Web bengali.cri.cn   
চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল দু'পক্ষের জনগণের কল্যাণ ব্যয় আনবেঃ কন্সুলার জেনারেল পিসানা সুভানাজাতা
  2010-01-14 20:12:58  cri

চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল ২০১০ সালের পয়লা জানুয়ারী থেকে তার কার্যক্রম শুরু করেছে। আমাদের সংবাদদাতা অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল বিষয় নিয়ে কুয়াংচৌয়ে থাইল্যান্ডের কনসুলার অফিসের কন্সুলার জেনারেল পিসানা সুভানাজাতার সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার তাত্পর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেবল আসিয়ানের জনগণ কল্যাণ পাবে তাই নয়, বরং চীনের জনগণের প্রতিও তা খুব প্রয়োজনীয়। তিনি অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, (১)

থাইল্যান্ড আসিয়ানের একটি সদস্য দেশ। আমি বিশ্বাস করি, থাইল্যান্ডের সকল জনগণ আমার মত অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের কেবল আর্থ-বাণিজ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে তাই নয়, বরং এর গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকি তাত্পর্যও রয়েছে।

তিনি বলেছেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল চীন ও আসিয়ানের বিভিন্ন দেশ অর্থনীতি ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা ও বিনিময় অব্যশই আরো ঘনিষ্ঠ করবে, দু'পক্ষের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে এবং দু'পক্ষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দীর্ঘদিনের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরো বলেছেন, (২)

চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের লোক সংখ্যা ১.৯ বিলিয়ন। এটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল। এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক ও পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ও লেনদেন অগ্রাধিকার পাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের পণ্যের উত্পাদনের ব্যয় হ্রাস পেতে পারে এমন উদ্যোগ নেয়া। যার ফলে পণ্যের দাম আরো সস্তা হবে। আসিয়ানের দশটি দেশ ও চীনের মধ্যে পণ্যের বিনিময় আরো সুবিধাজনক হবে। আসিয়ান চীনের নতুন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পরিণত হবে। এ বাজারের সুপ্ত শক্তি খুব বড়। আসিয়ান চীনের জন্য আরো বেশি সম্পদ দেবে। চীন আসিয়ানের জন্য আরো বেশি প্রযুক্তি রপ্তানি করবে। যাতে আসিয়ানের দশটি দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য নতুন উপায় প্রয়োগ করা যায়। চীনের ভোক্তার কেনাকাটার সামর্থ্য বেশি। এর পাশাপাশি আসিয়ানের জনগণের কেনাকাটার দিকটিও প্রায় একই। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল দু'পক্ষের জনগণকে কল্যাণ এনে দেবে।

থাইল্যান্ড কৃষি , পর্যটন ও সেবা ক্ষেত্রে প্রাধান্য রয়েছে বলে সর্বজনবিদিত । পিসানা বিশ্বাস করেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল সার্বিকভাবে নির্মাণের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বেশ কিছু খাতের জন্য কল্যাণকর হবে। তিনি বলেছেন, (৩)

আমি ভাবছি, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পর থাইল্যান্ডের আরো বেশি ফল চীনের বাজারে প্রবেশ করবে। শুল্ক হ্রাস পেলে, ফলের দামও সস্তা হবে। অন্যান্য বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে যেমন সেবা, পর্যটন, শিক্ষা ও হোটেল শিল্পে থাইল্যান্ডের প্রাধান্য স্পষ্ট। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর থাইল্যান্ডের সেবা শিল্পে অব্যশই কল্যাণ পেতে পারার পাশাপাশি অর্থ, দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তি বিনিময় আরো ঘনিষ্ঠ হবে।

আমাদের সংবাদদাতা প্রশ্ন করেছেন যে, অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পর আসিয়ানের পণ্য চীনে প্রবেশের পাশাপাশি চীনের আরো বেশি পণ্য আসিয়ানের বাজারে প্রবেশ করবে। এর ওপর থাইল্যান্ড উদ্বেগ প্রকাশ করে কি না। এ প্রসঙ্গে পিসানা বলেছেন, (৪)

আমি মনে করি, এ বিষয়টিকে সার্বিকভাবে দেখা উচিত।

চীনের পণ্য আসিয়ানের বাজারে রপ্তানির পাশাপাশি কিছু দেশের পণ্য আসিয়ানের বাজারের কোটায় থাকার ব্যাপারটি বিবেচনা করা উচিত। যেমন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া। চীনের পণ্য আসিয়ানের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল মাত্র ত্বরান্বিত করার ভূমিকা পালন করতে পারে। চীন পণ্যের দাম হ্রাস ও পণ্যের মান উন্নত করার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বীশক্তি উন্নত করতে পারে। আসিয়ানের দেশগুলোর রপ্তানির প্রধান পণ্য হচ্ছে কৃষিজাত দ্রব্য। এর পাশাপাশি কৃষিজাত দ্রব্যের মান উন্নত ,দাম হ্রাস এবং গবেষণা ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। চীন বা আসিয়ানের উচিত দ্রব্যের মান অব্যাহতভাবে উন্নত করা, অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের এনে দেয়া সুযোগ কাজে লাগানো, দু'পক্ষের পণ্য বিনিময় ত্বরান্বিত করা ও উভয় পক্ষের জন্যে কল্যাণ বাস্তবায়ন করা উচিত।

অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল সম্মুখিন বাধা ও সমস্যা প্রসঙ্গে পিসানা বলেছেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ফলে বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরো বেশি হবে। বতর্মানে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ও চীন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে একমত হওয়া উচিত। যেমন দ্রব্যের তত্ত্বাবধান ও পরীক্ষা ক্ষেত্রে। তিনি মনে করেন, আগে চীনের বিভিন্ন প্রদেশ চীন-আসিয়ানের অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট চুক্তি কার্যকরের সময়ে কিছু মতভেদ ছিল। তিনি বলেছেন, (৫)

চীন একটি মহান দেশ। চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রণয়নের বিধি স্পষ্ট। তবে কার্যকরের প্রক্রিয়ায় চীনের কিছু প্রদেশের সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। এটি অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, থাইল্যান্ডসহ আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের সরকার ও চীন সরকার সরকারী কর্মী ও জনগণের সংশ্লিষ্ট বিধি জানা উচিত। যাতে বিভিন্ন বিধি ও কার্যপ্রণালী কার্যকরের প্রক্রিয়ার সুবিধা এবং একই ও পরস্পরের কল্যাণ বজায় রাখা যায়।

পিসানা বলেছেন, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের আরো বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে পুঁজি বিনিয়োগের ব্যাপারে উত্সাহিত হবে। তিনি বলেছেন, (৬)

অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পর শিল্পপ্রতিষ্ঠান উত্পাদনের কেন্দ্র স্থানান্তরের মাধ্যমে উত্পাদনের ব্যয় হ্রাস করতে পারে। থাইল্যান্ড ও আসিয়ানের অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীদের চোখে চীন একটি বৃহত্তম সুপ্ত শক্তি থাকা থাকা উত্পাদনের কেন্দ্র কিন্তু।(লিলু)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040