃহত্তম কল্যাণকারীতে পরিণত হবে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন,
যদিও ২০০৮ সালে চীন ও ফিলিপাইনের বাণিজ্যের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। তবে ২০০৯ সালে চীন ও ফিলিপাইনের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের পরস্পরের সফর খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। এসব দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও বাণিজ্যের উন্নয়নকে শক্তিশালীও ত্বরান্বিত করেছে। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রকে জোরদার করবে। এর পাশাপাশি ফিলিপাইন এ থেকে আরো বেশি সুযোগ পাবে। যেমন ফিলিপাইনের কৃষিজাত দ্রব্য ও ফলমূল চীনের বাজারে আরো সহজভাবে প্রবেশ করতে পারবে। এসব কেবল ফিলিপাইনের পণ্যদ্রব্য চীনের বাজারে প্রবেশ করার জন্য কল্যাণকর তাই নয়, বরং ফিলিপাইনের পণ্য দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্যও অনুকূল হবে।
১৯৯৭ সাল ছিল ফিলিপাইন ও চীনের কুয়াং তোং প্রদেশের সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণও তাত্পর্যবহ। কারণ ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ কুয়াংচৌয়ে ফিলিপাইনের কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ কনস্যুলেট ও কুয়াং তোং, হাই নান, হু নান ও কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিপাইন এ চারটি প্রদেশের সঙ্গে তার আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এটি চীন ও ফিলিপাইনের সম্পর্ক উন্নত করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
সাক্ষাত্কার শেষে জোসিলিতো এ জিমেনো চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, চীন ও আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সম্পর্ক ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে চীন আন্তর্জাতিক বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার চীন ও আসিয়ানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ত্বরান্বিত করার মৈত্রী বেতারে পরিণত হয়েছে। তিনি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের মাধ্যমে চীনে বসবাসরত ফিলিপাইনের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
আমি চীনে বসবাসরত ফিলিপাইনের সকল জনগণ ও ফিলিপাইনের বংশোদ্ভুত বিদেশীদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। অন্যান্য সবাইকেও চীন ও ফিলিপাইনের মৈত্রী ত্বরান্বিত করার জন্য অবদান রাখাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি, চীন আন্তর্জাতিক বেতার আরো বেশি উন্নত হবে এবং আরো বড় ভূমিকা পালন করবে।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |