|
কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের প্রধান মাদাম ফান সু চে বলেন, ছাত্র সংগ্রহ ও নানা ধরনের প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এ বছরের ৮ মার্চ কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে চীনা ভাষা শেখানোর কাজ শুরু হয়। তিনি আরো বলেন, কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শেখানোর দু'টি ব্যবস্থা রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আধুনিক ভাষা বিভাগ রয়েছে , চীন থেকে পাঠানো দু'জন শিক্ষক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের চীনা ভাষা শেখান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ছাড়াও কোস্টারিকার আরো অনেকে চীনা ভাষা শিখতে আগ্রহী। কোস্টারিকায় যারা চীনা কোম্পানির সঙ্গে কাজ করেন বা ব্যবসা করেন এবং যারা চাকরির জন্য চীনে যাচ্ছেন, তারা চীনা ভাষা শিখতে চান। তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট চীনা ভাষা শেখার কোর্স খুলেছে। চীনা ভাষা শেখা কোর্সের ছাত্র সংখ্যা আশিজন। তাদেরকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এ আশি জনের মধ্যে বেশির ভাগই চীনা ভাষা একেবারেই জানেন না, শুধু একটি ক্লাসের ছাত্ররা হচ্ছেন সরকারের বৃত্তি পেয়ে চীনে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরে যাওয়া ছাত্রছাত্রীরা। দু' মাসের চীনা ভাষা শেখার পর তাদের চীনা ভাষার মান লক্ষনীয়ভাবে উন্নত হয়েছে, এ জন্য কনফুসিয়াসের শিক্ষকরা আনন্দ বোধ করছেন। ফান সু চিয়ে বলেন, এ ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা চীনে লেখাপড়া করেছে বলে তারা সবাই মোটামুটি চীনা ভাষা বলতে পারেন। এ বছর শাংহাই বিশ্বমেলায় কোস্টারিকা প্রদর্শনী ভবন নিজ দেশে চীনা ভাষা জানা মানুষ থেকে চারজন দোভাষী বেছে নিয়েছে। চারজনের মধ্যে তিনজনই কনফুসিয়াস ইন্সটিটিইটের ছাত্রছাত্রী। এ চারজন চীনা ভাষা অনুবাদক এখন শাংহাইয়ে কাজ করছেন এবং মাঝেমধ্যে ছবি ও খবর পাঠিয়ে থাকেন।
কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের প্রধান ফান সু জিয়ে কোস্টারিকায় ছয় মাস ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি মনে করেন, তিন বছর আগে চীন ও কোস্টারিকার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর কোস্টারিকার নাগরিকরা চীন সম্পর্কে আগের চেয়ে অনেক বেশি জানতে পেরেছে। চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোস্টারিকার জনগণ চীনা ভাষা শেখার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছেন। ফান সু জিয়ে বলেন, চীন ও কোস্টারিকার মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর কোস্টারিকার অনেক মানুষ, বিশেষ করে তরুণতরুণীরা চীনা ভাষা শিখতে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহী হয়েছে। তাদের পক্ষে চীনা ভাষা আয়ত্ত করতে পারলে চাকরি পাওয়ার বেশি সুযোগ সৃষ্টি হবে, তাই অনেক তরুণ তরুণী চীনা ভাষা শিখতে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটে আসেন।
সাক্ষাত্কার নেয়ার সময় মাদাম ফান সু জিয়ে বেশ কয়েকটি ফোং ধরেছেন। অনেকেই চীনা ভাষা শেখার কোর্সে নাম নিবন্ধন সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। চাহিদা মেটানোর জন্য কনফুসিয়াস ইন্সটিইউট আগষ্ট মাস থেকে ছাত্র সংখ্যা আশি থেকে দু'শতে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া কনফুসিয়াস ইন্সটিইউট কোস্টারিকার কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতার কথা বিবেচনা করছে। ইন্সটিটিউট এ সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে কনফুসিয়াস ক্লাসরুম খুলবে। চীনা ভাষার শিক্ষক এ সব স্কুলে চীনা ভাষা শেখাবেন।
যদিও চীনা ভাষার শিক্ষকরা কোস্টারিকায় বেশি দিন কাজ করেন নি, তবুও তারা সেখানে চীনা সংস্কৃতি প্রচারের চেষ্টা করছেন। কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সপ্তাহে ছাত্রছাত্রীরা চীনা সংস্কৃতি প্রচারের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ফান সু জিয়ে বলেন, ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সপ্তাহ ছিল কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সপ্তাহ। যদিও সেই সময় কোস্টারিকায় বর্ষা মওসুম ,তবুও ছাত্রছাত্রীরা অনেক কর্মসুচী গ্রহণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটও চীনা সংস্কৃতি প্রচারের জন্য প্রথম বারের মত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা চীনা গান গেয়েছেন, চীনের স্থানীয় অপেরা অভিনয় করেছেন, চীনা কবিতা আবৃত্তি করেছেন, চীনের ঐতিহ্যিক পোশাক ছি ফাও শৌ ও চীনের ঐতিহ্যিক থাই চি বক্সিং অভিনয় করেছেন। তাদের অভিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |