Web bengali.cri.cn   
২০১০ সালে কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে চীনের বিজ্ঞান একাডেমীর অনুমান
  2009-12-31 19:58:12  cri
২০১০ সালে চীনের বহুবিধ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত ও উন্নয়নের প্রবণতা প্রকাশিত হয়েছে। বেশির ভাগ অর্থনৈতিক সূচক ২০০৯ সালের তুলনায় স্পষ্টভাবে ভালো হবে। এটি চীনের বিজ্ঞান একাডেমী ইনস্টিটিউটের অনুমান কেন্দ্রের আগামী বছরে চীনের অর্থনৈতিক প্রবণতার অনুমান।

এ কেন্দ্রের গবেষক ছেন ই খাং ও ওয়াং শৌ ইয়াং'র নেতৃত্বাধীন গবেষণা দল 'চীন ২০১০ সালে বহুবিধ অর্থনৈতিক প্রবণতার অনুমান রিপোর্ট' সবেমাত্র সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি এ রিপোর্ট সরকারের কাছে উত্থাপন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট ২০১০ সালের প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ছেন সি খাং ও ওয়াং শৌ ইয়াং বলেছেন, যদিও আগামী বছর চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চলতি বছরের তুলনায় ভালো হবে। তবে বিশ্বের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হবে একটি স্থায়ী ও বন্ধুর প্রক্রিয়া। তাছাড়া, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার পরিকল্পনা ২০১০ সালে শেষ করা হবে অকল্যাণকর।

তারা প্রস্তাব দিয়েছেন যে, চীনের কেন্দ্রীয় সরকার "ভোক্তা বৃদ্ধি ত্বরান্বিত, কাঠামো সুবিন্যস্ত, কর্মসংস্থান বাড়ানো ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা" আগামী বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্য হিসেবে প্রণয়ন করতে পারে এবং নমনীয় মুদ্রা নীতি ও ইতিবাচক অর্থ নীতি বাস্তবায়ন করতে পারে।

ছেন সি খাং বলেছেন, চলতি বছরে বিভিন্ন অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার ব্যবস্থা কার্যকর করার পাশাপাশি উন্নয়ন বজায় রাখার ফলাফল আগের অনুমান অনুযায়ী অর্জন করেছে। চলতি বছরের চতুর্থ কোয়ার্টারে চীনের জিডিপি উন্নয়নের হার ১০.৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। চলতি বছর অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার হবে ৮.৫ শতাংশ ।

চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের জিডিপি উন্নয়নের হার ছিল ৭.৭ শতাংশ। ছেন সি খাং বলেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সার্বিক পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন না ঘটলে ২০০৯ সালের ভিত্তিতে ২০১০ সালে চীনের জিডিপি অব্যশই উন্নত হবে।

তবে ছেন সি খাং ও তার গবেষণা দল মনে করেন, যদিও আগামী বছর চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক সূচক চলতি বছরের তুলনায় ভালো হবে। তবে রপ্তানির পরিস্থিতি আরও বেশি আশানুরূপ হবে না।

ছেন সি খাং ব্যাখ্যা করে বলেছেন, যদিও গবেষণা দল অনুমান করছে যে, আগামী বছর চীনের রপ্তানি উন্নয়নের হার ১৭ শতাংশ হবে। তবে ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক আর্থিক সংকটের রপ্তানি পরিস্থিতির মত ভালো নয়। সুতরাং আগামী বছর রপ্তানির পরিমাণ ২০০৮ সালের তুলনায় আরোও হ্রাস পাবে।

২০১০ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উচিত অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর ভিত্তি গড়ে তোলা। বৈদেশিক চাহিদা মেটানোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তেমন আশা নেই বলে ছেন সি খাং উল্লেখ করেন।

চীনের বিজ্ঞান একাডেমীর অনুমান গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা দল মনে করেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর বিভিন্ন নীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ব্যক্তিগত ভোক্তা ব্যয়ে উত্সাহ দেয়া। বিশেষ করে, কৃষক ও নগরের নিম্ন বেতনভোগীর জন্য অধিবাসী ভোক্তা ত্বরান্বিত করার নীতি প্রণয়ন করা।

বর্তমানে ৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার ব্যবস্থায় ভালো সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এ গবেষণা দল মনে করে, ২০০৯ সালে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য সরকার বেশ কিছু অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার নীতি ও ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি স্থিতিশীল নয়। ২০১০ সালে অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার পরিকল্পনা শেষ হলে অর্থনীতি পুনরায় হ্রাস পেতে পারে।

ছেন সি খাং সর্তক করে বলেছেন, ২০১০ সালে চীনের কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি আরোও জটিল হবে। এর পাশাপাশি চীনের অর্থনৈতিক কাঠামো সুবিন্যস্ত করা এবং চলতি বছরে নতুন চালু হওয়া বিভিন্ন পুঁজি বিনিয়োগের প্রকল্পে প্রচুর অর্থের দরকার হবে।

তাছাড়া, ছেন সি খাং ও তার গবেষণা দল ২০১০ সালের সালের উত্থাপিত অর্থনৈতিক প্রবণতা সংক্রান্ত অনুমান রিপোর্টে মনে করেন, আগামী বছর চীনের সিপিআই উন্নয়নের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত বজায় রাখবে। তারা মনে করেন, ২০১০ সালে চীন মুদ্রা স্ফীতির বড় চাপের সম্মুখীন হবে না।

মুদ্রা স্ফীতির চাপ সম্মুখীন হলে মুদ্রা ও আর্থিক নীতির মাধ্যমে যথাসময়ে সুবিন্যস্ত করা যাবে এবং নিরসণ হবে। এ গবেষণা দল প্রস্তাব দিয়েছে যে, ২০১০ সালের মুদ্রা ও আর্থিক নীতি নমনীয় ও ইতিবাচক হওয়া উচিত। তবে ২০০৯ সালের তুলনায় তা কিছুটা আটসাট হবে।

চীনের বিজ্ঞান একাডেমীর অনুমান গবেষণা কেন্দ্র প্রকাশিত এক রিপোর্টে জোর দিয়ে বলেছে, পরবর্তী খাতের উন্নয়নের দিক বাছাই করা হবে কম কার্বন নির্গমনের অর্থনীতির ভবিষ্যত উন্নয়নের সুযোগ।

ছেন সি খাং মনে করেন, বর্তমানে বিশ্বের আর্থিক সংকটের পটভূমিতে চীন বিদেশ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে অধিগ্রহণ করেছে। তবে কম কার্বনযুক্ত প্রযুক্তি ও দূষণ-মুক্ত জ্বালানি সম্পদের ক্ষেত্রে অর্জনের অগ্রগতি যথেষ্ট নয়।

আমাদের উচিত উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণ কমানো ও নতুন জ্বালানি সম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা অব্যাহতভাবে জোরদার করা। ছেন সি খাং বলেন, তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপনিত রিপোর্টে প্রস্তাব দিয়েছেন যে, চীন অর্থনৈতিক উত্সাহ দেয়ার পরিকল্পনা কার্যকরের জন্য ৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান দেবে। চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দের জন্য সুবিধাজনক নীতি অনুসরণ করা উচিত। বিশেষ করে, কম কার্বন নির্গমনকারী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ দেয়ার কাজ জোরদার করা।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040