Web bengali.cri.cn   
চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণের প্রক্রিয়া দ্রুততর হচ্ছে
  2010-01-21 16:08:54  cri
চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল পয়লা জানুয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এটি চীনের বৈদেশিক আলোচনার প্রথম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল। এটিও বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো নিয়ে গঠিত বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল। চীন ও আসিয়ানের দশটি সদস্য দেশ শূন্য শুল্ক যুগে প্রবেশ করেছে। বাণিজ্য অবাধায়নের মান উন্নত করা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করেছে। আজকের অনুষ্ঠানে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার মাধ্যমে চীন-আসিয়ান অর্থনীতিকে গড়ে তোলার সুযোগ বয়ে দেয়ার পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের ভবিষ্যত সম্ভাবনা আপনাদেরকে শুনাবো।

২০০৪ সালে চীন-আসিয়ান দ্রুত চাষাবাদ কর্মসূচী early harvest programme চালু হয়েছে। এ পরিকল্পনায় কৃষিজাত দ্রব্যের শুল্ক হ্রাস হচ্ছে প্রধান বিষয়বস্তু। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল দু'দেশের অর্থনৈতিক সুফল অব্যাহতভাবে সম্প্রসারণের জন্য কল্যাণকর। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০৩ সালের ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০০৮ সালের ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে দু'পক্ষ "পণ্য বিনিময় চুক্তি" স্বাক্ষর করেছে। ২০০৭ সালের জানুয়ারীতে সেবা বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার চুক্তির প্রধান আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী নান নিংয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল ফোরামে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ই সিয়াও জুন বলেছেন, অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর চীন-আসিয়ান বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের সুবিধার পর্যায় আরো উন্নত হবে। দু'পক্ষের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও জনগণ উভয় পক্ষের জন্যে কল্যাণ এনে দেয়ার অনুকূল সুযোগ উপভোগ করবে। তিনি বলেছেন, (১)

চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারী থেকে চীন ও আসিয়ানের ছ'টি সদস্য দেশ(ব্রুনেই,ফিলিপাইন,ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর)'র মধ্যে ৯০ শতাংশ দ্রব্য শূণ্য শুল্ক কার্যকর করেছে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীন আসিয়ানের চারটি নতুন সদস্য(ভিয়েতনাম, লাওস, মিয়ানমার ও কম্বোডিয়া)র মধ্যে একই নীতি বাস্তবায়ন করবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-আসিয়ান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি দু'পক্ষ পরস্পরের পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রও অব্যাহতভাবে সম্প্রসারণ করেছে। ২০০৩ সালে চীন আসিয়ানে সরাসরি পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩ কোটি মার্কিন ডলার। ২০০৮ সালে এ পরিমাণ ২ বিলিয়ন ১৮ কোটি মার্কিন ডলার বেশি। ২০০৮ সাল ২০০৩ সালের তুলনায় নয় গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। চীনের আরো বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আসিয়ান প্রধান পুঁজি বিনিয়োগের গন্তব্যস্থানকে নির্ধারণ করেছে।

লাওসের স্থায়ী উপপ্রধানমন্ত্রী সমসাভাট লেংসাভাদ বলেছেন, অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল আরো দ্রুত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য দু'পক্ষের পুঁজি বিনিয়োগ উন্নত করা খুব প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে বুনিয়াদী ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। যেমন দু'পক্ষের যৌথভাবে রেলপথ, সড়ক, জলপথ ও বিমান পরিবহন। লাওসও আশা করে, চীনের সঙ্গে আরো সহযোগিতা করতে পারবে। লাওস চীন ও আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের প্যান এশিয়া রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পে ইতিবাচকভাবে যোগ দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, (২)

লাওস খুনমিং-ব্যাংকক এক্সপ্রেস সড়কপথ নির্মাণের কাজে অংশ নিয়েছে। লাওস আশা করে, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল দ্রুত উন্নয়নের মাধ্যমে চীন ও আসিয়ানের বিভিন্ন সদস্য দেশ যুক্ত হওয়ায় প্যান এশিয়া রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পে যৌথভাবে বাস্তবায়িত হবে।

চীন ও আসিয়ানের দেশগুলোর মধ্যে স্থল সীমানা ও সামুদ্রিক পথ থাকা চীনের একমাত্র প্রদেশ হিসেবে কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হচ্ছে চীন-আসিয়ান বিনিময় ও সহযোগিতার অগ্রবর্তী অবস্থান। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কুয়াংসি ও আসিয়ানের বাণিজ্যের পরিমাণ তিন গুণ বেড়েছে। কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল আসিয়ানে পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ২৬গুণ বাড়িয়েছে। আসিয়ানের কুয়াংসিতে বাস্তব পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণও চার গুণ বেশি। কুয়াং সি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চেয়ারম্যান মা বিয়াও বলেছেন, অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পর কুয়াংসি আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরো সম্প্রসারণ করবে। মা বিয়াও বলেছেন, (৩)

কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি যৌভাবে কার্যকর করতে আগ্রহী। বুনিয়াদী ব্যবস্থা, কৃষি, পর্যটন ও সীমান্ত অতিক্রম করা অর্থনৈতিক সহযোগিতা অঞ্চলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করবে। সীমান্ত তীরের সহযোগিতা জোরদার করার মাধ্যমে শুল্ক বিভাগ পাস হওয়ার কার্যকারিতা আরো উন্নত করবে। সীমান্ত অতিক্রম করা বাণিজ্য সংক্রান্ত রেন মিন পি সেটলমেন্ট কেন্দ্র দ্রুতভাবে চালু করবে। এর পাশাপাশি আসিয়ানের দেশগুলো পরিবহন সহযোগিতা ত্বরান্বিত করবে। যাতে কাছাকাছি দেশের পণ্য ও জনগণ গন্তব্যস্থানে সরাসরি পৌঁছাতে পারে।

চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর দু'পক্ষের শিল্পপ্রতিষ্ঠান অনূকুল সুযোগ সরাসরি ভোগ করতে পারবে। কুয়াং চৌ প্রদেশের শেন জেনে অবস্থিত খাং চিয়া গ্রুপ হচ্ছে রঙ্গিন টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন উত্পাদনের বেসরকারী ইলেকট্রোনিক দ্রব্য গবেষণা ও বিক্রয়ের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। খাং চিয়া গ্রুপের সহকারী মহাপরিচালক লু ইয়ান বলেছেন, ভবিষ্যতে কোম্পানি পণ্যের দেশীয় গবেষণা জোরদার করার পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে দেশীয় ক্রয়ের পদ্ধতি চালু করবে। যাতে আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ পণ্যের বাস্তব চাহিদা মেটাতে পারে। লু ইয়ান বলেছেন, (৪)

যেমন আসিয়ানের কিছু দেশের পাহাড়ে টেলিভিশনের সংকেত ভালো নয়। আমরা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য সংকেত গ্রহণের সামর্থ্য শক্তিশালী করার টেলিভিশন বিশেষভাবে ডিজাইন করবো।

তিনি আরো বলেছেন, এ ধরণের উপায় কেবল আসিয়ানের বাজার ভালোভাবে সম্প্রসারণ করতে পারে তাই নয়, বরং স্থানীয় নাগরিকদের জীবনযাত্রার জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করবে এবং চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040