|
সিআন শহর হচ্ছে ইউরোপ ও এশিয়ার অর্থনৈতিক ফোরাম অনুষ্ঠানের স্থায়ী স্থান। ২০০৫ সাল থেকে এ ফোরাম প্রতি দু'বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ ফোরামের উদ্দেশ্য হল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলো ও পর্যবেক্ষক দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত করা এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে পরস্পরের অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গভীর করা।
এবার ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আর্মেনিয়ার জাতীয় পার্লামেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরেভিক গামলেটোভনা পেট্রোসিয়ান ইউরোপ ও এশিয়ার অর্থনৈতিক ফোরামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, (১)
আমি মনে করি, এটি আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরো উন্নত ও গভীরতর করার একটি ভালো সুযোগ। আমরা অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরো সম্প্রসারণ করবো, বিভিন্ন ক্ষেত্রের যোগাযোগ গভীর করবো এবং শিল্প মহলের প্রকল্পের সহযোগিতা কার্যকর করবো। এখানে আমি এ ফোরামকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।
গত বছরের জুলাই মাস থেকে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাবে বিশ্বের বাণিজ্যিক চাহিদা স্পষ্টভাবে হ্রাস পেয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন জরুরী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন ও সরকারী নেতৃবৃন্দের সাক্ষাত্কালে বিভিন্ন পক্ষ আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট যৌথভাবে মোকাবিলার ব্যাপারে বেশ কিছু মতৈক্যে পৌঁছেছে। চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, (২)
আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট এ বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি কোন কোন দেশ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারে নি। ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বিনিময় আরো জোরদার ,মতৈক্য উন্নত এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করা উচিত। যাতে বিশ্বের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চালানো যায়। চীন ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আরো উন্মুক্ত ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা আরো উচ্চ পর্যায় ও ব্যাপক ক্ষেত্রে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আগ্রহী।
চীন এবং ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের সহযোগিতা ,জ্বালানি সম্পদের সহযোগিতা উন্নত করা, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সহযোগিতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা ব্যবস্থা স্বয়ংসম্পূর্ণ করা সম্পর্কে সি চিন পিং কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, (৩)
চীন বর্তমান আঞ্চলিক সহযোগিতা ব্যবস্থার ভূমিকা পালনের ভিত্তিতে এ অঞ্চলের দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা আরো স্বয়ংসম্পূর্ণ করা এবং এ অঞ্চল সম্পর্কিত সহযোগিতার সার্বিক, কৌশলগত ও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা ফলপ্রসূভাবে সমাধানের ব্যাপারে সমর্থন দিচ্ছে। এর পাশাপাশি চীন আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে পরস্পরের বাজার খোলায় সমর্থন দেবে, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ ও জ্বালানি সম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পুঁজি বিনিয়োগ অব্যাহতভাবে সম্প্রসারণ করবে, বাণিজ্যিক সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য অর্থ দেয়ার সেবা দেবে, ইউরোপ ও এশিয়ার দূষণ-মুক্ত ও নিরাপদ সহযোগিতার ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে ত্বরান্বিত করবে, চীনের অর্থনীতি এবং ইউরোপ ও এশিয়ার অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে ত্বরান্বিত করবে।
এবারের ফোরামে শুল্ক বিভাগ ও ব্যবসায়ী মহলের সহযোগিতা, জ্বালানি সম্পদ সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং শিক্ষা সহযোগিতা এ চারটি প্রধান বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসব ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় অভিন্ন গুরুত্ব দেয়ার বিষয়। এ ফোরামে দ্বিতীয় বারের মত যোগদানকারী সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মহাসচিব বোলাট নুরগালিয়েভ বলেছেন, (৪)
দু'বছর আগে আমরা চীনের সিআন শহরে ইউরোপ ও এশিয়ার দ্বিতীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরামে অংশ নিয়েছি। তখন বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ, বেসরকারী প্রতিনিধি, শিল্প মহলের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার কাঠামোতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রাধিকার দিক এবং বাস্তব সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার উপায় নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা করেছিলেন। এবারের ফোরামে আমরা নতুন পরিস্থিতিতে এসব বিষয় নিয়ে অব্যাহত আলোচনা করেছি। এটির বাস্তব তাত্পর্য রয়েছে। এবারের ফোরাম অনেক আন্তঃর্দেশীয় গ্রুপ, বাণিজ্যিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর পাশাপাশি ফোরামে যোগ দেয়ার লোক সংখ্যাও ছিল সবচেয়ে বেশি। আমি বিশ্বাস করি, ফোরামে অংশগ্রহণকারীরা আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করবে।
জনমত মনে করে, এবারের ফোরাম হচ্ছে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোর নিজেদের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |