Web bengali.cri.cn   
নন্দনপার্কে সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের আনন্দ ভ্রমণ
  2011-03-25 19:06:07  cri

চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-সান্ত মারিয়াম ফাউন্ডেশন (এসএমএফ) কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের উদ্যোগে আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয় ঢাকার অদূরে সাভার আশুলিয়ায় নন্দনপার্কে।

যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি ও ডিজাইন এবং ভারতের নিকো পার্কের সহযোগিতায় তৈরী এই নন্দন পার্ক। নবীনগরের কাছে বাড়ইপাড়ায় ১২০ বিঘা জায়গাজুড়ে বিশাল এ পার্কে ভেসে আসে সাগরের ধ্বনি। পার্কে রয়েছে ক্যাবল কার, প্যাডেল বোট, আইস ল্যান্ড, ক্রেজি সাইকেল, ক্যাটার পিলার এবং নেট-এটলসহ অসংখ্য রোমাঞ্চকর রাইড। সবকিছু মিলিয়ে এটি বনভোজনের জন্য একটি আদর্শ স্থান।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল প্রায় ৯টার সময় সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুম থেকে এই যাত্রা শুরু হয় নন্দন পার্কের অভিমুখে। চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের প্রতিনিধি ও ঢাকায় সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের চীনা পরিচালক ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের সাবেক বিশেষজ্ঞ ও সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের উপদেষ্টা ও শিক্ষক মহিউদ্দিন তাহের আনন্দ ভ্রমণে ২২ সদস্য বিশিষ্ট সিআরআই-এসএমএফ প্রতিনিধি দলের নেত্রীত্ব দেন। প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন, সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাস রুমের শিক্ষক চাউ চিং ইয়ে, চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের সাবেক উপস্থাপিকা রাশিদা তাহের ও তার ছেলে উৎস, ঐশি, সিআরআই- সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের পরিচালক দিদারুল ইকবাল, সিআরআই-সার্ক ঢাকা শাখার সমন্বয়কারী তাছলিমা আক্তার লিমা, সিআরআই-সার্ক গাজীপুর শাখার সমন্বয়কারী শহীদুল কায়সার লিমন এর পরিবর্তে তার প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলাম, সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন, লিংকন, সান্ত মারিয়াম ক্রিয়েটিভ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আসমা জাহান কলি, মো:শফিকুল আশরাফ তুহিন, নিয়াজ আহমেদ হাসিব, মো:আতাহারুল ইসলাম মানিক, মো:সারোয়ার-এ-আলমসহ আরো ছয় জন অতিথি। প্রায় সাড়ে দশটার সময় সকলের সম্মিলিত চিৎকার, কারণ গাড়ী গন্তব্যে এসে গেছে। সকলে গাড়ী থেকে নেমেই লাইন ধরে মহিউদ্দিন তাহেরের কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করে ভেতরে প্রবেশ করে। নন্দন পার্কে পূর্বে থেকে নির্ধারিত পিকনিক স্পটে প্রবেশের সময় প্রতিনিধি দলের সকলের হাতে পার্কের বিশেষ প্যাকেজের লাল ফিতা পড়িয়ে দেন সিআরআই- সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাবের পরিচালক দিদারুল ইকবাল এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাবেক উপস্থাপিকা রাশিদা তাহের। পিকনিক স্পটে এসে মহিউদ্দিন তাহের সকলের কাছে মতামত জানতে চান কিভাবে বেড়ানো হবে পার্কের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাইড গুলিতে। সকলে সিদ্ধান্ত নেয় দুপুরের লাঞ্চ করা হবে দুইটার সময়। দুইটার পূর্বে শুধুমাত্র ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ছাড়া অন্য সবকটি রাইড যে যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করতে পারবে। এর পর সকলে দলবদ্ধ হয়ে সর্ব প্রথম "ওয়াটার কোস্টার" রাইডে একসাথে দু'জন দু'জন করে চড়ে ব্যাপক আনন্দ উপভোগ করে। এরপর সকলে অংশ গ্রহন করে "নেট-এ-বল" প্রতিযোগিতায়। এখানে ছিলো অন্য রকম আনন্দ। এ খেলার নিয়ম অনুযায়ী একজন প্রতিযোগী বাস্কেট বলের নেটের ভিতর তিনটি বলের মধ্যে একটি বল প্রবেশ করাতে পারলে একটি পুতুল উপহার পাবেন। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ২২জন সদস্যই এতে অংশ গ্রহন করে এবং এর মধ্যে মাত্র একজন প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। আর তিনি হলেন, নিয়াজ আহমেদ হাসিব। এরপর সকলে অংশগ্রহন করে আরেকটি প্রতিযোগিতা মূলক খেলা "ফান গেমস" এ। এখানে নির্দিষ্ট স্থান থেকে তিনটি বলের মাধ্যমে ছয় পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারলে একটি চাবির রিং উপহার পাওয়া যাবে। এখানেও সকলে গভীর মনোযোগ সহকারে চেষ্টা করেছেন বিজয়ী হতে কিন্তু সফল হয়েছেন মাত্র একজন যিনি সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ছাত্র রিংকু। খেলাধূলা শেষে বন্ধুরা সকলে প্রবেশ করে আইসল্যান্ডে। এখানে হিম শীতল কক্ষে বরপের উপর দাড়িয়ে আলো আধারের মধ্যে রোমান্টিক গানের তালে তালে কিছুক্ষন নাচা-নাচি করেন সকলে। পরের "সফটবল ক্যানন" খেলাটিও ছিলো মজাদার। এখানে দুই প্রান্তে দু'জন একে অপরকে সফটবলের কামানের মাধ্যমে নিশানা লাগানোর বা সঠিক যায়গায় বল দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা চালায়। এখেলায় সবচেয়ে মজা করেছেন ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা এবং তাছলিমা আক্তার লিমা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো দু'জনে অনেক চেষ্টা করেও কাউকে কেউ নিজেদের নিশানায় লাগাতে পারেন নি। অন্যরা কেউ টিলট-এ-ও্যঅ্যারল, রোমাঞ্চকর ক্যাবল কার, রোমাঞ্চকর জিপ-স্লাইড, মুন কোস্টার, কেউ বা রোলার কোস্টারে উঠে দমফাটানো চিৎকার দিচ্ছিল, আবার কেউ বা কৃত্রিম লেকে পা-বৈঠার নৌকা চালাচ্ছিল। এভাবেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নন্দনপার্কের সকল রাইডে চষে বেড়াচ্ছিল আর ক্লিক ক্লিক করে নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলছিলো সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ২২ জন বন্ধু। বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি, আড্ডা, ছবি তোলার পরই লাঞ্চের সময় আবার পার্কের নির্ধারিত স্থানে সবাই একত্র হল। খাওয়া দাওয়া শেষে শুরু হলো বন্ধুদের আনন্দ ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষন "ওয়াটার ওয়ার্ল্ড" মিশন। ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা, চাউ চিং ইয়ে এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন ব্যতিত একে একে সব বন্ধু পোশাক পরিবর্তন করে রওনা দিলেন ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের দিকে। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডে গোসল, সাঁতার কাটা, মিউজিক্যাল গানের তালে তালে নাচা-নাচি আর ছবি তোলার মধ্য দিয়ে একসাথে অনেক বন্ধু দীর্ঘ সময় ধরে মজা করেন। এখানে ছিলোনা কোন বয়সের ব্যবধান কিংবা সম্পর্কের দুরত্ত। বড় ছোট সকলে দলবদ্ধ হয়ে বন্ধুরমত নানান ঢং-এ নেচেছেন, গলা ছেড়ে গান গেয়েছেন। আর এভাবে মুখরিত ছিল সেদিন নন্দনপার্ক। তারপর পড়ন্ত বিকেল ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ও গাড়ীতে ওঠার ঘোষণা দিলেন। একে একে সকলে পার্ক থেকে বেরিয়ে পড়ল এবং গাড়ীতে উঠে বসল। গাড়ী চলার পথে সকলের পক্ষ থেকে অনুভূতি প্রকাশ শেষে সব বন্ধুদের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি সুন্দর আয়োজনের জন্য চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের প্রতিনিধি ও ঢাকায় সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের চীনা পরিচালক ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের সাবেক বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন তাহেরকে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানালেন দিদারুল ইকবাল। সাথে সাথে সকলে করতালি দিয়ে দু'জনকে সন্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারপর শুরু হলো মিষ্টিমুখ। মিষ্টি বিতরনের পাশাপাশি এর উদ্দেশ্য জানালেন, চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের সাবেক বিশেষজ্ঞ ও সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের উপদেষ্টা ও শিক্ষক মহিউদ্দিন তাহের। দিদারুল ইকবাল-কে চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের 'মনিটর' নিয়োগের সংবাদটি তিনি উপস্থিত বন্ধুদের মধ্যে জানিয়ে দেন। এরপর সকল বন্ধু করতালির মাধ্যমে দিদারুল ইকবাল-কে অভিনন্দন জানান। মিষ্টিমুখ শেষে গাড়ীর ভেতরে শুরু হয়ে গেল গান আর কৌতুক বলা। গুনগুনিয়ে গান গাইতে শুরু করলেন, মহিউদ্দিন তাহের, রাশিদা তাহের এবং উৎস। তাদের সাথে অন্যরা সুর মেলাতে চেষ্টা করেন। রাস্তার জ্যামের কারনে গাড়ী ধীরে ধীরে চলতে থাকে আর এর মধ্যে সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টার সময় শুরু হয় চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের এফএম তরঙ্গের অনুষ্ঠান। দিদারুল ইকবাল তার মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ঢাকার ১০৩.২ মেগাহার্জের ফ্রিকোয়েন্সি ধরার চেষ্টা করেন এবং একটু পরে ধরেও ফেলেন। তরঙ্গশক্তি বা সিগন্যাল মাঝেমধ্যে কিছুটা উঠানামা করলেও সার্বিক অবস্থা মোটামুটি ভালো অনুষ্ঠান স্পষ্ট শুনা যাচ্ছে। সাভার এলাকায় ঢাকার ১০৩.২ মেগাহার্জের ফ্রিকোয়েন্সির মান পরীক্ষার জন্য ঐ দিনের অনুষ্ঠানটি রেকডিংও করা হয়। এ নিয়ে কথা হচ্ছিল সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের ছাত্র এবং চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের নতুন শ্রোতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে। তিনি এ এলাকায় তার বোনের বাসায় কিছু দিন ধরে থাকছেন এবং মোবাইলের মাধ্যমে সিআরআই এর অনুষ্ঠান শুনছেন। তিনি জানালেন, সাভার এলাকার কিছু কিছু স্থানে অনেক স্পষ্ট ভাবে শুনা যাচ্ছে আবার কিছু কিছু স্থানে হালকা ভাবে শুনা যায়। তবে একটু এদিক সেদিক হাটাহাটি করলে ঠিক হয়ে যায়। তার মানে হলো সন্ধ্যে সাড়ে ছয়টায় ঢাকা ১০৩.২ মেগাহার্জের এফএম তরঙ্গের চীন আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান এখন সাভার থেকেও চমৎকার ভাবে শুনা যায়!

উল্লেখ্য এই আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে একুশে গ্রন্থমেলা-২০১১ চলাকালীন সময়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতার এর আন্তর্জাতিক মিডিয়া স্টল "সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুম"র স্টলে দায়িত্ব পালন করা প্রতিনিধিদের সৌজন্যে।

আরো বিস্তারিত ছবি দেখতে লগইন করুন: http://cri-sarc.blogspot.com/2011/03/blog-post_19.html

দিদারুল ইকবাল

পরিচালক

সিআরআই-সাউথ এশিয়া রেডিও ক্লাব, বাংলাদেশ।

 

ছবির ক্যাপশন:

১] ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা-কে পার্কের বিশেষ প্যাকেজের লাল ফিতা পড়িয়ে দিচ্ছেন রাশিদা তাহের।

২] "ওয়াটার কোস্টার" রাইডে দিদারুল ইকবাল ও মহিউদ্দিন তাহের।

৩] "টিলট-এ-ও্যঅ্যারল" বা ঘূর্ণিপাক রাইডে ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা, চাউ চিং ইয়ে এবং দিদারুল ইকবাল।

৪] পানির পোয়ারার পাশে একটি বিশেষ মূহুর্তে গ্রুপ ছবিতে বাম থেকে, চাউ চিং ইয়ে, আব্দুল্লাহ আল মামুন, লিংকন, মো:সারোয়ার-এ-আলম, উৎস, ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা, দিদারুল ইকবাল, মো:আতাহারুল ইসলাম মানিক এবং মো:শফিকুল আশরাফ তুহিন।

৫] একটি দানবের বুকের উপর দাড়িয়ে বাম থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন, দিদারুল ইকবাল, ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা, মো:শফিকুল আশরাফ তুহিন, রাশেদুল ইসলাম, মো:আতাহারুল ইসলাম মানিক, তাছলিমা আক্তার লিমা, উৎস ও অন্যান্য।

৬] গ্রুপ বাম থেকে ছবিতে, নিয়াজ আহমেদ হাসিব, মো:সারোয়ার-এ-আলম, দিদারুল ইকবাল, চাউ চিং ইয়ে, তাছলিমা আক্তার লিমা, রাশিদা তাহের, মহিউদ্দিন তাহের, ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা, মো:আতাহারুল ইসলাম মানিক, আসমা জাহান কলি, মো:শফিকুল আশরাফ তুহিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং লিংকন এরা একুশে গ্রন্থমেলা-২০১১ চলাকালীন সময়ে "সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুম"র স্টলে প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন (৫ম জন ব্যতিত)।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040